মঙ্গলবার ২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জনশক্তি রফতানিতে বাড়ছে গতি

নিজস্ব প্রতিবেদক:   |   বৃহস্পতিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২২ | প্রিন্ট

জনশক্তি রফতানিতে বাড়ছে গতি

জনশক্তি রফতানিতে গতি বাড়ছে। করোনা পরবর্তী রিসিভিং কান্ট্রিগুলোতে বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু হওয়ায় জনশক্তি রফতানির পালে হাওয়া লেগেছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে জনশক্তি রফতানির সর্বোচ্চ দেশ সউদীসহ বিভিন্ন দেশে ৮ লাখ ৭৪ হাজার ৮৪০ জন বাংলাদেশি নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। এর মধ্যে গত ৬ মাসে সউদী আরবেই ৫ লাখ বাংলাদেশির কর্মসংস্থান হয়।

গত আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্সে ভাটার টানা দেখা দিয়েছে। ইতালি থেকে প্রবাসীদের রেমিট্যান্সের গতি বাড়াতে উদ্বুদ্ধ করতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মনিরুছ সালেহীনের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দল গতকাল বুধবার রোমের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেছে

এদিকে জাপানের সাথে জনশক্তি রফতানি সংক্রান্ত সম্পাদিত চুক্তির দীর্ঘ দিন পরও বাংলাদেশ থেকে কর্মী প্রেরণে আশানুরূপ সাড়া মেলেনি। এতে করে দেশটির শ্রমবাজার হাত ছাড়া হবার উপক্রম। আইএম জাপানের প্রতিনিধি দলের সাথে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদের মাঝে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পরও দেশটিতে কর্মী নিয়োগের কোনো গতি বাড়েনি। ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা, চীন, নেপাল থেকে প্রচুর সংখ্যায় অভিবাসী কর্মী জাপানে কর্মসংস্থান লাভ করছে।

অথচ বাংলাদেশ থেকে চলতি বছরের ৯ মাসে মাত্র ৩০০ শিক্ষানবিশ কর্মী জাপানে গেছে। টোকিওস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের ক‚টনৈতিক তাৎপরতার অভাবে দেশটিতে শিক্ষানবিশ কর্মী নিয়োগে গতি বাড়েনি। অনুমোদিত একাধিক রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক এ তথ্য জানিয়েছেন। প্রবাসী মন্ত্রণালয় গতকাল পর্যন্ত ৬৮টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে জাপানে কর্মী প্রেরণের অনুমতি দিয়েছে।

এন-৪, এন-৫ গ্রেডের জাপানি ভাষা শিক্ষার শর্ত থাকায় দেশটির নিয়োগকর্তারা বাংলাদেশ থেকে প্রচুর সংখ্যায় কর্মী নেয়ার আগ্রহ থাকার পরও চাহিদাপত্র ইস্যু করতে পারছে না। ঢাকা-টোকিও জাপানিজ লেঙ্গুয়েজ একাডেমির চেয়ারম্যান আক্তার মো. পারভেজ হিমু গত মঙ্গলবার জাপান থেকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সরকারের আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং যথাযথ সহায়তার অভাবে সম্ভাবনাময় জাপানের শ্রমবাজার ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা ও নেপালের দখলে চলে যাচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাপানের বিভিন্ন খাতে উচ্চ বেতনে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি কর্মীর চাহিদা রয়েছে। জাপানে শ্রমবাজার পুনরুদ্ধারে সম্পাদিত চুক্তি জরুরি ভিত্তিতে সংশোধন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। অন্যথায় দেশটির শ্রমবাজার পুরোপুরি অন্যান্য দেশের দখলে চলে যাবে। ফলে দেশ বঞ্চিত হবে কোটি কোটি টাকার রেমিট্যন্সের সুফল থেকে। প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মনিরুছ সালেহীন জাপানি ভাষা শিক্ষায় বাংলাদেশি কর্মীদের দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে জাপানি প্রশিক্ষক প্রেরণের সহায়তা কামনা করে দেশটির সরকারের কাছে একটি চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু এ ব্যাপারে আর কোনো ফলোআপ করার প্রয়োজন বোধ করেননি প্রবাসী সচিব। বিএমইটির রেকর্ড অনুযায়ী, ১৯৭৬ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মোট ১ কোটি ৩০ লাখ বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজে গেছেন। সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার জাপান, বাহরাইন, কাতার, দক্ষিণ কোরিয়া, লেবানন, জর্ডান ও লিবিয়ায় যথাযথ প্রক্রিয়ায় কর্মী প্রেরণের সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে জনশক্তি রফতানিতে আরো সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হবে। অভিজ্ঞ মহল এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন ।

এদিকে জনশক্তি রফতানি সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান বোয়েসেল খুঁড়িয়ে চলছে। শ্রমবাজার সম্প্রসারণে বোয়েসেলের তেমন কোনো দৌঁড়-ঝাপ পরিলক্ষীত হচ্ছে না। বোয়েসেলের গতি বাড়ানো সম্ভব হলে সম্ভাবনাময় দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রচুর সংখ্যায় বাংলাদেশি কর্মী প্রেরণ সম্বভ হবে। ইপিএস সিস্টেমের মাধ্যমে একাধিক পরীক্ষার উত্তীর্ণ হয়ে দেশটিতে যেতে বহু বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে কোরিয়া গমনেচ্ছু কর্মীরা।

গত মঙ্গলবার রাতে বোয়েসেলের মাধ্যমে ১২১ জন বাংলাদেশি কর্মী দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেছে। এ নিয়ে ২০০৮ সাল থেকে গতকাল পর্যন্ত বোয়েসেলের মাধ্যমে দেশটিতে চাকরি লাভ করেছে ২৫ হাজার ৬০৭ জন কর্মী। বোয়েসেলে ইপিএস কর্মীদের সেবা ডেস্কে কোরিয়াগামী কর্মীর কারো কারো কাগজপত্র ঠিক করার নামে কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অসমর্থিত সূত্র জানিয়েছে।

এ ব্যাপারে বোয়েসেলের এজিএম নূরুল ইসলাম গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, কোরিয়াগামী কর্মীদের কাগজপত্র ঠিক করার নামে কোনো টাকা নেয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। কোরিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের লেবার উইং দেশটিতে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি কর্মীর কর্মসংস্থানের সুযোগের কথা জানিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে। কোরিয়ার শ্রমবাজারে গতি বৃদ্ধি এবং কোরিয়াগামী কর্মীদের নানা হয়রানি বন্ধের ব্যাপারে গত মঙ্গলবার বোয়েসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ারের সাথে সরাসরি কথা বলতে গেলে তিনি অপরাগতা প্রকাশ করেন।

এদিকে দীর্ঘ চার বছর পর মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার চালু হওয়ায় হাজার হাজার কর্মী দেশটিতে যাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশি ২৫ সিন্ডিকেটের সাথে বায়রার নতুন কমিটিসহ আরো ৫০টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে কর্মী প্রেরণের অনুমতি দিয়েছে। এ নিয়ে মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণের রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা দাঁড়ালো ৭৫টিতে। মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগে নতুনভাবে অনুমতি পাওয়া রিক্রুটিং এজেন্সি দ্য ইফতি ওভারসীজ দেশটির একটি ফার্ণিচার ফ্যাক্টরিতে ১২৫ কর্মী নিয়োগের চাহিদাপত্র লাভ করেছে।

ইফতি ওভারসীজের স্বত্বাধিকারী মো. রুবেল জানান, মালয়েশিয়া সরকার কর্মী নিয়োগের নতুন ৫০টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে পাসওয়াড হস্তান্তর করেছে। আগামী ২০ দিনের মধ্যে ১২৫ জন কর্মীর ফ্লাইট দেয়া সম্ভব হবে। আগামী এক মাসের মধ্যে মালয়েশিয়ায় পুরোদমে কর্মী প্রেরণ শুরু হবে বলেও তিনি ইঙ্গিত দেন। এতে জনশক্তি রফতানির গতি আরো বাড়বে।

গত ৯ আগস্ট থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিএমইটি কর্তৃপক্ষ ৪ হাজার ৬৫৯ জন মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু কর্মীর বর্হিগমন ছাড়পত্র ইস্যু করেছে। এর মধ্যে দেশটিতে গিয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কর্মী। অনুমোদিত মেডিক্যাল সেন্টারগুলো মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু বিপুল সংখ্যক কর্মীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষাকারী এসব কর্মী আদৌ দেশটিতে যেতে পারবে কী না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। একাধিক রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের একটি সূত্র জানায়, বৈশ্বিক করোনা মহামারির পর সউদী আরবে বিভিন্ন খাতে বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিতে কর্মী যাওয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু বিমানসহ এয়ারলাইন্সগুলো সিন্ডিকেট করে ওয়ানওয়ে টিকিটের মূল্য অতিরিক্ত বৃদ্ধি করায় টিকিটের টাকা যোগাতে কর্মীদের নাভিশ্বাস উঠছে। বিমানের টিকিটের চড়া মূল্যের কারনে ভিসাপ্রাপ্ত হাজার হাজার সউদীগামী কর্মী দেশটির কর্মস্থলে যেতে চরম বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। বিমান কর্তৃপক্ষ গত মাস থেকে ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে টিকিটের মূল্য বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করেছে। ফলে অন্যান্য বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোও টিকিটের দাম বাড়াচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যাপক ক‚টনৈতিক তৎপরতায় ভ্রাতৃ-প্রতীম সউদী আরবের সাথে বাংলাদেশের চমৎকার সম্পর্ক বিরাজ করছে। করোনা মহামারির পর সউদী নিয়োগকারীরা বাংলাদেশ থেকে ৮০ ভাগ কর্মী নিচ্ছেন। সউদী রাষ্ট্রদূতের সার্বিক তত্ত¡াবধানে সউদীগামী কর্মীদের হাজার হাজার ভিসা ইস্যু করে দূতাবাস এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সউদী আরবে বাংলাদেশিদের ভিসা দেয়ার সংখ্যা বাড়ছে।

ঢাকাস্থ সউদী দূতাবাস প্রতিদিন অন্তত ৪ হাজার বাংলাদেশি কর্মীকে ওয়ার্ক ভিসা দিচ্ছে বলে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান। গত ছয় মাসে প্রায় ৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মীর সউদীতে কর্মসংস্থান হয়েছে। সউদী কোম্পানিগুলো শান্তি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগে আন্তরিক আগ্রহ প্রকাশ করছে। বাংলাদেশে ২০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা চলছে বলেও জানান রাষ্ট্রদূত। এটি দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সহায়তা করবে।

রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান বলেন, বাংলাদেশ-সউদী আরব নানা ক্ষেত্রে একে অপরকে সহযোগিতা করে আসছে। বিশেষ করে সউদীর নেতৃত্বে সন্ত্রাসবিরোধী সামরিক জোটে বাংলাদেশ অংশ নিয়েছে। সউদী আরবে ২.৬ মিলিয়ন প্রবাসী বাংলাদেশি উভয় দেশের উন্নয়নে কাজ করছে। তারা প্রচুর রেমিট্যান্সও পাঠাচ্ছে। রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সউদী সফর এবং বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের সঙ্গে তার সাক্ষাতের পর বাংলাদেশ ও সউদীর সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে।

আগামী দিনে উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও বাড়বে বলেও প্রত্যাশা করেন তিনি। সউদী দূতাবাস কর্তৃপক্ষ গত মঙ্গলবার রাতে এক সার্কুলারের মাধ্যমে দূতাবাসের সামনে ভিড় কমানোর লক্ষ্যে আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে ভিভাতারা রোডস্থ শাপলা সেন্টারের মাধ্যমে ওয়ার্ক ভিসার পাসপোর্ট জমা ও ডেলিভারির নির্দেশনা জারি করেছে। উক্ত তারিখ থেকে দূতাবাস সরাসরি কোনো এজেন্সির পাসপোর্ট গ্রহণ করবে না।

বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, গত বছর সর্বমোট ৬ লাখ ১৭ হাজার ২০৯ জন কর্মী বিভিন্ন দেশে গেছেন। মোট জনশক্তি রফতানির মধ্যে ৪ লাখ ৫৭ হাজার ২২৭ জনই গেছেন সউদী আরবে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে গেছেন ২৯ হাজার ২০২ জন। সূত্র মতে, গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪১ হাজার ৫৮ জন কর্মী সউদী আরবে চাকরি লাভ করেছেন। একই সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের ওমানে ১৭ হাজার ৯৬৭ জন, সিঙ্গাপুরে ৬ হাজার ৯৪৭ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৬ হাজার ৭৭২ জন, মালয়েশিয়ায় ৪ হাজার ৬৫৯ জন, কুয়েতে ২ হাজার ২৬২ জন, কাতারে ২ হাজার ২২৭ জন এবং ইতালিতে ২ হাজার ১৮৩ জন কর্মী চাকরি লাভ করেছেন।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ ইনকিলাবকে বলেন, গত ডিসেম্বরে জনশক্তি রফতানির রেকর্ডে সরকার সত্যিই খুশি। মালয়েশিয়ায়ও সর্বমোট ৭৫টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ শুরু হওয়ায় জনশক্তি রফতানিতে নতুন মাত্রা যোগ হবে। আরও বেশি রেমিট্যান্স দেশে আসবে। এক প্রশ্নের জবাবে প্রবামী মন্ত্রী বলেন, সউদী আরবের সাথে বাংলাদেশের অত্যন্ত চমৎকার সর্ম্পক বিরাজ করছে। সউদী আরব বাংলাদেশি কর্মীদের নিয়োগে সবচেয়ে বেশি আগ্রহী। জনশক্তি রফতানির গতি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি মহান আল্লাহর নিকট শুকরিয়া আদায় করে শ্রমজাবার সম্প্রসারণে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাশার ইনকিলাবকে বলেন, জনশক্তি রফতানিতে সুবাতাস বইছে। চার বছর পর মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্ত হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে বায়রা সভাপতি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা ভাব চলছে। তারপরও সউদীর শ্রমবাজার চলমান থাকলে চলতি বছরে জনশক্তি রফতানি আরো বাড়বে।

গত মাসে ১৫৩ কোটি ৯৫ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। প্রতি ডলার ১০৩ টাকা ৫০ পয়সা হিসাবে বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা। গত ৭ মাসের মধ্যে এটিই প্রবাসীদের পাঠানো সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স। যদিও সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের গড়ে যেভাবে রেমিট্যান্স এসেছিল সে তুলনায় দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ সপ্তাহে কিছুটা কমে গেছে। এ কারণে পুরো মাসেই কমেছে রেমিট্যান্স। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

গতকাল টোকিও থেকে বাংলাদেশ দূতাবাসের লেবার উইংয়ের প্রথম সচিব জয়নাল আবেদীন ইনকিলাবকে জানান, জাপানে প্রচুর বাংলাদেশি কর্মীর চাহিদা রয়েছে। গত বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত জাপানে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীর সংখ্যা ছিল ১৮ হাজার ৫৫ জন। আর গত ৯ মাসে দেশটিতে আরো ৩০০ কর্মী এসেছে। জাপানের শ্রমবাজারের গতি বাড়াতে প্রবাসী মন্ত্রণালয় ও টোকিওস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন। আগামী জানুয়ারি থেকে ঢাকায় ওয়ার্ক পারমিটের জাপান গমনেচ্ছু কর্মীদের স্কিল টেস্ট পরীক্ষা শুরু হবে। এতে দেশটিতে কর্মী নিয়োগের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে।

রাজধানীর রামপুরায় নিহোঙ্গো ট্রেনিং সেন্টারের (জাপানি ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র) স্বত্বাধীকারী মো. মোমেনুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, জাপানে কর্মী নিয়োগের চাহিদাপত্র এলে প্রবাসী মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগানুমতি এবং বর্হিগমন ছাড়পত্র পেতে ৬ থেকে ৭ মাস সময় লেগে যায়। এতে জাপানি নিয়োগকর্তারা কর্মী প্রেরণে অহেতুক বিলম্বের দরুণ বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে অনীহা প্রকাশ করছে। তিনি জাপানের শ্রমবাজারের স্বার্থে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিয়োগানুমতি প্রদান এবং যথযথা অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণের জোর দাবি জানান।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৩:৪৫ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২২

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]