
জবি প্রতিনিধি: | বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২২ | প্রিন্ট
এবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করার লক্ষ্যে স্বল্প পরিসরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে। শুধুমাত্র প্রশাসনিক ভবন, শহীদ মিনার ও দুটি প্রধান ফটকে আলোকসজ্জা থাকবে।
সংশ্লিষ্ট সুত্র হতে জানা যায়, বিগত বছরের চেয়ে ২৫ শতাংশ ব্যয় কমানোর ইচ্ছা আছে প্রশাসনের। গতকাল ১২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস নিয়ে অনুষ্ঠিত মিটিং শেষে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জবি অধ্যাপক জানান, বিশ্ববিদ্যালয় শুধু বলে খরচ কমাতে হবে, এতে উপাচার্যকে খুশি করতে সায় দিচ্ছে অনেক শিক্ষক। এমনকি বাইরে থেকে ব্যান্ড শিল্পী আনার কথা উঠলেও সেটা নাকি অতিরিক্ত খরচ হয়ে যাবে বলছে অনেকে তাই তারা নিজেরাই পারফর্ম করবে। একটা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছে আবেগের যায়গা সেখানে তাদের জন্য যদি কিছু করতেই না পারি তাহলে কি লাভ এই আয়োজনের।
তিনি আরো বলেন আগে এমন মিটিংয়ে ছাত্র প্রতিনিধি হয়ে বিভিন্ন সংগঠন থেকে কেউ কেউ থাকতো এবার শিক্ষার্থীদের হয়ে কথা বলার মত কেউ ছিল না এবংকি ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ও অনুপস্থিত ছিল মিটিংয়ে। আসছে ২০ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। প্রতিবছরের ন্যায় এবছরেও ২০ অক্টোবর ২০২২ রোজ বৃহস্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ১৮তম বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষ্যে কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সকাল ৯:১০টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন এবং সকাল ৯:১৫টায় বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের উদ্বোধন করবেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক। এরপর সকাল ৯:২৫ টায় বিশ্ববিদ্যালয় রফিক ভবনের সামনে প্রকাশনা উৎসব এর উদ্বোধন করবেন উপাচার্য। তার পরপরই ৯:৩০টায় ভিসির নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর র্যালি হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে শুরু করে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে রায়সাহেব বাজার মোড় হয়ে ক্যাম্পাসে এসে র্যালিটি শেষ হবে। র্যালি শেষ হওয়ার পর বেলা সাড়ে দশটায় নতুন একাডেমিক ভবনের নিচতলায় বার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনী উদ্বোধন করা হবে। এরপর কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে এগারোটা থেকে বারোটা পর্যন্ত ‘তাশের দেশ’ নাটক পরিবেশনা হবে৷ দুপুর ১২:০০ টা থেকে ১:০০ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এরপরে আবার ২:৩০ পর্যন্ত শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন (ব্যান্ডদল) অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলবে৷ সবগুলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানই হবে বিশ্ববিদ্যালয় মুজিব মঞ্চে। আয়োজনে সংকীর্ণতা আর বিদ্যুত সাশ্রয়ের নামে যে কৃপণতার প্রকাশ তা নিয়ে শংকিত শিক্ষার্থীরা।
করোনা মহামারীর জন্য ২০১৯ সালের পর থেকে তেমনভাবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হচ্ছেনা। এবছর করোনার প্রাদুর্ভাব নেই তবুও আয়োজন কম এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মনে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ তম ব্যাচের তাসদিকুল হাসান বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের স্মৃতি ধরে রাখতে যে বছরের এক দুইটা দিন পাই তার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস অন্যতম। আয়োজনের এমন গড়িমসি ভাব সত্যিই দুঃখজনক।
১৩ তম ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী মিম জামান জানান, ছোট্ট ক্যাম্পাস আমাদের। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের সুসজ্জিত রূপ নিয়ে আমাদের কতই না গর্ব। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে ক্যাম্পাসের সুসজ্জিত রূপ দেখতে ভিড় জমায় কত শিক্ষার্থী। রাত অব্দি চলে আনাগোনা। সেখানে যদি আয়োজকদের থাকে সংকীর্ণতা তবে আনন্দে ভাটা পরতে আর কম কিসে। আমরা আশাবাদী কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নজরদারি করবে। আর পূর্বের ন্যায় সাজানো বিশ্ববিদ্যালয়েই পালিত হবে আমাদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস।
Posted ২:৫৮ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২২
ajkerograbani.com | Salah Uddin