শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

১৩ সংখ্যাটি যে কারণে ‘আনলাকি’

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২২ | প্রিন্ট

১৩ সংখ্যাটি যে কারণে ‘আনলাকি’

১৩ সংখ্যা মানেই সামনে ‘আনলাকি’ শব্দটি ভেসে ওঠে? এই সংখ্যাই যেন সবচেয়ে খারাপ, দুর্ভাগ্য ডেকে আনার জন্য যথেষ্ট, এমনটাই মনে করেন কী? কিন্তু ১৩ সংখ্যাটিকে এতো ‘আনলাকি’ মনে করার কারণ কী? পশ্চিমী সংস্কৃতিতে পুরাকাল থেকেই সংখ্যাটির সঙ্গে খারাপ ঘটনার যোগসূত্র রয়েছে।

নর্সের পুরাগাথা অনুযায়ী, ভালহাল্লার হলঘরে ১২ জন দেবতা নৈশভোজের উদ্দেশে বসেছিলেন। তবে সেখানে লোকিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। রাগের বশে ছলচাতুরি করে তিনি এক দেবতাকে বশীভূত করে তাকে দিয়ে অন্য দেবতাকে মেরে ফেলেন। খ্রিস্টান মতো অনুযায়ী, ‘দ্য লাস্ট সাপার’-এর সঙ্গেও এই সংখ্যাটি জড়িত। কেউ কেউ বলেন, যিশু নাকি সে দিন ১৩ নাম্বার আসনে বসেছিলেন। যদিও বাইবেলে এর কোনো উল্লেখ নেই।

শুধু পুরাণেই নয়, বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও এর প্রভাব দেখা দেয়। কিন্তু তার সূত্র অন্য। ১৯৭০ সালে ১১ এপ্রিল ‘অ্যাপোলো ১৩’ দুপুর ১টা ১৩মিনিটে তার যাত্রা শুরু করে। ১৩ এপ্রিল অক্সিজেন ট্যাঙ্কে গুরুতর সমস্যা দেখা দেওয়ায় ‘অ্যাপোলো ১৩’ আবার ফিরে আসে। এই ঘটনা থেকেই বিজ্ঞানীদের মনে ধারণা জন্মায়, ১৩ সংখ্যাটি তাদের জন্য অশুভ। এরপর তারা কোনো নতুন মিশনের জন্য স্যাটেলাইট বা রকেট লঞ্চ করলে ১৩ নাম্বারটি এড়িয়ে গিয়ে অন্য নাম্বার দিয়ে নামকরণ করতেন।

আয়ারল্যান্ডের গাড়ির রেজিস্ট্রেশন প্লেটে যে নাম্বার লেখা হয় তার প্রথম দুইটি সংখ্যা যে সালে গাড়িটি কেনা হয়েছে তার উল্লেখ থাকে। যেমন ২০১০ সালে কোনো গাড়ি কেনা হলে প্রথম নাম্বার দুইটি ১০, ২০১১ সালে কোনো গাড়ি কেনা হলে প্রথমে ১১ লেখা হয়ে থাকে। তবে ২০১৩ সাল পড়তেই গাড়ি বিক্রেতাদের মাথায় হাত পড়ে। নিয়ম অনুযায়ী, নাম্বার প্লেটে প্রথম দুইটি নাম্বার ১৩ হওয়ার কথা। নাম্বারটি অশুভ হওয়ার ফলে কেউ গাড়ি কিনতে চাইবেন না বলে ভেবেছিলেন বিক্রেতারা।

ফলে সেই বছরের জন্য নতুন নিয়ম চালু করেন তারা। ঠিক করা হয়, ২০১৩ সালের প্রথম ছয় মাসে যারা গাড়ি কিনবেন তাদের গাড়ির নাম্বারের প্রথমে ১৩১ এবং পরবর্তী ছয় মাসে যারা গাড়ি কিনবেন তাদের গাড়ির নাম্বারের প্রথমে ১৩২ লেখা থাকবে। বিদেশে এমন বহু হাসপাতাল এবং হোটেল রয়েছে যেখানে ১৩ নাম্বারটি এড়িয়ে যাওয়া হয়। এমনকি লিফ্টের মধ্যেও ১৩ নাম্বার ব্যবহার করা হয় না। ১৪ সংখ্যাটি থেকে আবার ক্রমানুসারে ব্যবহার করা হয়। এই সংখ্যাটি ভয় পাওয়ার একটি বিশেষ নামও রয়েছে। প্রাচীন গ্রিক ভাষায় এটি ‘ট্রিসকাইডেকাফোবিয়া’ নামে পরিচিত। স্টিফেন কিং, ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট-সহ বহু নামী ব্যক্তির এই ভীতি ছিল।

এই ভয় কাটানোর জন্য ১৮৮১ সাল থেকে নিউ ইয়র্কের কয়েকজন মিলে ‘থার্টিন ক্লাব’ তৈরি করে। জানুয়ারি মাসের ১৩ তারিখে ১৩ জন সদস্য নিয়ে ১৩ নাম্বার ঘরে বসে তারা এই বিষয় নিয়ে আলোচনাও করতেন। খেলোয়াড়েরাও তাদের জার্সিতে ১৩ সংখ্যাটির ব্যবহার করে এই কুসংস্কার ভাঙতে শুরু করেন। তবে কোনো কোনো জায়গায় এই সংখ্যাকে শুভ মানা হয়। ফ্রান্স এবং ইতালিতে কোনো শুভ বার্তা পাঠাতে হলে পোস্টকার্ডের উপর ১৩ সংখ্যাটি লেখা হয়।

সূত্র: আনন্দবাজার

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৬:৪৮ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২২

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

দেহাতি চিকেন
(209 বার পঠিত)
advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]