
নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ১৯ অক্টোবর ২০২২ | প্রিন্ট
উজানের পাহাড়ি ঢলে জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে যমুনা, ঝিনাই ও সুবর্ণখালির নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আকস্মিক এ বন্যায় উপজেলার চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের ১০ গ্রাম তলিয়ে গেছে কৃষকের কয়েক শত হেক্টর জমির ফসল। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে কয়েক হাজার কৃষক। দিশেহারা এসব কৃষককে সহায়তা আশ্বাস দিয়েছে উপজেলা কৃষি অফিস।
উপজেলা কৃষি অফিস ও সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, উজানের পাহাড়ি ঢলে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর বাহাদুরবাদ পয়েন্টে ছয় সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা, আওনা, পোগলদিঘা, সাতপোয়া, কামরাবাদ ও ভাটারা ইউনিয়নের অন্তত ১০ গ্রামের চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলগুলোর জমির ফসল বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। গত এক সপ্তাহে এসব এলাকার ৭২১ হেক্টর রোপা আমন, ১৫০ হেক্টর ভুট্টা, ১০০ হেক্টর মাসকলাই, ৫০ হেক্টর পেঁয়াজ, ৫০ হেক্টর মিষ্টি আলু, ২০ হেক্টর বাদাম ও ৭৫ হেক্টর শাক-সবজির ক্ষেতে পানি ওঠায় ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আকস্মিক এ বন্যায় ফসল নষ্ট হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন কয়েক হাজার কৃষক। ক্ষতির মুখে পড়লেও এখনো খোঁজ নেয়নি কৃষি অফিস বা প্রশাসন, এমনটাই দাবি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের।
উপজেলার নগদা গ্রামের বাসিন্দা হাফিজুর মিয়া, জুলহাস ও রাবেয়া বেগম জানান,
অসময়ে নদীর পানি বৃদ্ধি পায় এমনটা কখনো দেখেনি তারা। বন্যায় আমন ধান, মরিচ, ভুট্টা, মাষকলাই, বিভিন্ন শাকসবজির জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। কৃষকের এই ক্ষতি অপূরণীয়।
উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের বাঘমারা গ্রামের কৃষক খলিল আকন্দ জানান, বেশি লাভের আশায় দুই বিঘা জমিতে মরিচ আবাদ করেন। এতে ৫০/৬০ হাজার টাকা খরচ হয় তার। আকস্মিক নদীর পানি বৃদ্ধি হয়ে ফসলের ক্ষেতে পানি ওঠায় সব নষ্ট হয়ে গেছে। এতে প্রায় ৩/৪ লক্ষ টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ওই কৃষক।
এছাড়া শিশুয়া, মালিপাড়া চর সরিষাবাড়ী এলাকার কৃষক সেজনু মিয়া, আকবর আলী, মনির উদ্দিনসহ আরো অনেকেই জানান, ঋণ করে জমিতে রোপা আমন, ভুট্টা, মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন ও শাকসবজি আবাদ করেন। অসময়ে বন্যায় জমির ফসল নষ্ট করে দিল। ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে সর্বশান্ত হওয়ার পথে তারা। কেউ খোঁজ নিতেও আসেনি। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের সহায়তা দাবি তাদের।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন কালের কণ্ঠকে বলেন, আকস্মিক এই বন্যায় কৃষকের বিভিন্ন ফসল পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে তাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে। কৃষি অফিস থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হবে বলে জানান তিনি।
Posted ৫:৪৪ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৯ অক্টোবর ২০২২
ajkerograbani.com | Salah Uddin