
নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর ২০২২ | প্রিন্ট
রিসোর্ট ও গণশৌচাগারের পয়ঃবর্জ্য যাচ্ছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের বালিয়াড়িতে। যার দুর্গন্ধ পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের পাশাপাশি ক্ষতি করছে পর্যটকদের। এ ছাড়া সৈকতপাড়ের রেস্তোরাঁয় বিক্রি হচ্ছে পচা ও বাসি খাবার।
এমন পরিস্থিতিতে বুধবার (১৯ অক্টোবর) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে নীলিমা রিসোর্ট, গণশৌচাগার ও চিয়ার্স রেস্তোরাঁ নির্মাণাধীন স্থাপনা। এ সময় পচা ও বাসি খাবার রাখার দায়ে জরিমানা করা হয়েছে দুটি রেস্তোরাঁকে।
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট— এই পয়েন্টে সৈকতপাড়ে রয়েছে নীলিমা রিসোর্ট, গণশৌচাগার ও ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠান। যার পয়ঃবর্জ্য গিয়ে পড়ছে সৈকতের বালিয়াড়িতে। একই সঙ্গে বালিয়াড়িতে স্তূপ করে রাখা হচ্ছে প্লাস্টিক, ডাবের খোসা ও ময়লা-আবর্জনা। এসব ঘিরে অবস্থান করছে গরু ও কুকুর। আর এসব পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে পর্যটকরা। যার দুর্গন্ধে বিব্রত হচ্ছেন তারা।
মতিউর রহমান নামে এক পর্যটক বলেন, সৈকতের বালিয়াড়িতে ময়লা-আবর্জনা, ডাবের খোসা, প্লাস্টিক বর্জ্য পড়ে রয়েছে। যেখান থেকে এডিস মশার প্রজনন হতে পারে। এটা পর্যটকদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ঝুঁকি।
আরেক পর্যটক আসিফ ইকবাল বলেন, খুবই বিব্রতকর। পর্যটন নগরীতে এমন নোংরা পরিবেশ কখনও আশা করিনি। আমরা দূর-দূরান্ত থেকে আসি প্রাকৃতিক পরিবেশ, সৌন্দর্য, সাগর, পাহাড় ও বালিয়াড়ি উপভোগ করার জন্য। কিন্তু তার বিপরীতে আমরা পাচ্ছি, ময়লা-দুর্গন্ধ পরিবেশ। এটা কোনোভাবেই প্রত্যাশা করি না।
এমন পরিস্থিতিতে বুধবার বিকেলে অভিযানে নামে প্রশাসন। সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে যান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মোহাম্মদ জাকারিয়ার নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তা, স্যানিটারি পরিদর্শক, জেলা পুলিশ, টুরিস্ট পুলিশ ও আনসার সদস্যরা। অভিযানে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে গিয়ে দেখতে পান নীলিমা রিসোর্ট, গণশৌচাগার ও ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠানের পয়ঃবর্জ্য বালিয়াড়িতে রয়েছে এমন দৃশ্য। তবে এ ব্যাপারে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ।
নীলিমা রিসোর্টের ম্যানেজার শিশির বলেন, শুধু আমরা নীলিমা রিসোর্ট নয়, অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গণশৌচারগার থেকেও সৈকতের বালিয়াড়িতে ময়লা যাচ্ছে। এটা আগে থেকে এভাবে ছিল। তবে মঙ্গলবারও (১৮ অক্টোবর) পয়ঃবর্জ্য থেকে দুর্গন্ধ না ছড়াতে পাউডার দেয়া হয়েছে।
আর পরিবেশ অধিদফতর সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ইসিএ এলাকায় এ ধরনের কার্যক্রম এবারে নিষিদ্ধ। তারা কোনো ধরনের পরিবেশ অধিদফতরের অনুমতি নেয়নি। আর রিসোর্টের এসব পয়ঃবর্জ্য সৈকতের পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য ও পর্যটকসহ স্থানীয়দের স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে ফেলছে।
অভিযানে নেতৃত্বদানকারী কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, নীলিমা রিসোর্ট কোনো ধরনের কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তারা কোনো ধরনের অনুমতি নেয়নি। তাই রিসোর্ট আপাতত বন্ধ থাকবে। আর এই ধরনের অভিযান এখন থেকে সপ্তাহে একদিন করে করার চিন্তাভাবনা রয়েছে।
পচা ও বাসি খাবার রাখার দায়ে নীলিমা রেস্তোরাঁকে ২০ হাজার এবং হাঁড়ি রেস্তোরাঁকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
Posted ৩:০৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর ২০২২
ajkerograbani.com | Salah Uddin