
নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ৩১ অক্টোবর ২০২২ | প্রিন্ট
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) অ্যাকাডেমিক ভবন-২ এর চলন্ত লিফটে প্রায়ই আটকা পড়ার ঘটনা ঘটছে। একপ্রকার মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে ভবনটির দুইটি লিফট। এতে আতঙ্ক বিরাজ করছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
রোববার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় হঠাৎ লিফট বন্ধ হয়ে যায়। এতে লিফটে আটকা পড়ে অনেক শিক্ষার্থী। আতঙ্কিত হয়ে দরজায় ধাক্কা দিতে থাকেন তারা। অনেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
লিফটে আটকা পড়ার ভয়াল অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী স্মৃতি চক্রবর্তী বলেন, ডিপার্টমেন্টের প্রেজেন্টেশন শেষে সন্ধ্যা ৬টায় আমরা অর্থনীতি বিভাগের ৬ জন অ্যাকাডেমিক ২ এর ১০ তলায় লিফটে উঠি। লিফটে ওঠার পর হঠাৎ লোডশেডিংয়ের কারণে আমরা ৬ জন লিফটে আটকে যাই। কিছুক্ষণ আটকে থাকার পর লিফটে জরুরি নম্বরে ফোন দেওয়া হয়। ঐ নম্বর থেকে বলা হয় ‘আমি তো ছুটিতে আছি। লিফট তো নষ্ট। আপনারা অমুক স্যারকে ফোন দেন।’ আমি তখন বললাম ‘আপনি তাহলে ওই স্যারের নম্বরটা দেন, আমি নোট করছি’। উনি এ কথা শুনে ফোন কেটে দিলেন। পরে অনেকক্ষণ লিফটে আটকে থাকার পর ডিপার্টমেন্টের স্যারের সহযোগিতায় আমরা বের হয়ে আসতে সক্ষম হই।
লিফটে আটকে পড়া অর্থনীতি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী তানভীর হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ কিছুক্ষণ পর চলে আসবে ভেবে আমরা প্রথমে ব্যাপারটা গায়ে নেইনি। কিছুক্ষণ যাওয়ার পর যখন দেখলাম লিফট চালু হয়নি তখন সবাই ঘাবড়ে যাই। তখন লিফটের ভেতর খুব গরম লাগছিল, ২-১ জনের হাত-পা ঘেমে যায়। কিছুক্ষণের জন্য মনে হয়েছিল, আর বুঝি এখান থেকে বের হতে পারব না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ক্যাম্পাসে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ৫০০ কেভিএ একটি এবং ২৫০ কেবিএ দুইটি ডিজেল জেনারেটর স্থাপন করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ বিভ্রাট বা বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হলে জেনারেটর দিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন বিভাগের গবেষণাগার, শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষকদের অফিস ও লিফটসহ সম্পূর্ণ ভবনে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব।
এদিকে লিফটের এসব বিষয়ে দায়ভার এড়িয়ে যেতে নানা অজুহাত দেখান দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অনেকসময় কল করে লিফটের দায়িত্বরতদের পাওয়া যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবনসহ লিফটগুলো সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকে। এই সময়ের মধ্যেও অনেকসময় বন্ধ লিফট বিকল অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী (ইলেকট্রিক্যাল) মো. শরিফ হোসেন বলেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে লিফটে সমস্যা দেখা দেয়। লিফটে সমস্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সমস্যা সমাধান করি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অবশ্যই নিরাপদ রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রস্তুত। গতকালের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের লিফটে আটকে পড়ার বিষয়টি জেনেছি। লিফট নিয়ে যেন শিক্ষার্থীদের আতঙ্কে না থাকতে হয় তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Posted ৭:৫৫ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ৩১ অক্টোবর ২০২২
ajkerograbani.com | Salah Uddin