
নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ৩১ অক্টোবর ২০২২ | প্রিন্ট
কথিত আছে, ইরাকের টাইগ্রিস নদীর তীর ঘেঁষে সভ্যতার শুরু। কিন্তু প্রতাপশালী এই নদীটির অবস্থা এখন শোচনীয়। গ্রীষ্মে বাগদাদে টাইগ্রিসের পানি এতোই কমে যায় যে, স্থানীয়রা নদীর মাঝখানে ভলিবল খেলতে নামে! মানুষের কাজকারবার ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে টাইগ্রিসের এই মুমূর্ষু অবস্থা।
যুগ যুগ ধরে চলে আসা যুদ্ধ, খরা ও মরুকরণের ফলে দারিদ্র্য জর্জরিত হয়ে পড়েছে ইরাক। জাতিসংঘ জানায়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা পাঁচটি দেশের মধ্যে ইরাক একটি।
ইরাক সরকার ও কুর্দি কৃষকরা এনিয়ে তুরস্ককে দোষারোপ করেন। তাদের ভাষ্য, তুরস্ক বাঁধ দিয়ে টাইগ্রিস নদীর পানি আটকে রেখেছে। ইরাকের সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত শতাব্দীতে ইরাকে টাইগ্রিসের পানি প্রবেশের মাত্র ৩৫ শতাংশে নেমে এসেছে।
বাগদাদ প্রতিনিয়ত আঙ্কারাকে পানি সরবরাহের পরিমাণ বাড়াতে অনুরোধ করছে। কিন্তু তুরস্কের রাষ্ট্রদূত আলী রিজা গুনি ইরাকে যে পানি আছে, তার যথার্থ ব্যবহার করার আহ্বান জানান। জুলাই মাসে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে লেখেন, ইরাকে প্রচুর পানি অপচয় হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, তার কথা যুক্তিহীন নয়। ইরাকি কৃষকরা চাষ করা সময় জমি পানিতে ভাসিয়ে দেন। প্রাচীন সুমেরিয় যুগ থেকে এখন পর্যন্ত এ প্রথা চলে আসছে। এতে পানির ব্যাপক অপচয় হয়।
ইরাকি কৃষক আবু মেহদি (৪২) বলেন, আশির দশকে যুদ্ধের জন্য বাস্তুচ্যুত হই। এবার পানির অভাবে বাস্তুচ্যুত হতে হবে। চাষবাস ছেড়ে দিয়ে, পোষা প্রাণিগুলো বিক্রি করে দিতে হবে। পানি ছাড়া এই এলাকায় থাকা আর সম্ভব হচ্ছে না।
বিশ্ব ব্যাংক বলছে, ইরাকের অধিকাংশ স্থানের অবস্থাই ভবিষ্যতে এমন হবে। ‘জলবায়ুর কারণে বাস্তুচ্যুতি এখন ইরাকে বাস্তবতা,’ বলছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)।
Posted ৭:৫৭ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ৩১ অক্টোবর ২০২২
ajkerograbani.com | Salah Uddin