শনিবার ১লা এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

নবরুপে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শুক্রবার, ০৪ নভেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট

নবরুপে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক

কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কটি দেশের প্রথম সাফারি পার্ক। এই পার্কটির যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৯ সালে। ৯’শ হেক্টর বনভূমিকে পার্কের রেকর্ডভুক্ত করে ৬’শ হেক্টর বনভূমিতে ছোটবড় এ্যানক্লোজার তৈরি করা হয়।

এই এ্যানক্লোজারে দেশি-বিদেশি এবং বিলুপ্তসহ নানাপ্রজাতির অন্তত সাড়ে ৩’শ প্রজাতির পশু-পাখি স্থান পায় পার্কে। শুরু থেকে পার্কের আধুনিকায়নে ছোটখাটো প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলেও পুরোপুরি পর্যটক বান্ধব করতে বর্তমানে চলছে ব্যাপক উন্নয়নযজ্ঞ।

পার্কটিকে আকর্ষনীয় করে গড়তে বরাদ্দ অনুমোদন হয়েছে ১’শ ২৬ কোটি টাকা। এই বিপুল টাকা অর্থবছর ভিত্তিক ছাড় দিয়ে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন হচ্ছে ১৮১টি নান্দনিক আইটেমের নির্মাণ-মেরামতের কাজ। এতে এডিবির (এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংক) বরাদ্দে ২০১৯-২০ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরের মধ্যে নির্মাণ-মেরামতের কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অতি মহামারির (করোনা) কারণে ১৯-২০ অর্থবছরে বরাদ্দ ও কাজ না হওয়ায় এক বছর বাড়িয়ে ২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত উন্নয়নের সময় বাড়ানো হয়।

২০২০-২১ অর্থবছরে পার্কে নির্মাণ-মেরামত করা হয় ২০ কোটি টাকার। ২০২১-২২ অর্থবছর অর্থাৎ চলতি অর্থবছরে ২৮ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। ১২৬ কোটি টাকার মধ্যে অবশিষ্ট টাকার কাজ ২২-২৩ অর্থবছরের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে নিশ্চিত করেছেন সাফারি পার্কের তত্ত্ববধায়ক মাজহারুল ইসলাম ও বিভাগীয় কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী।

তত্ত্বাবধায়ক মাজহারুল ইসলাম বলেন, এরই মধ্যে সম্পন্ন ও চলমান রয়েছে বাঘের অভ্যন্তরীণ বেষ্টনী, ইনার বেরিয়ার, নাইট সেল্টার, সিংহের অভ্যন্তরীণ বেষ্টনী, স্টাফদের নিরাপত্তা টাওয়ার ৯টি, ৫ কিলোমিটার সড়ক মেরামত, জেব্রার ফিডিং স্পট, লেক খননসহ ৯টি আইটেম সম্পন্ন হয়েছে।

বর্তমানে দৃষ্টিনন্দন করে নির্মাণ ও মেরামত চলছে কুমিরের ড্রেনের উন্নয়ন, ডরমিটরি মেরামত, দৃষ্টিনন্দন প্রবেশ ও প্রধান সড়ক, সড়কের দুপাশে ভূমির উন্নয়ন, ফুটপাত নির্মাণ, বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্য চত্ত্বরের চতুর্পাশে দৃষ্টিনন্দন নিরাপত্তা দেয়াল, টিকেট কাউন্টার, মাইক্রোবাস, কার, মোটর সাইকেল ও বাসের পৃথক দুটি পার্কিং চত্বর, বাঘ ও সিংহের সাফারিতে প্রবেশ ও বের হওয়ার স্বয়ংক্রিয় সড়ক, পার্কে প্রবেশ ও বের হওয়ার পৃথক সড়ক, তৃণভোজীদের বেষ্টনী, শিশুদের এমুইজিং পার্ক, দশ প্রাণীর এনক্লুজার নির্মাণ, জলজ পাখির বেষ্টনী নির্মাণ-উন্নয়ন-সম্প্রসারণ, কুমিরের জন্য জলাশয় নির্মাণ, কানেক্টিং রোড় নির্মাণ, সরবরাহ লাইন ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, কালভাট ও সেতু নির্মাণ, পিকনিক এলাকায় লেক নির্মাণসহ চলতি অর্থবছরে ৩২ টি আইটেমের কাজ চলছে।

অবশিষ্ট ১৪০ টি আইটেমের কাজ হবে আগামী অর্থবছরে। ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক কক্সবাজারের উন্নয়ন ও স¤প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে ১২৬ কোটি টাকা বরাদ্দে ১৮১ টি আইটেমের কাজ চলমান রয়েছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পার্কের সর্বত্র উন্নয়নের কাজ চলছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার লাগোয়া পার্কে ডুকতেই নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন তোরণ এবং প্রবেশ পথ। গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য দৃষ্টিনন্দন করে সাজানো হয়েছে। লাগানো হয়েছে সবুজ বৃক্ষায়ন। পার্কের সামনে প্রতিস্থাপন করা বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য আরো আধুনিকায়ন করা হয়েছে।

এসব উন্নয়ন কাজের সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন পার্কের তত্ত্বাবধায়ক মাজহারুল ইসলাম। মাসে অন্তত দু’বার চট্টগ্রাম থেকে সরেজমিন এসে দেখবাল করছেন বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী।

রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, নির্মাণ-মেরামতের কাজ শেষ হলে দর্শনার্থীরা আগের চেয়েও বেশি আনন্দ পাবে ও সন্তুষ্ট হবে। ফিরতে পারবে মুগ্ধ হয়ে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের পর উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হলে দৃষ্টিনন্দনে আমুল পরিবর্তন আসবে দেশের প্রথম সাফারি পার্কটির।

তিনি আর জানান, সড়কসহ প্রাণী রাখার প্রতিটি ক্ষেত্রে লাগছে উন্নয়নের ছোঁয়া। প্রতিদিনই বিকশিত হচ্ছে রুপ-রঙ। এরই মধ্যে মুগ্ধতা প্রকাশ পেতে যাচ্ছে দর্শনার্থীদের। সঙ্গে আগত পর্যটকদের সেবার মান বাড়াতেও স্টাফদের নিয়ে নানা কাজ করা হচ্ছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৩:৫৫ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৪ নভেম্বর ২০২২

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]