শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

অলিগলিতে অবৈধ ক্লিনিক, অনুসন্ধানে উঠে এল যে তথ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট

অলিগলিতে অবৈধ ক্লিনিক, অনুসন্ধানে উঠে এল যে তথ্য

প্যাথলজিস্ট আছে উল্লেখ করা হলেও বাস্তবে কাজ চালানো হচ্ছে টেকনোলজিস্টের মাধ্যমে। বাধ্যতামূলক ডিউটি ডাক্তার থেকে শুরু করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য আলাদা তিন রঙের ডাস্টবিন, সিভিল সার্জন অফিসের পরিদর্শনের নথিতে এসব আছে লেখা হলেও সময় টেলিভিশনের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে ভিন্ন চিত্র।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, বগুড়ায় অলিগলিতে গড়ে ওঠা মানহীন অবৈধ ক্লিনিক আর ডায়াগনেস্টিক সেন্টার নিয়ন্ত্রণে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের বিরুদ্ধে মিলেছে অনিয়মের প্রমাণ। চলতি বছরের পহেলা জুন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনায় চলা জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের যৌথ অভিযানে বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় বগুড়ার সার্ক জেনারেল হাসপাতাল সিলগালা করা হয়।

সিলগালার পর চার মাস কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও ২৫ অক্টোবর খোলা হয় বেসরকারি এই ক্লিনিক। নিবন্ধন নবায়নের প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হলেও চলছে রোগী ভর্তি। নথি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে দেয়া পরিদর্শন দলের রিপোর্ট। বিপত্তি বাধে সেখানেই। রিপোর্টে সার্বক্ষণিক ডিউটি চিকিৎসকের কথা লেখা থাকলেও সরেজমিনে দেখা মেলেনি চিকিৎসকের। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য লাল, হলুদ, সবুজ; এই তিন রঙের ডাস্টবিনের কথা কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তবে একই রঙের তিনটি ড্রামে একই ধরনের যাবতীয় বর্জ্য। এমবিবিএস ডিগ্রিধারী একজন প্যাথলজিস্টের পরিবর্তে কাজ করছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। মো. জাহাঙ্গীর আলম নামে ওই ব্যক্তিই আবার সার্ক জেনারেল হসপিটালের ম্যানেজার। অনিয়মের ব্যাখ্যা চাইলে শুরু হয় অসংলগ্ন কথাবার্তা।

সিভিল সার্জন অফিসের ইন্সপেকশন টিম প্রায় ১৫ দিন আগে চেকলিস্টে লেখে গেছে প্যাথলজিস্ট আছেন। তবে ম্যানেজার জাহাঙ্গীর জানান, দুজন প্যাথলজিস্টের সঙ্গে কথা হয়েছে, তাদের মধ্যে একজন যোগদান করবেন। এ ছাড়া তারা তিন রঙের ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করেননি। একপর্যায়ে এসব প্রশ্নের জবাব দিতে না পেরে জেলা সিভিল সার্জন অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন ক্লিনিকের ম্যানেজার।

শহরের আরেক বেসরকারি ক্লিনিক একতা জেনারেল হাসপাতালের চিত্র আরও ভয়াবহ। ২০১৭ সালের পর থেকে নিবন্ধন নবায়ন না করায় অভিযানে বন্ধ করা হয় প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। যে কারও চোখে স্যাঁতসেঁতে আর অস্বাস্থ্যকর মনে হলেও আছে পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র। ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্রে উপপরিচালকের স্বাক্ষর থাকলেও ঝুঁকির মাত্রার ঘরে কোনো টিকচিহ্ন নেই। তবে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন নিবন্ধনের টাকা জমা দিয়েই শুরু হয়েছে চিকিৎসা কার্যক্রম। যদিও রোগীদের নিজের আত্মীয় বলেই পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন হাসপাতালের ব্যবস্থাপক তথা মালিক মো. আনোয়ার।

মাঠে প্রমাণ মিললেও পরিদর্শনে কোনো অনিয়ম না হওয়ার দাবি জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মাদ শফিউল আজমের।
তিনি বলেন, সব শর্ত পূরণ না করলে নিবন্ধনের সুযোগ নেই।

তিনি আরও বলেন, রোগীদের সঙ্গে প্রতারণার বিষয়ে তাদের জিরো টলারেন্স নীতির কথা। মানহীন ও অবৈধ ক্লিনিক বন্ধে অভিযান অব্যাহত রাখা হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

৩০ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরিচালিত ৫ দিনের অভিযানে জেলায় ২১টি অনিবন্ধিত ক্লিনিক সিলগালা করার পাশাপাশি ১০ লাখ ৯০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বর্তমানে জেলায় প্রায় অর্ধশত নিবন্ধনহীন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৩:২৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর ২০২২

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]