
নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ১২ নভেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
বর্তমানে অর্থনীতির যে চ্যালেঞ্জগুলো বাংলাদেশের সামনে আছে, সেগুলো বেশ কিছুদিন ধরে সবার কাছে আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ শুধু নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই অর্থনীতি নিয়ে যে চ্যালেঞ্জগুলো আছে, সেগুলো প্রকট হয়ে উঠছে। বিভিন্ন দেশ বিভিন্নভাবে মোকাবেলা করছে। বাংলাদেশেও আমাদের নিজেদের তাগিদে সংকট ও চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে হবে।
প্রথমে এটা বলে রাখা দরকার, মূল্যস্ফীতি, টাকার অবমূল্যায়ন হচ্ছে। কর্মসংস্থান কমে যাচ্ছে। রপ্তানি বাণিজ্যে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। রেমিট্যান্সের সমস্যা আছে। বিশেষ করে এই চ্যালেঞ্জগুলো এখন একটু বেশি প্রমিনেন্ট হয়ে দেখা দিচ্ছে। এগুলোর মূল কারণ হিসেবে আমরা সাধারণত বলে থাকি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপট কিংবা কভিড-১৯। সেগুলো তো আছেই। কিন্তু আমাদের অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ ও বেশ কিছু সমস্যা অনেক আগে থেকেই ছিল। সেগুলো সময়মতো প্রত্যক্ষভাবে মোকাবেলা করার ব্যাপারে আমরা তেমন কার্যকর ভূমিকা দেখতে পাইনি।
এখনো পর্যন্ত আমরা যেটা অনুভব করছি সেটা হলো, সমন্বিত এবং পরিপূর্ণ কতগুলো পদক্ষেপ নিয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে দেখছি না। তবে সম্প্রতি আইএমএফ মিশন আসার পর তারা নানা সমস্যার কথা বলেছে। তারা কিছু শর্ত দিয়েছে। অনেক সমস্যা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। গবেষক, অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকাররা কিন্তু বারবার এসব সমস্যার কথাই বলছেন। সরকার এগুলো জানে, স্বীকারও করে। কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। আইএমএফ মোটা দাগে যে সমস্যাগুলোর কথা বলেছে; ব্যাংকিং সেক্টরে রিফর্ম, ডিফল্ট লোন, করাপশন, মুদ্রাপাচার, সুদের হার, এক্সচেঞ্জ হার ইত্যাদি। তারা বলছে, একদম যুক্তিসংগতভাবে এগুলোকে মোকাবেলা করতে হবে।
আমার প্রথম অবজারভেশনটা হলো, এই সমস্যাগুলো খুব গভীরভাবে পর্যালোচনা করে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এগুলো তো জানা সমস্যা, এগুলোর কারণ কী? কারণগুলো বের করতে পারলেই তখন সমস্যাগুলোর একটা সমাধানও পাওয়া যাবে। একটার সঙ্গে আরেকটার সংযোগ রয়েছে। যেমন—ফরেন এক্সচেঞ্জের সঙ্গে রেমিট্যান্স সম্পর্কিত। এটার সঙ্গে সম্পর্কিত রপ্তানি বাণিজ্য কমে গেছে, আমদানি বেড়ে গেছে। আমদানি কী কারণে বেড়েছে, কী কী বেড়েছে, সেগুলো বের করতে হবে। তারপর এফডিআই, বিদেশি বিনিয়োগ আসছে না। অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে। শুধু বাংলাদেশ ব্যাংকের নয়, এখানে এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর, বিডার (বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি) ভূমিকা আছে, এখানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েরও ভূমিকা আছে। তারপর মানি লন্ডারিং রোধ করার বিভিন্ন সংস্থার ভূমিকা আছে। সবাই মিলে যদি সমন্বিত পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে সমস্যা সমাধান কঠিন হবে। আপনি একটা ঠিক করতে যাবেন, সেটা অন্যদিকে সমস্যা দেখা যাবে। অতএব এই ব্যাপারটি অনুধাবন করা উচিত। এটা নয় যে সব একসঙ্গে করে ফেলবেন, সব সমস্যা সমাধান করে ফেলবেন, সব কিছু সংস্কার করে ফেলবেন। কতগুলো বেসিক জিনিস, সেগুলোর একসঙ্গে একযোগে সমাধান করার উদ্যোগ নিতে হবে।
Posted ১:৫৩ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১২ নভেম্বর ২০২২
ajkerograbani.com | Salah Uddin