
নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক রেজুলেশন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।
বুধবার রাতে এ প্রস্তাব গৃহীত হয়। প্রস্তাবটি যৌথভাবে উত্থাপন করে ওআইসি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এ তথ্য জানিয়েছে।
এবারের রেজুলেশনটিতে ১০৯টি দেশ সহ-পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করেছে যা এ যাবত সর্বোচ্চ।
রেজুলেশনটি গৃহীত হওয়ার সময় বক্তব্যে বাংলাদেশের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, প্রত্যাবর্তনের আগ পর্যন্ত ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সংহতি পাওয়ার দাবি রাখে। এই মানবিক সাড়াদান প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত অর্থায়ন।
গুরুত্বপূর্ণ এই মানবাধিকার ইস্যুতে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ওআইসি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘমেয়াদী উপস্থিতির অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে মনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা মানবিক বিবেচনায় মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিলাম, ব্যস্তচ্যুত এ জনগোষ্ঠীর সবসময়ই মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। সে লক্ষ্যে আমরা দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক উভয় ফ্রন্টে বহুমুখী কূটনৈতিক প্রচেষ্টা গ্রহণ করছি- যাতে মিয়ানমারে নিরাপদ ও স্বেচ্ছা প্রত্যাবর্তন উপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়।
রেজুলেশনটিতে প্রাথমিকভাবে দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে- মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর, যা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আরো অবনতির শিকার হয়েছে। এতে রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করা, রাখাইন রাজ্যে স্বপ্রণোদিত, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতসহ জাতিসংঘের সব মানবাধিকার ব্যবস্থাপনাকে পূর্ণ সহযোগিতা প্রদান করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
মিয়ানমারের রাজনৈতিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে রেজুলেশনটিতে আঞ্চলিক দেশ ও আঞ্চলিক সংস্থাগুলো যেমন আসিয়ানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষ করে সর্বসম্মতিক্রমে আসিয়ানের পাঁচ দফা সুপারিশের দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর গুরত্বারোপ করা হয়েছে।
এছাড়া চলমান বিচার ও দায়বদ্ধতা নিরূপণ প্রক্রিয়ার ওপর রেজুলেশনটিতে সজাগ দৃষ্টি বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে।
পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলার অগ্রগতি এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউশনের তদন্তকে স্বাগত জানানো হয়েছে।
রেজুলেশনটিতে বাংলাদেশের প্রতি সংহতি প্রকাশ ও বাংলাদেশের নেয়া মানবিক প্রচেষ্টার স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ন্যায় বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আইসিসি, আইআইএমএম ও অন্যান্য দায়বদ্ধতা নিরূপণকারীদের সঙ্গে বাংলাদেশ যেভাবে সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে তা প্রশংসিত হয়েছে।
‘রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড বার্ডেন শেয়ারিং’ নীতির আওতায় জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো যেন বাংলাদেশে মানবিক আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের সহায়তা অব্যাহত রাখে সে আহ্বানও জানানো হয়েছে এবারের রেজুলেশনে।
Posted ৫:০৭ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২২
ajkerograbani.com | Salah Uddin