
নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
আরব বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বিশ্বকাপ আয়োজনের গৌরব অর্জন করেছে কাতার। এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো এশিয়া মহাদেশে হচ্ছে ফুটবলের এই বিশ্ব আসর। ২০০২ সালে দক্ষিণ কোরিয়া-জাপান মিলে আয়োজন করেছিল এশিয়ার প্রথম বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ও ব্যয়বহুল আসর আয়োজন করতে যাচ্ছে কাতার।
নাম: কাতার
ডাকনাম: দ্য মারুন
বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ২০২২ (স্বাগতিক)
র্যাঙ্কিং: ৫০
কোচ: ফেলিক্স সানচেজ
অধিনায়ক: হাসান আল-হাইদোস
বিশ্বকাপের গ্রুপ: এ (প্রতিপক্ষ: ইকুয়েডর, সেনেগাল ও নেদারল্যান্ডস)
এশিয়া কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কাতার বিশ্বকাপ খেলছে স্বাগতিক হিসেবে। তাই পাড়ি দিতে হয়নি বাছাই পর্বের কঠিন পথ।
ফুটবলে দেশটির ইতিহাস খুব একটা সমৃদ্ধ নয়। বিশ্বকাপের মঞ্চে প্রথমবার খেলতে চলা কাতার ২০১৯ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত এশিয়ান কাপের আসরের ফাইনালে জাপানকে ৩-১ গোলে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়। এ ছাড়া অ্যারাবিয়ান গলফ কাপে ১৯৯২, ২০০৪ ও ২০১৪ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় তারা।
বিশ্বকাপের স্বাগতিকদের দলে নেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত কোনো তারকা। আলময়েজ আলি, আকরাম আফিফ, হাসান আল-হায়দোসদের কাঁধেই থাকছে দেশটির প্রথম বিশ্বকাপ রঙিন করে তোলার ভার।
কোচের পরিকল্পনা ও কৌশল
স্প্যানিশ ফুটবল জায়ান্ট বার্সেলোনার যুবদলের সাবেক কোচ ফেলিক্স সানচেজ ২০১৭ সাল থেকে কাতার জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব পালন করছেন। তার অধীন সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ সফলতা পেয়েছে মেরুনরা। ২০১৯ সালে এশিয়া কাপ জেতানোর পাশাপাশি দলকে কনকাকাফ গোল্ড কাপের সেমিফাইনালেও তুলেছিলেন এই ৪৬ বছর বয়সী স্প্যানিশ।
কাতারের তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়ে উচ্ছ্বসিত এই কোচ দলকে খেলাতে চান ভয়ডরহীন ফুটবল। আক্রমণাত্মক ও পাসিংনির্ভর ফুটবলেই আস্থা রাখতে চান সানচেজ।
চাবিকাঠি
হাসান আল হায়দোস: কাতারের বিশ্বকাপ দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ হাসান দেশটিকে সর্বোচ্চবার প্রতিনিধিত্বকারী খেলোয়াড়ও। এই ৩১ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড ১৬৮ ম্যাচ খেলে করেছেন ৩৬ গোল, যা তাকে দিয়েছে দেশটির ইতিহাসে চতুর্থ সর্বোচ্চ গোলদাতার সম্মান।
প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলতে যাওয়া এই কাতারি তারকার আছে ক্লাব বিশ্বকাপে খেলার অভিজ্ঞতা। ২০১১ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার ক্লাব জিওনবাককে এশিয়া চ্যাম্পিয়ন করে নিয়ে গিয়েছিলেন ক্লাব ফুটবলের মর্যাদার আসরে।
নজর কাড়তে পারেন যারা
আলময়েজ আলি: সুদানিজ বংশদ্ভূত আলময়েজ খেলেন দেশটির স্টারস লিগের দল আল-দুহাইলে। ২৬ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার গোলের সামনে দারুণ ভয়ংকর। জাতীয় দলের হয়ে এখন পর্যন্ত ৮৩ ম্যাচে করেছেন ৪০ গোল। ২০১৯ এশিয়া কাপের আসর মাতিয়েছিলেন তিনি। কাতারকে শিরোপা জেতানোর পথে সে আসরে করেছিলেন ৯ গোল, যা এশিয়ান কাপের এক আসরে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড।
ইতিহাস: স্বাগতিক হিসেবে বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া কাতার প্রথমবার কোনো অফিশিয়াল ফুটবল ম্যাচ খেলেছিল ১৯৭০ সালে। বাহরাইনের বিপক্ষে সেই ম্যাচে ২-১ ব্যবধানে পরাজিত হয় তারা। ধীরে ধীরে ফুটবলে উন্নতি করা দেশটির ফুটবল নিজেদের শক্তি বৃদ্ধির জন্য অনেকাংশে নির্ভর করে অভিবাসী ফুটবলারের ওপর। এই ফুটবল পলিসির জন্য বেশ বিতর্কিতও দেশটির ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন।
বিশ্বকাপের আয়োজক হতেও অনেক বিতর্কের জন্ম দেয় কাতার। ঘুষ দিয়ে আয়োজক হওয়ার মতো অভিযোগ দেশটির বিরুদ্ধে। বিতর্ক অবকাঠামো নির্মাণে শ্রম আইন ভঙ্গেরও, যা নিয়ে ক্ষতিপূরণও গুনতে হয়েছে তাদের।
তবে সব ছাপিয়ে আরব বিশ্বের প্রথম এই বৈশ্বিক আয়োজনকে সফল করতে মরিয়া দেশটি। উপহার দিতে চায় ইতিহাসের সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ বিশ্বকাপ। সেই সঙ্গে ফুটবলের মাঠেও স্বাগতিক দেশ হিসেবে ভালো পারফর্ম করতে চায় এশিয়ান চ্যাম্পিয়নরা।
Posted ৫:০৫ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর ২০২২
ajkerograbani.com | Salah Uddin