
নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
অবিভক্ত ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার দেশবাসীর কাছে এই বার্তা পৌঁছানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ জন্য বড়সড়ো পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন মোদি সরকার। খবর দ্য হিন্দের।
১৯৪৩ সালে সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দ সরকারের কথা ঘোষণা করেন স্বয়ং সুভাষ চন্দ্র বসু। পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেয়ার পাশাপাশি ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ঘোষণা করেন তিনি। সেই বছরেই ৩০ ডিসেম্বর আন্দামানে জিমখানা গ্রাউন্ডে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন নেতাজি। এতদিন পর্যন্ত ইতিহাসে এ ঘটনার উল্লেখ থাকলেও এবার নেতাজির অবদান গোটা দেশবাসীর মাঝে তুলে ধরতে সরকারি স্বীকৃতি প্রদানের কাজ শুরু করল কেন্দ্র।
এ বিষয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, নরেন্দ্র মোদি দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই চেষ্টা করতে শুরু করেন যেন নেতাজি তার প্রাপ্য মর্যাদা পান।
তিনি আরও বলেন, একটা সময় ছিল যখন স্বাধীন ভারতে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর অবদানকে হয় ইচ্ছাকৃত এড়িয়ে যাওয়া হতো নয়তো যথাযথ সম্মান দেয়া হতো না। আর এই প্রবণতা এতদূর পর্যন্ত ছিল যে, নেতাজি সংক্রান্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি প্রকাশ্যে আনা হয়নি। ২০১৪ সালে যখন মোদি দেশের প্রধানমন্ত্রী হন, তখন থেকেই তিনি নেতাজিকে সেই সম্মান দিতে শুরু করেন যা তার প্রাপ্য।
উল্লেখ্য, অতীতে একাধিক সময়ে নেতাজিকে ‘অবিভক্ত ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী’ বলে সম্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একই সুর শোনা যায় বিজেপির অনেক নেতা-মন্ত্রীর গলায়। সম্প্রতি স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান উপলক্ষে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুকে সম্মান জানিয়ে লালকেল্লায় মিউজিয়ামগুলো সজ্জিত করা হয়। সেই মিউজিয়ামেই একাধিক জায়গায় নেতাজিকে অবিভক্ত ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এক জায়গায় প্রথম সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ও তার মন্ত্রকের পরিচিতি দেয়া রয়েছে। একটি অংশে নেতাজিকে অবিভক্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করে সেই ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেয়া আছে। বড় করে সাজানো আছে নেতাজির শপথপত্র। আরেকটি অংশে রয়েছে ক্যাথে সিনেমা হলে নেতাজির আজাদ হিন্দ সরকারের ঘোষণাপত্র পাঠের ছবি।
নেতাজির শপথপত্র খোদিত করার পাশাপাশি আজাদ হিন্দ সরকার প্রসঙ্গেও একাধিক বিষয় তুলে ধরা হয় দেশবাসীর সামনে আর এবার দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নেতাজির নাম প্রকাশ্যে আনার মাধ্যমে বড়সড়ো পদক্ষেপ নেয়ার পথে কেন্দ্র। তবে শুধু নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুই নন, এ ক্ষেত্রে স্বাধীনতাসংগ্রামী বিনায়ক দামোদর সাভারকরের ভূমিকাকেও তুলে ধরতে মরিয়া মোদি সরকার।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বিনায়ক দামোদর সাভারকরকে নিয়ে একাধিক বিতর্কিত মন্তব্য করেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। পরবর্তী সময়ে তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ পর্যন্ত করা হয় আর এবার সেই স্বাধীনতা সংগ্রামীর ইতিহাস তুলে ধরতে চলেছে বিজেপি। একই সঙ্গে বিশেষজ্ঞদের মতে, নেতাজির নাম ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরার মাধ্যমে জওহরলাল নেহেরুর ভূমিকা একপ্রকার মুছে দিতে চাইছে কেন্দ্র। তবে এ ক্ষেত্রে স্বীকৃতি প্রদানের প্রক্রিয়া কবে নাগাদ শেষ হয়, সেটাই দেখার বিষয়।
Posted ৭:৫৪ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০২২
ajkerograbani.com | Salah Uddin