নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
ফেসবুকে শাওনের সঙ্গে পরিচয় তরুণীর। ঐ পরিচয় থেকে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। একপর্যায়ে বিয়ের কথা বলে বাসায় ডেকে ঐ তরুণীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন শাওন। এরপর মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে কল করে দেখা করতে বলেন শাওন। রাতে না যেতে চাইলে বাবুল হোসেন বাবু তাকে হুমকি দেয়। পরে বাধ্য হয়ে মরকুন কবরস্থান এলাকায় যান ঐ তরুণী। সেখান থেকে বাবুল হোসেন বাবু ও রিপন মিয়া মুখ গামছা বেঁধে তাকে নিয়ে যান। এরপর কথিত প্রেমিকসহ তিনজন তাকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে।
ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুরে। এ ঘটনায় তরুণীর কথিত প্রেমিকসহ দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ওই সময় গ্রেফতারদের ছিনিয়ে নিতে হামলায় পুলিশের এক সদস্য আহত হয়। পরে গ্রেফতার প্রেমিকের বাবা-মাসহ অপর তিনজনের নামে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়।
বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম।
গ্রেফতাররা হলেন- গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীর মরকুন কবরাস্থান এলাকার লুৎফর রহমানের ছেলে প্রেমিক আসাদুজ্জামান শাওন ও চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার মদনেরগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে বাবুল হোসেন বাবু।
ধর্ষণের শিকার তরুণী জানান, গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীর পাগাড় এলাকার জৈমতখান রোডের মোসলেম উদ্দীনের বাড়িতে ভাড়া থাকেন তারা। সম্প্রতি ফেসবুকে তার সঙ্গে পরিচয় হয় আসাদুজ্জামান শাওনের। পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিয়ের কথা বলে তাকে টঙ্গীর মরকুনের বাসায় ডেকে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন শাওন।
মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে শাওন ফোনে করে দেখা করতে বলেন। রাতে না যেতে চাইলে অপর আসামি বাবুল হোসেন বাবু হুমকি দেন। পরে তিনি বাধ্য হয়ে মরকুন কবরস্থান এলাকায় যান। সেখানে আসামি বাবুল হোসেন বাবু ও পলাতক আসামি রিপন মিয়া তার মুখে গামছা গিয়ে চেপে ধরে জোরপূর্বক নিয়ে যান। সেখানে কথিত প্রেমিকসহ তিনজন তাকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে। পরে স্থানীয়রা আসামি বাবুল হোসেন বাবুকে আটক করে। এরপর জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর-৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশকে ঘটনা জানায় স্থানীয়রা।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আসামি বাবুল হোসেন বাবুকে আটক করে। বাবুল হোসেন বাবু টঙ্গীর মরকুন এলাকায় ভাড়া থাকে। পরে ঘটনার সঙ্গে টঙ্গী পূর্ব থানাধীন মরকুন কবরস্থান এলাকার রিপন মিয়া ও প্রেমিক শাওন জড়িত বলে জানায় সে। বুধবার ভোররাতে অভিযান চালিয়ে শাওনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দুপুরে গ্রেফতারদের আদালতে সোপর্দ করা হয়।
তিনি আরো বলেন, ঐ তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনা জানিয়ে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর-৯৯৯-এ কল করেন স্থানীয়রা। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আটক বাবুল হোসেন বাবুকে নিয়ে আসার সময় হামলা চালায় তার স্বজনেরা। এতে পুলিশের এক সদস্য আহত হন। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি মামলা করেছেন। এ মামলায় আসামি আসাদুজ্জামান শাওনের বাবা লুৎফর রহমান কালু, তার স্ত্রী সনি আক্তার ও ফাতেমা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন ভিকটিম। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ভিকটিমকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
Posted ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২২
ajkerograbani.com | Salah Uddin