
নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান বন্ধে সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের। কিন্তু হোয়াইট হাউসের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আপাতত সেই পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে। খবর এনডিটিভির।
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন কিরবি শুক্রবার (০২ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘এই মুহূর্তে ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সংলাপে বসার কোনো অভিপ্রায় বা পরিকল্পনা আমাদের প্রেসিডেন্টের নেই এবং তার প্রধান কারণ পুতিন।’
কিরবি বলেন, ‘পুতিন কোনো প্রকার সংলাপে যেতেই আগ্রহী নন বরং প্রকৃতপক্ষে তিনি এর উল্টোটাই চান। আমাদের প্রেসিডেন্টও এ ব্যাপারটি লক্ষ করেছেন।’
এর আগে বৃহস্পতিবার ০১ (ডিসেম্বর) ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেন, যুদ্ধ বন্ধের উপায় খুঁজতে যদি পুতিনের আগ্রহ থাকে তাহলে তিনি তার সঙ্গে বৈঠকে প্রস্তুত রয়েছেন। তবে ওয়াশিংটন কখনও ইউক্রেনকে ছাড় দেয়ার আহ্বান জানাবে না।
মার্কিন ও ইউরোপীয় রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এই প্রথম রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের প্রতি এতটা অকপট ও খোলা মনের পরিচয় দিয়েছেন বাইডেন।
এদিকে ইউক্রেনে রুশ অধিকৃত চারটি ‘নতুন অঞ্চলকে’ স্বীকৃতি দিতে পশ্চিমাদের প্রত্যাখ্যানের কারণে যুদ্ধ বন্ধে শান্তি আলোচনা কঠিন হয়েছে পড়েছে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে পুতিনের সঙ্গে আলোচনার ইঙ্গিত দেয়ার পর রাশিয়া এই কথা জানাল।
শুক্রবার মস্কোতে এক সংবাদ সম্মেলনে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘বাইডেন এখনও জাপোরিঝিয়া, খেরসন, দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে রাশিয়ার অংশ বলে স্বীকৃতি দেননি এবং তিনি মূলত চান- পুতিন যেন ইউক্রেন ত্যাগ করেন। নিশ্চিতভাবেই এই শর্ত মস্কোর পক্ষে মেনে নেয়া সম্ভব নয়।’
যুদ্ধ বন্ধে আলোচনা নিয়ে রাশিয়া-ইউক্রেনের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগের ইঙ্গিত না থাকলেও বেশ কয়েক মাস ধরে কূটনৈতিক তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। রুশ বাহিনী ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় খেরসন থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। এরপর ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট হামলা শুরু করে দেশটি।
জ্বালানি অবকাঠামোয় রাশিয়ার হামলার জেরে কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ, গ্যাস আর পানির অভাবে দিন কাটাচ্ছেন বাসিন্দারা। ইউক্রেনের বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের অর্ধেক এখনো মেরামত করা যায়নি। কনকনে ঠান্ডায় বিদ্যুতের অভাবে লাখো মানুষের দুর্দশার শেষ নেই।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের শেষদিকে ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলকে অবৈধভাবে নিজেদের অংশ বলে ঘোষণা করে রাশিয়া। যদিও অঞ্চলগুলোর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ তারা নিতে পারেনি। ৯ মাসের যুদ্ধে মস্কো যে পরিমাণ ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড দখল করেছিল পরবর্তীতে সেগুলোর অর্ধেকেরও বেশির নিয়ন্ত্রণ ছিনিয়ে নেয় কিয়েভ।
Posted ৭:৫৬ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২২
ajkerograbani.com | Salah Uddin