
নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
৪৪ বছরে বয়সে এ বছর এসএসসি পাস করেছেন টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের এক বাবা জয়নাল আবেদীন। তার দুই মেয়েও এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। বড় মেয়ে জেসমিন আক্তার জিপিএ ৩ দশমিক ৩৩ পেয়ে কৃতকার্য হয়েছে। তবে বাবার ফল আরো ভালো, তিনি পেয়েছেন জিপিএ- ৪.৮৬।
ফুলমালিরচালা গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন ফজরগঞ্জ আলিম মাদরাসা থেকে কারিগরি বোর্ডের অধীন এসএসসি পরীক্ষার ভোকেশনাল শাখা থেকে পোল্ট্রি রিয়ারিং অ্যান্ড ফার্মিং বিষয়ে বাবা জয়নাল এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন।
তার দুই মেয়ে ফুলমালির চালা ছাকেদ আলী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের মানবিক শাখা থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। বড় মেয়ে জেসমিন আক্তার ঢাকা বোর্ডের অধীনে মানবিক শাখা থেকে জিপিএ তিন দশমিক ৩৩ পেয়ে কৃতকার্য হয়েছে আর তার আরেক মেয়ে আছিয়া খাতুন পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছেন।
বড় মেয়ে জেসমিন আক্তার বলেন, বাবার সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি এটা খুবই আনন্দের। তবে আমার চেয়ে বাবা ফলাফলে এগিয়ে। তবে ছোট বোন পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় আনন্দ কিছুটা কম। তারপরও ভালো লাগছে বাবা পরীক্ষায় পাস করেছে বেশি নম্বর পেয়ে। বাবার অদম্য ইচ্ছাশক্তির কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। আমরা বাবার সফলতায় আনন্দিত।
জয়নাল আবেদীন বলেন, ১৯৯৬ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলাম। সংসারের দায়িত্ব নিতে গিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এরপর সৌদি আরবে পাঁচ বছর প্রবাসী জীবন কাটিয়ে দেশে ফিরে আসি। ২০০১ সালে বিয়ে করে সংসার জীবন শুরু করি। কিন্তু বুকের ভেতরে লেখাপড়া করতে না পারার চাপা কষ্ট মাঝে মধ্যেই আমাকে পীড়া দিতো। লোকলজ্জার কারণে পড়ালেখা হয়ে উঠছিলো না। পরে গত ২০২০ সালে ফুলমালীর চালা ফজরগঞ্জ আলিম মাদরাসায় ভোকেশনাল শাখার পোল্টি রিয়ারিং অ্যান্ড ফার্মিং ট্রেড শাখায় নবম শ্রেণিতে ভর্তি হই। পরে এসএসসি পরীক্ষায় মেয়েদের সঙ্গে আমিও অংশ নেই। এতে মেয়েরা আমাকে উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা দিয়েছে। পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেয়েছি।
ঘাটাইল ফুলমালীর চালা ফজরগঞ্জ আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর কাদের বলেন, ৪৪ বছর বয়সে এসে এসএসসি পাস করায় প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আমরা তাকে অভিনন্দন জানাই। লেখাপড়ায় বয়স কোনো বাধা নয়, এটা জয়নাল আবেদীন প্রমাণ করছেন, যা অন্যের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
Posted ১২:৫৪ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২২
ajkerograbani.com | Salah Uddin