
নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরের তালিকায় প্রথমবারের মতো শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক। একইসঙ্গে, যৌথভাবে তালিকার শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে সিঙ্গাপুর সিটিও।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জীবনযাপনের মানের ওপর ভিত্তি করে লন্ডনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) প্রকাশিত জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
চলতি বছর বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি দেখা দিলে শীর্ষ ব্যয়বহুল শহরের অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে গত বছর তালিকার সর্বোচ্চে থাকা ইসরায়েলের তেল আবিবকে হটিয়ে এ দুই শহর একযোগে প্রথম স্থান দখল করে নিয়েছে। তেল আবিব নেমে এসেছে তৃতীয় অবস্থানে।
তবে, জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ার হার নির্ধারিত মাত্রায় না বাড়ায় তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রাখা হয়নি কোনো দেশকে।
শীর্ষ ব্যয়বহুল শহরের তালিকার চার ও পাঁচ নম্বরে আছে যথাক্রমে হংকং ও লস অ্যাঞ্জলেস। জরিপে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী বড় বড় শহরগুলোতে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৮ শতাংশ। খরচ বৃদ্ধির পেছনে ইউক্রেন যুদ্ধ এবং কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সরবরাহ ব্যবস্থার ওপর পড়া প্রভাবকে দায়ী করা হচ্ছে।
এছাড়া মূল্যস্ফীতি বাড়ার হার সবচেয়ে বেশি তুরস্কের ইস্তাম্বুল, আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আয়ার্স এবং ইরানের তেহরানে। এসব অঞ্চলে পণ্যের দাম বেড়েছে ৮৬ শতাংশ। জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ার পেছনে বৈশ্বিক মন্দার কবলে পড়ে বিভিন্ন দেশে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির অস্বাভাবিক হারকেই দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা।
যুক্তরাষ্ট্রের চড়া মূল্যস্ফীতিও নিউইয়র্কের ব্যয়বহুল শহরের তালিকার শীর্ষে উঠে আসার অন্যতম কারণ। আর এ কারণেই ইআইইউ-র এ বছরের ব্যয়বহুল শহরের তালিকায় শীর্ষ দশে লস এঞ্জেলস ও সান ফ্রান্সিকোও জায়গা করে নিয়েছে। ডলার শক্তিশালী হওয়াও ব্যয়বহুল শহরের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রাধান্য দেখার আরেকটি কারণ।
এদিকে তালিকায় সবচেয়ে বেশি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গিয়েছে রাশিয়ার মস্কো ও সেন্ট পিটার্সবার্গের ক্ষেত্রে। শহর দু’টি যথাক্রমে ৮৮ ও ৭০ ঘর থেকে তালিকার ৩৭ ও ৭৩-এ স্থান করে নিয়েছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার ফলাফলও শহরদুটির উপরে ওঠার পেছনে ভূমিকা রেখেছে।
ইআইইউ-র এই জরিপে ১৭৩টি শহরের পণ্য ও সেবার দাম মার্কিন ডলারে কত, তার তুলনা করা হলেও এ বছরের পর্যালোচনায় কিইভকে রাখা হয়নি।
গবেষণাটির নেতৃত্বে থাকা উপসানা দত্ত বলেছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধ, রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এবং চীনের ‘শূন্য কোভিড নীতি’ সরবরাহ-চেইনে সমস্যা সৃষ্টি করছে।
তিনি আরো বলেন, এর সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সুদের হার ও বিনিময় হারে বদল মিলে বিশ্বজুড়ে জীবনযাত্রার ব্যয়ে সংকট সৃষ্টি করেছে।
উপসানা দত্ত এবারের ইআইইউ জরিপে ১৭২টি শহরে জিনিসপত্রের গড় মূল্যবৃদ্ধিকে ২০ বছরের মধ্যে তাদের দেখা ‘সবচেয়ে কড়া’ মূল্যস্ফীতি বলছেন। এই ২০ বছরের ডিজিটাল তথ্যউপাত্ত তাদের কাছে রয়েছে।
তবে ইআইইউ-র জরিপে তালিকায় সবচেয়ে কম ব্যয়বহুল শহরগুলোর মধ্যে এশিয়ার নগরীগুলোর আধিক্য দেখা গেছে।
Posted ৬:৪৯ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২২
ajkerograbani.com | Salah Uddin