শুক্রবার ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শখের বাগানে ‘মিলিবাগের’ হানা, কী করবেন

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট

শখের বাগানে ‘মিলিবাগের’ হানা, কী করবেন

শখ করে বাগান করেছেন কিন্তু পোকার আক্রমণে সব শেষ! মিলিবাগ এমন এক ধরনের পোকা, যা সহজেই গাছে আক্রমণ করে। শুধু তাই নয়, একটি গাছে আক্রমণ করলেই এর সঙ্গে থাকা সব গাছকেই আক্রমণ করে। মিলিবাগ দেখতে ছোট তুলার দলার মতো পোকা। ঘরে এবং বাইরে থাকা গাছে আক্রমণ করে থাকে। বিশেষ করে সাকুলেন্ট গাছে বেশি হয়।

মিলিবাগ

 

মিলিবাগ  কাণ্ডের ডগায় এবং একই সঙ্গে যেখান থেকে পাতা বের হয়ে আসে সেখানে থাকতে পছন্দ করে। শিকড়সহ পুরো গাছে এরা আক্রমণ করতে পারে। স্ত্রী মিলিবাগ পাঁচ থেকে দশ দিনে ৬০০টি পর্যন্ত ডিম পাড়ে এবং ডিমগুলো কয়েক দিনের মধ্যেই ফুটতে শুরু করে। ডিম থেকে প্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রী মিলিবাগের জীবনচক্র প্রায় ছয় থেকে দশ সপ্তাহ। তাই মিলিবাগের উপদ্রব খুব দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। মিলিবাগ ছোঁয়াচে রোগের মতো। এক গাছ থেকে অন্য গাছে ছড়িয়ে যায় সহজেই। তাই এটি আপনার শখের করা বাগান ধ্বংস করে দিতে পারে।

মিলিবাগ কেন হয়?

 

মিলিবাগ কয়েকটি উপায়ে আপনার বাগানে প্রবেশ করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টা ফার্মের উদ্যানতত্ত্ববিদ জাস্টিন হ্যানকক বলেছেন, যখন নতুন কোনো গাছ কিনে বাড়িতে আনা হয়, আপনার অজান্তেই গাছের সঙ্গে মিলিবাগও চলে আসতে পারে। কারণ নতুন কেনা গাছটির সঙ্গে ডিম বা ছোট মিলিবাগ লেগে থাকতে পারে। মিলিবাগ সাদা রঙের, তাই গাছের সঙ্গে লেগে আছে কি না তা সহজেই দেখতে পাবেন।  নতুন গাছ কিনলে ভালো করে দেখে কিনুন। পাতা এবং কাণ্ড ভালো করে দেখে নিন।

হ্যানকক আরো জানান, শুধু গাছে নয়, মিলিবাগ একটি পাত্র বা অন্য পৃষ্ঠে খাবার ছাড়া তিন সপ্তাহ বা এর বেশিদিন বাঁচতে পারে। তাই গাছের সঙ্গে টব বা বাগানে ব্যবহৃত অন্য পাত্রও পরিষ্কার করুন। সেখান থেকেও ছড়াতে পারে মিলিবাগ।

মিলিবাগ থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন

 

মিলিবাগ থেকে মুক্তি পাওয়া বেশ কষ্টকর এবং সময়ের ব্যাপার। কারণ মিলিবাগ তাদের গায়ের ওপরে প্রাকৃতিকভাবে একটি মোমের আবরণ তৈরি করে। এই আবরণ ভেদ করে বাইরের পোকামাকড় তাদের আক্রমণ করতে পারে না। এমনকি কোনো স্প্রে করলেও আবরণ ভেদ করে যেতে পারে না।

** আপনার গাছে মিলিবাগের আক্রমণ হয়েছে সেটা প্রথমে বুঝতে হবে।  সাদা তুলার মতো কিছু দাগ ছাড়াও থাকবে ছোট ছোট হাজারো পোকা। পাতা একং কাণ্ডের গায়ে লেগে থাকবে আঠালো পদার্থ। এগুলো দেখেই বুঝবেন পোকার আক্রমণ হয়েছে।

**  প্রতি সপ্তাহে কয়েক মাস ধরে আক্রান্ত গাছের চিকিৎসা করাতে হবে। এটা করতে হবে প্রত্যেক সপ্তাহেই। না হলে কমবে না।

** গাছের যে অংশে মিলিবাগ দেখতে পাবেন, সেখানে নিম তেল স্প্রে করে দিতে পারেন। এতে কাজ হয়। নিম তেল প্রাণী এবং গাছের জন্য বিষাক্ত নয়। এটি মিলিবাগের ডিম এবং বড় মিলিবাগের চারপাশে থাকা মোমের আবরণ ধ্বংস করতে সক্ষম।

** নিম তেলের সঙ্গে ক্যাসটাইল সাবান মিশিয়ে গাছে স্প্রে করলে উপকার পাবেন। ক্যাসটাইল সোপ বা সাবান হলো, যেটি ওলিভ অয়েল দিয়ে তৈরি। এক লিটার পানির সঙ্গে ১ চা চামচ নিম তেল এবং ১/৪ চা চামচ ক্যাসটাইল সাবান মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

** কয়েকটি রসুন কোয়া নিয়ে নিন। এরপর থেঁতলে একটি পাত্রে রাখুন। পানি গরম করে ওই রসুনের পাত্রে ঢেলে দিন। সরা রাত রেখে দিন। সকালে স্প্রে বোতলে ঢেলে নিয়মিত গাছে স্প্রে করুন।

** রাবিং অ্যালকোহল যেকোনো পর্যায়ে মিলিবাগ মেরে ফেলতে পারে। ৭০ শতাংশ  আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহলে একটি তুলার দলা ডুবিয়ে নিন এবং গাছের আক্রান্ত পাতা বা কাণ্ড মুছুন। একবার পাতাগুলো পরিষ্কার হয়ে গেলে গাছটিকে উল্টো ধরে খুবই হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে পারেন।

** অ্যালকোহলযুক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজারও স্প্রে করতে পারেন।

সতর্কতা

গাছের চিকিৎসা চলাকালে সূর্যের আলোতে কম রাখুন। কারণ গাছে স্প্রে করে রোদে রাখলে পাতা পুড়ে যেতে পারে।

সূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ২:৫৮ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২২

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]