নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ০৩ জানুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট
দেশের অর্থনীতি উন্নয়নে মৎস্য চাষে এক নবদিগন্তের সূচনা হচ্ছে। বছরজুড়ে পুকুর, খাল-বিল ও জলাশয়ে মৎস্য চাষ করে লাভবান হচ্ছেন স্থানীয় চাষিরা। এরমধ্যে আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে একই জমিতে মৎস্য ও ধান চাষ শুরু করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার কৃষকরা। একই জমিতে মাছ ও ধান চাষে সফলতা পেয়েছেন তারা।
উপজেলার মৎস্য অফিস জানায়, এ উপজেলায় বৎসরে উৎপাদিত হচ্ছে ৪৭২০ টন মাছ। এরমধ্যে উপজেলায় মাছের চাহিদা রয়েছে ৩৫৭৫ টন। উদ্ধৃত থাকছে ১১৪৫ টন। যা স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ দেশের বাহিরে সরবরাহ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্ষা মৌসুমে পৌর শহরসহ উপজেলার নিচু এলাকায় জমিতে ৫-৭ মাস পানি থাকে। আর শুষ্ক মৌসুমে নিচু এলাকায় কৃষকরা এক ফসলি ধান চাষ করছেন। ধান কাটা শেষ হতে না হতেই ওইসব জমিতে পানি চলে আসায় স্থানীয় মৎস্য চাষি ও কৃষকরা বাঁধ দিয়ে মৎস্য চাষ করছেন। চাষকৃত মাছের মধ্যে রয়েছে- রুই, কাতল, মৃগেল, তেলাপিয়া,পাঙ্গাস,স্বরপুটি, কার্ফ, গ্রাসকাপ, বোয়ালসহ নানা প্রজাতির মাছ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌর শহরের তারাগন, উপজেলার, ধাতুরপহেলা, কুসুমবাড়ি, দরুইন, মনিয়ন্দসহ বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে দেখা যায় স্থানীয় চাষিরা নিচু এলাকায় ধান কাটার পর তারা মৎস্য চাষ করছেন। এরমধ্যে কেউ ইজারা নিয়ে, কেউ বা ব্যক্তিগত ভাবে আবার কেউ অংশীদারিত্বে মৎস্য চাষ করছেন। ধান চাষে কৃষকরা যে টাকা আয় করছে তার চাইতে কয়েকগুন বেশী মাছ চাষ তাদের আয় হচ্ছে বলে জানায়।
মাছ চাষি মো. বাছির মিয়া জানান, বাড়ি সংলগ্ন বিলে তার ৫০ শতক নিচু জমি রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে জমিতে ৬-৭ মাস পানি থাকায় দেশীয় পদ্ধতিতে নানা জাতের মাছ চাষ করছেন। এ বছর মাছ চাষে খরচ বাদে তার ৬০ হাজার টাকা আয় হয়।
মো. লোকমান মিয়া জানান, নিচু এলাকায় তার ৬০ শতক জায়গা রয়েছে। নিজ উদ্যোগে বর্ষা মৌসুমে তিনি এই জমিতে মাছ চাষ করেন। মাছ বিক্রি শেষ হওয়ায় এখন বোরো ধান আবাদ করতে জমি প্রস্তুত করছেন। এই বছর খরচ বাদে মাছ চাষ থেকে ৭০ হাজার টাকা আয় হয়েছে তার। ধান চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন তিনি।
চাষি ফরহাদ মিয়া জানান, একটি বিলে তার ৭০ শতক জায়গা রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে ৬-৭ মাস কোনো চাষ ছাড়াই পড়ে থাকতো। মৎস্য অফিসের পরামর্শে বাঁধ দিয়ে নানা জাতের মাছ চাষ করে এ বছর তার আয় হয়েছে ৬০ হাজার টাকা।
তিনি আরো বলেন, একই জমিতে পৃথক দু’চাষে যতেষ্ট উপকার রয়েছে। জমি উর্বর থাকে। ধান চাষে খরচ কম আর ফসলও ভালো হয়। তাছাড়া মাছ চাষে সময় খাবারও কম লাগে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, একই জমিতে নানা কৌশলে মাছ চাষ করে চমক সৃষ্টি করেছেন মৎস্য চাষিরা। তাছাড়া ধান ও মাছ চাষে জমি উর্বর থাকে। ফলনও ভালো হয়। এখানকার বেশী ভাগ মৎস্য চাষি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। ধান ও মাছ উৎপাদনে কোনো সমস্যায় চাষিরা এলে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করে থাকি।
Posted ৬:১০ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৩ জানুয়ারি ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin