বুধবার ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বুধবার, ০৪ জানুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট

ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

নেত্রকোনার মদনে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। পুরাতন বাঁধ কেটে তৈরি করা হচ্ছে বাঁধ। সংস্কার কাজের উদ্বোধন করলেও অধিকাংশ বাঁধে এখনো কাজ শুরু করা হয়নি। সময় মতো মেরামত কাজ বাস্তবায়ন না হলে অকাল বন্যায় বাঁধ ভেঙে ফসলহানি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নীতিমালা অনুযায়ী, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তা শেষ করার কথা রয়েছে। এর আগে প্রাক্ষলণ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের কাজ ৩০ নভেম্বরের মধ্যে শেষ করতে হয়। এক সময় ঠিকাদারের মাধ্যমে হাওরে বাঁধ মেরামত করা হতো। কিন্তু ২০১৭ সালের অকাল বন্যায় বাঁধ ভেঙে ফসলহানির পর পাউবোর কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। পরে টেন্ডার পদ্ধতি বাতিল করে পিআইসি ব্যবস্থা চালু করা হয়।

উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় পিআইসি কমিটি গঠন করে পাউবো বাঁধ মেরামত করে থাকে। স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে কমিটির সদস্য হবেন পাঁচ থেকে সাতজন। এসব কমিটি হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ পুনর্নির্মাণ ও মেরামতের কাজ করবে।

জানা গেছে, এ বছর মদন উপজেলায় ১৬ টি ফসল রক্ষা বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। ১৬টি বাঁধ মেরামতের বিপরীতে ১ কোটি ৯১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ওই বাঁধগুলোর ওপর স্থানীয় কৃষকদের সাড়ে ৮ হাজার হেক্টর জমির এক ফসলি বোরো ফসল নির্ভরশীল।

বুধবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ১৬ টি বাঁধের মধ্যে ৩ টি বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করা হয়েছে। বাকী ১৩ টি বাঁধের মেরামত কাজ এখনো শুরু করা হয়নি।

নেত্রকোনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, সবকটি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এ দিকে পদমশ্রী-বালালী উপ-প্রকল্পের বালই নদীর ভোল্লা অংশের বাঁধ কেটে বাঁধ সংস্কার করায় কাজ বন্ধ রয়েছে বলে কার্যসহকারী সোহেল খান নিশ্চিত করেছেন।

কৃষকদের দাবি সময়মত ফসল রক্ষার বাঁধে কাজ না করায় আগাম বন্যার পানিতে ফসলের ক্ষতি হয়। পানি আসার সময় দ্রুত মাটি কাঠায় প্রকল্পের মাটি সরে যায়। তাই প্রতি বছরেই এসব বাঁধে মাটি কাটলেও কৃষকদের উপকারে আসছেনা। নিয়মনীতি না মেনে অধিকাংশ প্রকল্পের পিআইসিতে জনপ্রতিনিধিদেও নাম রাখা হয়েছে।

বালালি পদমশ্রী উপ-প্রকল্পে প্রতি বছরেই সদস্য সচিব হিসেবে রাখা হচ্ছে মদন পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের একজন মাঠকর্মীকে। এক ফসলি কৃসকরা এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

স্থানীয় কৃষক মহন মিয়া, সুহেল, ধানাই মিয়াসহ অনেকেই জানান, অকাল বন্যার কবল থেকে আমাদের বোরো ফসল রক্ষার জন্য বাঁধ তৈরি করতে সরকার প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সময় মতো বাঁধ মেরামতের কাজ না করায় প্রতিবছর আমাদের আতংকে থাকতে হয়। সঠিক সময়ে বাঁধ মেরামত করে কৃষকদের স্বস্থিতে রাখার দাবি জানান তারা।

নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো’র) কার্যসহকারী সুহেল খান জানান, পদমশ্রী-বালালী উপ-প্রকল্পের বালই নদীর ভোল্লা অংশে পুরাতন বাঁধের অর্ধেক অংশ কেটে বাকী অর্ধেক অংশ মেরামত করায় কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দূর থেকে মাটি এনে বাঁধ মেরামত করতে বলা হয়েছে।

মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কাবিটা প্রকল্পের সভাপতি তানজিনা শাহরীন জানান, মদন উপজেলায় বর্তমানে ১৬টি ফসল রক্ষা বাঁধের কাজের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আরো ৮ টি প্রকল্পের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

বাঁধ কেটে বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাঁধ কেটে বাঁধ সংস্কারের কোনো সুযোগ নেই। তবে সব প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।

নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারোয়ার জানান, মাঠকর্মীদের তথ্যনুযায়ী মদন উপজেলার প্রত্যেকটি প্রকল্পে কাজ শুরু হয়েছে। বাঁধের কাছ থেকে মাটি নেয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি কেউ এমন করে থাকে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১০:০৫ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৪ জানুয়ারি ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]