মঙ্গলবার ২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হেজাজ যেভাবে সৌদি আরব হলো

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ০৮ জানুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট

হেজাজ যেভাবে সৌদি আরব হলো

হেজাজ- এর আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে ‘বাধা’। এই অঞ্চলটি বর্তমান সৌদি আরবের পশ্চিম অংশ। এর পশ্চিমে লোহিত সাগর, উত্তরে জর্ডান, পূর্বে নজদ ও দক্ষিণে আসির অবস্থিত। এর প্রধান শহর জেদ্দা। তবে ইসলামের পবিত্র শহর মক্কা ও মদিনার জন্য এই অঞ্চল অধিক পরিচিত।
ইসলামের পবিত্র স্থানের অবস্থানের কারণে হেজাজ আরব ও ইসলামি বিশ্বে ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পশ্চিমে তিহামাহ থেকে পূর্বের নজদকে পৃথক করেছে বলে এই অঞ্চলের এরূপ নাম হয়েছে। এটি ‘পশ্চিম প্রদেশ’বলেও পরিচিত।

উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ঐতিহাসিকভাবে হেজাজ সৌদি আরবের বাকি অংশ থেকে পৃথক বিবেচিত হয়ে এসেছে। এটি সৌদি আরবের সবচেয়ে জনবহুল অঞ্চল। মোট সৌদি জনসংখ্যার ৩৫ শতাংশ এখানে বসবাস করে। হেজাজি আরবির সঙ্গে মিশরীয় আরবির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তবে সৌদি হেজাজিদের জাতিগত উৎস ভিন্ন।

আরব উপদ্বীপের মধ্যে হেজাজ হচ্ছে সার্বজনীন। সৌদি আরবের যেকোনো আঞ্চলিক গোষ্ঠীর চেয়ে হেজাজের জনগণ পৃথক এবং কিছুমাত্রায় মৌলিক পরিচয় বহন করে। উৎপত্তিগত উৎসের কারণে সৌদি আরবের কাছ থেকে তারা কিছু মাত্রায় পৃথক। ফলে আরব উপদ্বীপের ইতিহাসের বয়ানে পার্থক্য ধরা পড়ে। এ কারণে হেজাজিরা নজদের সঙ্গে উত্তেজনাকর অবস্থার অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে। হেজাজের মানুষ কখনো সৌদি শাসন পূর্ণরূপে গ্রহণ করেনি।

হেজাজে এক বা দুইটি মেগালিথিক সমাধি খুজে পাওয়া গেছে। তথ্যপ্রমাণ অনুযায়ী হেজাজের উত্তরাংশ রোমান প্রদেশ আরাবিয়া পেট্রাইয়ার অংশ ছিল। মাহদ আদ জাহাবের স্বর্ণ খনন অঞ্চল ও উত্তর পূর্ব দিকে পারস্য উপসাগরের দিকে ওয়াদি আল বাতিন প্রক্রিয়ায় প্রবাহিত পানির উৎস (বর্তমানে শুষ্ক) হিজাজের অন্তর্ভুক্ত। বস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব গবেষণা অনুযায়ী ২৫০০-৩০০০ খ্রিষ্টপূর্বে নদী ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল।

পবিত্র দুই শহরের উপস্থিতির কারণে হেজাজ অঞ্চল আধুনিক ইতিহাসের বেশ কিছু সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। দামেস্কে রাজধানী স্থানান্তরের আগ পর্যন্ত হেজাজ ছিল খিলাফতের কেন্দ্র ছিল। পরবর্তী অধিকাংশ সময়জুড়ে হেজাজ মিশর ও উসমানীয় সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এরপর ২০ শতকের প্রথমদিকে সংক্ষিপ্তকালের জন্য হেজাজ রাজনৈতিক স্বাধীনতা ভোগ করে।

১৯১৬ সালে হুসাইন-ম্যাকমোহন সমঝোতার ভিত্তিতে হুসাইন বিন আলী নিজেকে হেজাজের স্বাধীন রাজা বলে ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে সংঘটিত আরব বিদ্রোহ উসমানীয় সাম্রাজ্যের অবসান ঘটায়। ১৯২৪ সালে পার্শ্ববর্তী নজদ অঞ্চলের আবদুল আজিজ ইবনে সৌদ কর্তৃক হুসাইন বিন আলী ক্ষমতাচ্যুত হন। হেজাজ নজদ ও হেজাজ রাজতন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত যা পরবর্তীতে সৌদি আরব হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৮:২২ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০৮ জানুয়ারি ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]