
নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ০৯ জানুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট
ভোলায় মুক্তিযোদ্ধা সনদ জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি ভাতা উত্তোলন ও তিন ছেলেকে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে রুহুল আমিন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধ না করেও নিজের নামের সঙ্গে মিল থাকা এক বীর মুক্তিযোদ্ধার সনদ জাল করে অনৈতিক এ সুবিধা নেন তিনি।
অভিযুক্ত রুহুল আমিনের বাড়ি দৌলতখান উপজেলার চন্দ্র প্রসাদ গ্রামে। তার বাবার নাম মৃত ছেলামত কাজী।
তবে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিনের বাড়ি উপজেলার চর লামছিপাতা গ্রামে। তিনি শহীদ মুক্তিযোদ্ধা রুস্তম আলী কাজীর ছেলে।
জানা যায়, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিনের লাল মুক্তিবার্তার নম্বর ও সনদ জাল করে ২০১৩ সাল থেকে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতাসহ সরকারি সব সুবিধা ভোগ করছেন অভিযুক্ত চন্দ্র প্রসাদ গ্রামের রুহুল আমিন। শুধু ভাতা উত্তোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেননি, জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা সনদ দিয়ে তিন ছেলেকে সরকারি চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন। এর মধ্যে তার তার এক ছেলে আলী আকবর জেলা প্রশাসনে অফিস সহকারী, আলী আজগর ও মিজানুর রহমান পুলিশে কর্মরত।
এসব বিষয়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন জেলা প্রশাসক ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে লিখিত আবেদন করলে বেরিয়ে আসে এমন চাঞ্চল্যকরসব তথ্য।
অভিযোগে প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন দাবি করেছেন, অভিযুক্ত তার লাল মুক্তিবার্তা, গেজেট সনদ, এনআইডি জাল করেছেন। আর জাল সনদ দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা উত্তোলন করেছেন। তিন ছেলেকে সরকারি চাকরি দিয়েছেন। সকল সুবিধা বাতিলের পাশাপাশি এসব অনিয়মের জন্য শাস্তি চেয়েছেন তিনি।
এদিকে অভিযুক্ত রুহুল আমিনের মামি বিবি অজুফা খাতুন জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি (রুহুল আমিন) অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন। রুহুল আমিন মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়েই জালিয়াতির মাধ্যমে সনদ নিয়েছেন। তার মামাতো ভাই নুরে আলমও একই অভিযোগ করেছেন।
এদিকে জেলা প্রশাসক গঠিত তদন্ত টিমের সামনে সম্প্রতি নিজের এনআইডি টেম্পারিংয়ের কথা স্বীকার করে ক্ষমা চান অভিযুক্ত রুহুল আমিন।
কোথায়, কখন মুক্তিযুদ্ধ করেছেন তা বলতে না পারলেও অভিযুক্ত রুহুল আমিন জানান, ২০০৬ সালে উপজেলায় এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেয়ার আমন্ত্রণ পেয়েই বনে যান বীর মুক্তিযোদ্ধা। আবদুর রব নামে এক মুক্তিযোদ্ধা তাকে জানিয়েছেন তার মুক্তিযোদ্ধা সনদ আছে। আর মুক্তিযুদ্ধের সনদের সপক্ষে কাগজপত্রের পরিবর্তে চারজন সাক্ষী হাজিরের সুযোগ চান তদন্ত কমিটির কাছে।
নামের মিল থাকা অন্যের গেজেট দিয়ে সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ অবৈধ উল্লেখ করে অভিযুক্ত রুহুল আমিনের সরকারি সম্মানী ভাতা বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছেন সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন।
তদন্তের মাধ্যমে অভিযোগের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. তৌফিক-ই লাহী চৌধুরী।
তদন্ত দলের প্রধান সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, শিগগিরই তদন্তকাজ শেষ করা হবে।
Posted ৪:৪৫ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৯ জানুয়ারি ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin