নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট
রাশিয়া থেকে পালিয়ে আসা সাবেক রাশিয়ান সামরিক কর্মকর্তা কনস্ট্যান্টিন ইয়েফ্রেমভ দাবি করেছেন, ইউক্রেনীয় পুরুষদের বন্দি অবস্থায় নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন করা হয়। রাশিয়ান সৈন্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি করে এবং ধর্ষণের হুমকি দেয়। রাশিয়ান বিবিসি নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব জানিয়েছেন।
২০২২ সালের এপ্রিলে ইয়েফ্রেমভের দল ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া ওব্লাস্টের কামিয়ানকা গ্রামে একটি দূরবর্তী সদর দপ্তরের পাহারার দায়িত্বে ছিল। একজন কর্নেল সেখানে ইউক্রেনীয় বন্দিদের জিজ্ঞাসাবাদের দায়িত্বে ছিলেন। ইয়েফ্রেমভ সেখানকার কয়েকটি নির্যাতনের ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।
তিনজন ইউক্রেনীয় সামরিক বন্দিকে একদিন সেখানে আনা হয়। তাদের একজন স্বীকার করে যে তিনি একজন স্নাইপার ছিলেন। এতে ওই কর্নেলের চোখ জ্বলে ওঠে এবং তাকে মারধর করেন। কর্নেল তার প্যান্ট নামিয়ে দেন এবং বলেন, তাকে মেয়েদের পোশাক পরিয়ে ভিডিও তৈরি করে তার স্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে।
কর্নেল একজন বন্দিকে তার রেজিমেন্ট ও প্লাটুনে পরিচিত সকল জাতীয়তাবাদীদের নাম বলতে বলেছিলেন। ওই লোক প্রশ্নটি বুঝতে না পেরে বলেছিলেন, ‘আমরা ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর মেরিন।’ এরপর কর্নেল তাকে মারধর করেন এবং তার কয়েকটি দাঁত উপড়ে ফেলেন।
ইয়েফ্রেমভ জানিয়েছেন, এই জিজ্ঞাসাবাদ এবং নির্যাতন এক সপ্তাহ ধরে চলত। প্রতি দিন বা রাতে। আবার কখনো কখনো দিনে দুইবার। এ ছাড়া বন্দিদের একটি গ্যারেজে রাখা হতো। কর্নেল তাদের স্বাভাবিক খাবার খাওয়াতেও নিষেধ করেছিলেন। তাদের শুধু পানি এবং শক্ত ও শুকনা বিস্কুট দেওয়ার অনুমতি ছিল।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় কর্নেল একবার এক বন্দির হাড় অক্ষত রেখে তার হাতে গুলি করেছিলেন। পরে তার ডান পায়ে গুলি করেছিলেন এবং এতে তার হাড় ভেঙে যায়।
বিবিসি উল্লেখ করেছে, ইয়েফ্রেমভ যা যা বলেছেন তার সত্যতা বিবিসি নিশ্চিত করতে পারেনি। এর পরও এটা বিশ্বাসযোগ্য, কারণ তার এই বক্তব্য ইউক্রেনীয় বন্দিদের নির্যাতন সম্পর্কে অন্য বিবরণের সঙ্গে মিলে যায়।
সিনিয়র লেফটেন্যান্ট ইয়েফ্রেমভ চেচনিয়ায় সদর দপ্তরসহ ৪২তম গার্ডস মোটর রাইফেল ডিভিশনের মাইন ক্লিয়ারেন্স প্লাটুনের একজন কমান্ডার ছিলেন। তিনি বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসনের আগে গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি ক্রিমিয়ার ঝানকোইতে পৌঁছেছিলেন।
তার দাবি, যুদ্ধের প্রথম দিনেই বুঝতে পেরেছিলেন তিনি যুদ্ধ করতে চান না। পরে তিনি চাকরি ছাড়ার চেষ্টা করলে প্রথমে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়। তাকে কাপুরুষ এবং বিশ্বাসঘাতক বলেও অভিহিত করা হয়। চাকরি ছাড়লে তাকে কারাগারের পাঠানো হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। অবশেষে তারা ইয়েফ্রেমভকে বরখাস্ত করে এবং তিনি রাশিয়া ত্যাগ করেন।
সূত্র : ইউক্রেনীয় প্রাভদা
Posted ১১:৫২ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin