নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলায় স্বামী-সন্তানের খোঁজে এসে এক নারী গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- বিল্লাল হোসেন, আল আমিন হোসেন, মো. সবুজ, মো. রাসেল ওরফে মোল্লা রাসেল ও শফিকুল ইসলাম।
সোমবার নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) এইচএম আজিমুল হক।
তিনি বলেন, গত ২৫ জানুয়ারি ভুক্তভোগী নারী দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের একটি জেলা থেকে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করার জন্য মোহাম্মদপুরেরর বসিলায় আসেন। বসিলা এলাকার এক বাসায় ভুক্তভোগী তার স্বামী-সন্তানসহ থাকতেন। আনুমানিক ৪ মাস আগে শারীরিক অসুস্থতার জন্য সন্তানদের স্বামীর কাছে রেখে ভুক্তভোগী গ্রামের বাড়িতে চলে যান। এরপর স্বামী তাকে ডিভোর্স দেন।
ঘটনার দিন বিকেলে ভুক্তভোগী নারী তার আগের বাসায় এসে স্বামী-সন্তানকে না পেয়ে আশপাশে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। বাড়ির মালিক ও পাশের ভাড়াটিয়ারা তার স্বামী-সন্তানদের কোনো ঠিকানা দিতে পারেনি। তিনি রাত ৯টা পর্যন্ত বছিলা সিটি হাউজিং, ফিউচার হাউজিং, গার্ডেন সিটি হাউজিং, স্বপ্নধরা হাউজিংয়ের আশপাশে খোঁজাখুঁজি করেন। পরে সন্তানদের সন্ধান না পেয়ে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে বছিলা ৪০ ফিট তিনরাস্তার মোড় থেকে ভুক্তভোগী একটি রিকশা ভাড়া করেন। কিন্তু রিকশাচালক ভুক্তভোগীকে গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে না নিয়ে ঢাকা উদ্যান ও বসিলার বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরাতে থাকে ও ভুক্তভোগীকে তার স্বামীর বাসা খুঁজে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বিভিন্নজনের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে।
ডিসি আজিমুল বলেন, রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে অজ্ঞাত রিকশাচালক পরিকল্পনা অনুযায়ী ভুক্তভোগীকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে বসিলা ফিউচার টাউন রোডের শেষ মাথায় একটি অস্থায়ী শ্রমিকদের টিনের ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে ঐ নারীকে পাঁচজন পালাক্রমে ধর্ষণ করে ও দুইজন পাহারা দেয়। পরে ঐ নারীর চিৎকারে কর্তব্যরত নিরাপত্তার রক্ষী ও লোকজন ছুটে এলে আসামিরা পালিয়ে যায়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয় এবং প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন।
তিনি আরো বলেন, মামলার পর আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ৭ ব্যক্তি ও ৩টি রিক্সার উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়। প্রযুক্তির সহায়তা ও বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে মোহাম্মদপুর থানার চাঁদ উদ্যান এলাকা থেকে ভুক্তভোগীর মোবাইলটি উদ্ধার কএবং শাহিন খান নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। পরে এ ঘটনায় সরাসরি জড়িত আসামি বিল্লাল হোসেনকে গাবতলী থেকে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকার ডেমরা থেকে আরেক আসামি আল আমিন হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। বসিলা থেকে মো. সবুজ ও রাসেল ওরফে মোল্লা রাসেলকে গ্রেফতার করা হয় এবং ভোলার তজুমদ্দিন থেকে শফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের হেফাজতে থাকা দুটি রিকশা উদ্ধার করা হয়। আরো দুই আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মৃত্যুঞ্জয় দে সজল, সহকারী কমিশনার দেবাশীষ কর্মকার, মোহাম্মদপুর থানার ওসি মো আবুল কালাম আজাদ, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান, পরিদর্শক (অপারেশন) তোফাজ্জল হোসেন প্রমুখ।
Posted ৮:১৫ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin