
নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা হিমবাহগুলো ব্যাপকহারে গলে যাচ্ছে। ফলে নির্গত হওয়া পানি জমে তৈরি হচ্ছে এক ধরনের হিমবাহ হ্রদ বা গ্লেসিয়াল লেক। বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, এ হারে হিমবাহ গলতে থাকলে যেকোনো সময় এসব হ্রদের পানি উপচে গিয়ে তৈরি হতে পারে ইনল্যান্ড বা ভূভাগীয় সুনামি। যাতে সরাসরি ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বিশ্বের অন্তত দেড় কোটি মানুষ।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) নেচার কমিউনিকেশন জার্নালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব গ্লেসিয়াল লেকের পানির স্তরের উচ্চতা ক্রমেই বাড়ছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বাড়তে থাকা এ পানির স্তর ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনতে পারে। পানির পরিমাণ বেশি হয়ে গেলে এসব লেকের পানি প্রবল বেগে নিচের দিকে ছুটে যেতে পারে এবং যাওয়ার পথে বিপুল পরিমাণ ধ্বংসস্তূপ বয়ে নিয়ে যেতে পারে, যা আরও নিচের অববাহিকায় অবস্থিত এলাকাগুলোকে ক্ষতির মুখে ফেলবে।
গবেষকরা পুরো বিষয়টিকে বলছেন ‘গ্লেসিয়াল লেক আউটবার্স্ট’। তারা সতর্ক করে বলেছেন, এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে ভারত, পাকিস্তান, চীন এবং পেরুর প্রায় দেড় কোটি মানুষ সরাসরি ক্ষতির মুখে পড়বে। বিশেষ করে এসব লেকের ৩০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে থাকা লোকজনের ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা বেশি হবে অন্যদের তুলনায়।
গবেষণার সহ-লেখক এবং নিউজিল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ক্যান্টারবুরির সিনিয়র লেকচারার টম রবিনসন বলেছেন, গ্লেসিয়াল লেকের এ আউটবার্স্ট অনেকটা ‘ভূভাগীয় সুনামি’ তৈরি করতে পারে। তিনি বিষয়টিকে প্রচুর পানি জমে থাকা হ্রদের ড্যাম বিপর্যয়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে টম রবিনসন বলেছেন, ‘হিমবাহের তৈরি প্রাকৃতিক বাঁধগুলো নির্মিত বাঁধের থেকে খুব বেশি আলাদা নয়। আপনি যদি উদাহরণ হিসেবে হুভার ড্যামের কথাই বিবেচনায় নেন, আপনি দেখবেন যে, এর পেছনে একটি বিশাল হ্রদ রয়েছে। কিন্তু আপনি যদি হঠাৎ বাঁধটি সরিয়ে দেন, তবে সেই হ্রদে জমে থাকা পানিকে কোথাও না কোথাও যেতে হবে এবং যাওয়ার পথে এটি এক বিশাল জলপ্রপাত হয়ে নিচের উপত্যকায় নেমে আসবে।’
গ্লেসিয়াল আউটবার্স্টের প্রভাব নিয়ে এটিই প্রথম কোনো গবেষণা। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ গবেষণার ফলাফলকে কোনোভাবেই উড়িয়ে দেয়ার সুযোগ নেই।
Posted ৪:৩৯ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin