শনিবার ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সৈকতের শহরে রাতের বিনোদন বাণিজ্য মেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বুধবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট

সৈকতের শহরে রাতের বিনোদন বাণিজ্য মেলা

পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত, পাহাড়িঝর্ণা, সমুদ্রের নীলাজল,ইট পাথরের অট্রালিকা, পিচঢালা নান্দনিক মেরিন ড্রাইভ সড়ক, অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, অসংখ্য প্রাচীন বৌদ্ধমূর্তি, হাজার বছরের পূরনো দেবাদিদেব মহাদেবের পুন্যভূমি মৈনাক পর্বত চূড়ায় অবস্থিত আদিনাথ মন্দির, প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন, পাথুরে বীচ ইনানী,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারীপার্কসহ অসংখ্য পর্যটন বিনোদন কেন্দ্র দেশি-বিদেশি পর্যটকের বিমোহিত করছে। কী নেই এখানে? এসব কিছু দেখতে ও প্রকৃতিকে কাছে থেকে উপভোগ করতে অবিরাম ছুটে আসছেন কক্সবাজারে দৈনন্দিন লাখো পর্যটক। কেউ দলবেঁধে, কেউ একা আবার কেউ এসেছেন পরিবার নিয়ে।

তারপর ও রাতের কক্সবাজার থাকে নীরব নিস্তব্ধ। হোটেলের চার দেয়ালে আবদ্ধ থাকতে হয় পর্যটকদের। সেই নিস্তব্ধতার গ্যাড়াকল থেকে পর্যটকদের আনাগোনায় মুখরিত করতে প্রতিবছর প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় চেম্বার অফ কমার্সসহ একাধিক সংগঠন মিলে আয়োজনের মাধ্যমে পুরো মৌসুমজুড়ে চলে শিল্প ও বাণিজ্য মেলা। রাতের কক্সবাজারকে আলোকিত করে পর্যটকসহ স্থানীয়দের বাড়তি বিনোদনের একমাত্র ঠিকানা হয়ে উঠেছে এই মেলা।

কক্সবাজার শিল্প ও বাণিজ্য মেলা স্থানীয় ভ্রমণপিয়াসী ও আসা পর্যটকদের রাতের বিনোদনের খোরাক জোগাচ্ছে। সৈকতের লাবণী পয়েন্টে ঝাউবাগান ঘেরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম সংলগ্ন পর্যটন গলফ মাঠে চলমান শিল্প ও বাণিজ্য মেলায় গভীর রাত পর্যন্ত কেনাকাটাসহ নানা বিনোদনে নারী-পুরুষ ও শিশুদের উচ্ছ্বাসে মুখরিত থাকে মেলাঙ্গন।

ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে কক্সবাজারে এসেছেন শিমুল মুখার্জি। সারাদিন বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘুরে ও তাদের মন ভরেনি। সন্ধ্যার পর সবাইকে নিয়ে ছুটে আসেন মেলায়। শিমুল বলেন, এটা-সেটা কেনাকাটা, বিভিন্ন রাইডে চড়া, খাওয়ার মধ্যে কখন যে তিন ঘণ্টা কেটে গেলো বুঝতেই পারিনি।

মেলায় আসা শিক্ষার্থী তোসার অনি, মুক্তা সানি রাহেলা, রিয়াজ ও কুসুম বলেন, নৌকা, দোলনা, নাগরদোলা, ফাইভার ইলেকট্রিক চর্কি ও মিনি হাতি-ঘোড়ায় চড়ে প্রচুর আনন্দ পেয়েছি। দেখেছি জাদু প্রদর্শনীও।

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রি, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখি প্রবেশ মুখেই স্থাপন করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন পানির ফোয়ারা। রয়েছে আলোকসজ্জাসহ সুউচ্চ টাওয়ার। বসানো হয়েছে ফায়ার ইউনিটি ও মেডিকেল টিম। ধুলা-বালি কমাতে পুরো মাঠে ইট বিছানোর পাশাপাশি আলোকসজ্জায় ঝলমলে করা হয়েছে চারপাশ। গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায়।

মেলা আয়োজক কমিটির কো-চেয়ারম্যান শাহেদ আলী সাহেদ বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও মেলাটি ব্যতিক্রম ও জাঁকজমকপূর্ণভাবে সাজানো হয়েছে। রয়েছে বিনোদনের বিভিন্ন ব্যবস্থা। মেলায় বসেছে শতাধিক স্টল ও একাধিক মুখরোচক খাবারের দোকান। মেলায় অংশ নেয়া প্যাভিলিয়ন ও সাধারণ স্টলগুলোতে প্রসিদ্ধ গার্মেন্টস, হোমটেক্স, ফেব্রিকস পণ্য, হস্তশিল্পজাত, পাটজাত, গৃহস্থালি ও উপহারসামগ্রী, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, তৈজসপত্র, সিরামিক, প্লাস্টক, পলিমার পণ্য, কসমেটিকস হারবাল ও প্রসাধনী সামগ্রী, খাদ্য ও খাদ্যজাত পণ্য, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী, ইমিটেশন ও জুয়েলারি ও ফার্নিচারের সমাহার। মেলায় দেশীয় ব্র্যান্ড প্রাণ-আরএফএল, এসিআই, দেশি-বিদেশি কার্পেট, জামদানি ও রাজশাহী সিল্ক শাড়ির প্যাভিলিয়নও রয়েছে।

কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল মোটেল এসোশিয়েসনের সভাপতি মুখিমখান বলেন, পর্যটনে রাতের বিনোদনে স্থায়ী কিছু এখনো গড়ে ওঠেনি। কিন্তু গত দুই মাস ধরে বাণিজ্য মেলাটিই রাতে পর্যটক ও স্থানীয় দর্শনার্থীদের বিনোদন অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে খুশি পরিবারসহ বেড়াতে আসা দূর-দূরান্তের পর্যটকরাও।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম বলেন, মেলার সিসি ক্যামেরা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছে দায়িত্বরত পুলিশ। ইভটিজিংসহ যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে সচেষ্ট রয়েছে পুলিশের বিশেষ টিম। মেলায় স্থানীয় ছাড়াও বিদেশি ক্রেতা ও পর্যটক অংশ নিচ্ছেন, এটা আনন্দের। পর্যটকদের পাশাপাশি আনন্দিত স্থানীয়রাও।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৪:০৯ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]