শুক্রবার ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অন্য রকম বিবাহবার্ষিকী

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট

অন্য রকম বিবাহবার্ষিকী

অন্য রকমভাবে বিবাহবার্ষিকী পালন করলেন শরীয়তপুরের জাজিরার এক দম্পতি। এক গরীব ও অসহায় পরিবারের মেয়েকে বিয়ে দিয়ে সেই ভালোবাসা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন তারা। রোববার রাত থেকে এমন বিয়ের কয়েকটি ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেখা যাচ্ছে।

গত শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার সেনেরচর ইউনিয়নের ফরাজী কান্দি গ্রামের ফরাজী বাড়িতে ধুমধাম করে এ বিয়ের আয়োজন করা হয়। আর এর আগেরদিন বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে ছিল গায়ে হলুদ। বিয়ের আয়োজনটি করেন ফরাজী কান্দি গ্রামের ডা. আনোয়ার ফরাজী ইমন ও রিফাত জাহান সেতু দম্পতি।

গ্রামবাসী জানায়, ইমন ও সেতু দম্পতি তাদের বিবাহবার্ষিকীতে একজন গরীব ও অসহায় পরিবারের মেয়েকে বড় আয়োজন করে বিয়ে দিয়ে থাকেন। গত তিন বছর যাবত তারা এমন ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিচ্ছেন।

বিবাহবার্ষিকীতে অনেকে তার প্রিয়জনকে নামি-দামি উপহার দিয়ে থাকেন। আর ওই দম্পত্তির চিন্তা একটু ব্যতিক্রম। বিশেষ দিনটাতে গরীব ও অসহায় পরিবারের জন্য কিছু করার চেষ্টা করেন তারা। তাই যেমন ভাবনা, তেমন কাজ। গত শুক্রবার তারা রংপুর জেলার কেশবপুর এলাকার দিনমজুর শাহিদার রহমান শাহিদের মেয়ে শারমিন নাহারের বিয়ে দেন। তবে শারমিনের পরিবার দীর্ঘদিন যাবত শরীয়তপুরের ফরাজী কান্দি গ্রামে কাজের সুবাদে ভাড়া থাকেন। আর বরের নাম শাহিন মিয়া। তিনি শ্রমিকের কাজ করেন। তিনি মাদারীপুর জেলার শিবচর এলাকার জলিল মিয়ার ছেলে। বিয়ের দিন বরযাত্রীসহ ৫০০ মানুষকে দাওয়াত করে ভিআইপিভাবে খাওয়ানো হয়। কনের পছন্দমতে বিয়ের শাড়ি, গহনাসহ যাবতীয় খরচ বহন করেন ইমন ও সেতু দম্পতি।

শারমিনের বাবা শাহিদার রহমান শাহিদ বলেন, আমি দিনমজুরের কাজ করি। আমার তিন মেয়ে এক ছেলে। মেয়ে বিয়ে দিতে অনেক খরচ। এত টাকা খরচ করে আমার মেয়েকে বিয়ে দেওয়া কখনই সম্ভব হতো না। তারা আমার মেয়েকে বড় আয়োজন করে বিয়ে দিয়েছেন। আমি খুবই আনন্দিত। তাদের জন্য প্রাণ খুলে দোয়া করি।

রিফাত জাহান সেতু বলেন, গত তিন বছর যাবত আমরা বিবাহবার্ষিকীতে এমন আয়েজন করি। নিজেদের পরিবারের মেয়ে মনে করে তিনটি গরীব অসহায় মেয়ে বিয়ে দিয়েছি। তাদের বিয়ের সব খরচ বহন করেছি। তাদের শখ ও ইচ্ছা পূরণ করতে চেষ্টা করেছি। তাদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়েছি। এটা অন্যরকম তৃপ্তি।

ডা. আনেয়ার ফরাজি ইমন বলেন, বিবাহবার্ষিকীতে নিজেরা আনন্দ উল্লাস না করে সেই খরচে একটি গরীব অসহায় পরিবারের মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেই। এটাই আমাদের আনন্দ। তিনি বলেন, সমাজে অনেক প্রতিষ্ঠিত মানুষ আছেন তারা যদি তাদের বিবাহবার্ষিকীতে একটা অসহায় পরিবারের মেয়েকে বিয়ে দেন। তাহলে আমার মনে হয় অসহায় পরিবার তাদের মেয়েকে নিয়ে আর চিন্তা থাকবে না। আমি যেহেতু ফরাজি হসপিটাল, ফরাজি ডেন্টাল হসপিটালের চেয়ারম্যান হিসেবে আছি। ওই গরীব অসহায় মেয়েগুলো বা তাদের স্বামীরা যদি কোনো কাজ করতে চান, তাহলে আমার প্রতিষ্ঠানে তাদের কাজের সুযোগ করে দেবো।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৩:২২ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]