বৃহস্পতিবার ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

রাশিয়াকে জানিয়েই ইউক্রেনে গেছেন বাইডেন

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট

রাশিয়াকে জানিয়েই ইউক্রেনে গেছেন বাইডেন

সোমবার সকালে অত্যন্ত গোপনীয়তা বজায় রেখে এবং সবার নজর এড়িয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে ঝটিকা সফরে যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইউক্রেন যুদ্ধের বছরপূর্তির আগমুহূর্তে মার্কিন প্রেসিডেন্টের আকিস্মিক এই সফর বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।

বাইডেনের এই সফরের কথা নাকি কাকপক্ষীতেও টের পায়নি! প্রশ্ন উঠছে আধুনিক এ জমানায় কীভাবে সবার নজর এড়িয়ে জেলেনস্কির দেশে প্রবেশ করলেন বাইডেন?

তবে বিষয়টি খোলাসা করেছে হোয়াইট হাউস। যুক্তরাষ্ট্র জানায়, অনাকাঙিক্ষত দুর্ঘটনা এড়াতে বাইডেনের কিয়েভ সফরের কয়েক ঘণ্টা আগে তা জানানো হয়েছে রাশিয়াকে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মূলত বাইডেন কিয়েভে যাওয়ার পর যেন কোনো ধরনের হামলা বা ভুল বোঝাবুঝি না হয় সেটি নিশ্চিতেই রাশিয়াকে বিষয়টি জানানো হয় বলে জানিয়েছেন সুলিভান।

তিনি বলেছেন, ‘আমরা রাশিয়াকে অবহিত করি প্রেসিডেন্ট কিয়েভে যাবেন। দ্বন্দ্ব পরিহারের উদ্দেশ্যে আমরা এ ব্যাপারে তাদের জানিয়েছিলাম। তবে তাদের সঙ্গে কী কথা হয়েছে বা তারা কি জবাব দিয়েছে এ বিষয়টি আমি প্রকাশ করতে পারব না। কারণ বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। তবে আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, প্রেসিডেন্টের সফরের বিষয়ে রাশিয়াকে অবহিত করা হয়েছিল।’

এদিকে জো বাইডেনের এ সফরকে ‘অভাবনীয়’ হিসেবে উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দপ্তর হোয়াইট হাউজ।

তারা বলেছে, যখন আফগানিস্তান ও ইরাকে যুদ্ধ চলছিল তখনও তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্টরা যুদ্ধবিধ্বস্ত সেসব দেশে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের সফরের সময় ইরাক এবং আফগানিস্তানে অসংখ্য মার্কিন সেনা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু বাইডেনই একমাত্র প্রেসিডেন্ট যিনি যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটি দেশে গিয়েছেন, যেখানে তাদের একজন সেনাও নেই।

জানা গেছে, সোমবার ভোর ৪টার দিকে সবার নজর এড়িয়ে আমেরিকার বিমানবাহিনীর একটি বোয়িং ৭৫৭ বিমানে চড়ে ইউক্রেনের উদ্দেশে রওনা দেন ৮০ বছর বয়সী শীর্ষ ডেমোক্র্যাটিক নেতা৷

তার সঙ্গে ছিলেন দুই নিরাপত্তাকর্মী, চিকিৎসকদের একটি ছোট দল, ঘনিষ্ঠ কয়েকজন উপদেষ্টা এবং দু’জন সাংবাদিক।

বাইডেন যে বিমানে চেপে গিয়েছিলেন তা সি-৩২ নামেও পরিচিত। তুলনামূলকভাবে আয়তনে ছোট বিমানটি সাধারণত আন্তর্জাতিক ভ্রমণে ব্যবহার করা হয়।

সাধারণত যেখান থেকে বাইডেন আন্তর্জাতিক যাত্রার সময় বিমানে চড়েন, সেখান থেকে বেশ খানিকটা দূরে এই বিমান দাঁড় করানো হয়েছিল। যাতে বাইরে থেকে ওই বিমানে বাইডেনের উপস্থিতি কেউ ঘুণাক্ষরেও টের না পান, তার জন্য প্রতিটি জানালার ঝাঁপও ফেলে দেওয়া হয়েছিল।

বাইডেন সাধারণত যখন বিদেশ সফরে যান, তখন সঙ্গে রেডিও, টেলিভিশন, খবরের কাগজ মিলিয়ে অন্ততপক্ষে ১৩ জন সাংবাদিকের একটি দল সঙ্গে যায়।

কিন্তু সোমবার কিয়েভ সফরে একজন চিত্রগ্রাহক এবং একজন সাংবাদিক ছাড়া কাউকে নিয়ে যাওয়া হয়নি।

বাইডেনের সঙ্গে সফরে থাকা সাংবাদিক সাবরিনা সিদ্দিকী জানিয়েছেন, তাকে এবং একজন চিত্রগ্রাহককে রোববার রাতেই ডেকে পাঠানো হয়েছিল।

তারা যেতে সম্মতি প্রকাশ করার পর তাদের ফোন জব্দ করে নেয়া হয়। জানিয়ে দেওয়া হয়, প্রেসিডেন্ট যতক্ষণ না ফিরে আসছেন, ততক্ষণ তারা ফোন পাবেন না।

প্রথমে প্রেসিডেন্ট বাইডেনসহ বাকিদের নিয়ে ওয়াশিংটন থেকে জার্মানির রামস্টেইনে উদ্দেশে রওনা দেয় বিমান। সেখান থেকে প্রসিডেন্টকে নিয়ে যাওয়া হয় পোল্যান্ড।

বিমানটি অবতরণ করে পোল্যান্ডের রজেসজো-জাসিওনকা বিমানবন্দরে। সেখান থেকে একটি এসএইভি গাড়িতে আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেই গাড়ি ছিল কালো কাচে ঢাকা এবং তাতে কোনও সাইরেন ব্যবহার করা হয়নি।

সাবরিনা জানিয়েছেন, ট্রেনেও তাদের প্রেসিডেন্টের দিকে তাকাতে বারণ করা হয়েছিল। এর পর ১০ ঘণ্টার সফর শেষে ইউক্রেনে পৌঁছান বাইডেন। দেখা করেন সেদেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে।

আকস্মিক এ সফরে গিয়ে বাইডেন ইউক্রেনের জন্য আরো ৫০০ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তার কথা ঘোষণা করেন।

সূত্র: রয়টার্স

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৭:১৮ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(205 বার পঠিত)
(190 বার পঠিত)
advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]