মঙ্গলবার ২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবার নোয়াখালীতে তুলার পরীক্ষামূলক চাষ, সফল নোবিপ্রবি শিক্ষার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট

এবার নোয়াখালীতে তুলার পরীক্ষামূলক চাষ, সফল নোবিপ্রবি শিক্ষার্থী

অর্থকরী ফসল তুলা, সাদা সোনা হিসেবে এর পরিচিত বিশ্বব্যাপী। তুলার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ঐতিহ্য, ইতিহাস, সভ্যতা ও অর্থনীতি। সাধারণত দেশের পাহাড়ি ও খরা মৌসুম এলাকায় তুলা উৎপাদন হয়। তবে এবার দেশের দক্ষিণাঞ্চলেও তুলা চাষে সম্ভাবনা দেখছে তুলা উন্নয়ন বোর্ড। স্নাতকোত্তরের গবেষণার অংশ হিসেবে উপকূলীয় জেলা নোয়াখালীতে পরীক্ষামূলক তুলা চাষ করে সফলতার পেয়েছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষার্থী নূর মোহাম্মদ।

জানা যায়, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত তুলা উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ও বিশ্ববিদ্যালয় কৃষি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান ভূঞার নির্দেশনায় প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন স্নাতকোত্তরের এই শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় রূপালি এবং শুভ্রাসহ মোট ছয় জাতের তুলা চাষে সফলতার মুখ দেখেন তিনি।

নূর মোহাম্মদ জানান, তুলা চাষে দেশের দক্ষিণাঞ্চল হতে পারে একটি সম্ভাবনাময় চাষযোগ্য অঞ্চল। এখানে রবি মৌসুমে অধিকাংশ জমি অনাবাদী থাকে। আর এ মৌসুমও তুলা চাষের জন্য উপযোগী। সঠিক তত্ত্বাবধান এবং দিকনির্দেশনা পেলে এই অঞ্চলের মানুষের জন্য তুলা চাষ হতে পারে একটি সুবর্ণ সুযোগ।

নূর মোহাম্মদকে সার্বিকভাবে তত্ত্বাবধান ও নির্দেশনা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান ভূঞা। তিনি বলেন, তুলা উন্নয়ন বোর্ডের সার্বিক সহযোগিতায় উপকূলীয় অঞ্চলে তুলা চাষ প্রকল্পটিতে আমরা সুন্দরভাবে সফল হয়েছি। আমাদের এই গবেষণার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল লবণাক্ত মাটিতে তুলা চাষ সম্ভব কি-না তা দেখা। দীর্ঘ ৮ মাসের গবেষণায় আমরা দেখেছি এই অঞ্চলের মাটি এবং জলবায়ু তুলা চাষের জন্য উপযোগী।

তুলা উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় তুলা চাষের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এক অঞ্চল। জমিতে লবণাক্ততার কারণেই এ অঞ্চলে ফসলের নিবিড়তা কম।

বাংলাদেশের প্রধান প্রধান ফসলগুলো লবণাক্ততা সংবেদনশীল হওয়ার কারণে অধিকাংশ জমিই রবি মৌসুমে পতিত থাকে। তুলা লবণাক্ত অঞ্চলে জন্মানোর একটি উপযোগী ফসল। বিগত কয়েক বছর ধরে তুলা উন্নয়ন বোর্ড আমন ধান কাটার পর রবি মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলে তুলার উপযোগিতা যাচাইয়ের জন্য অ্যাডাপ্টিভ ট্রায়াল স্থাপন করেছে।

কৃষি বিভাগের শিক্ষার্থীর গবেষণার অংশ হিসেবে পরীক্ষামূলক এই তুলা চাষ পরিদর্শনে এসে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক ড. সীমা কুন্ডু বলেন, তুলা বাংলাদেশের জন্য একটা সম্ভাবনাময় ফসল। কৃষি বিভাগের এই পরীক্ষামূলক চাষ প্রমাণ করে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের আবহাওয়া তুলা চাষের জন্য উপযুক্ত। এখন আমরা এই চাষাবাদকে আরো সম্প্রসারিত করব। কৃষকদের প্রশিক্ষণ এবং পর্যাপ্ত সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা এই সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দান করব।

প্রকল্প পরিচালক আরো বলেন, তুলা চাষ বিভিন্নভাবে চাষিদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আমন ধান কাটার পর দক্ষিণাঞ্চলের ব্যাপক অনাবাদী জমিতে তুলার আবাদ করে বস্ত্রশিল্পের প্রধান কাঁচামাল তুলার আঁশ জোগানোর পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে তুলা উন্নয়ন বোর্ড আগ্রহী। তুলা চাষিদের সব ধরণের সহযোগিতা প্রদান করবে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৬:১৭ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]