নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় উপজেলার কৃষকরা কম খরচে বেশি উৎপাদন ও লাভ হওয়ায় লেবু চাষে ঝুঁকছেন। লেবুর ফলন ও দামে খুশি তারা।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে স্থানীয় বিভিন্ন বাজারে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় প্রতি হালি লেবু ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আখাউড়া পৌরশহরের সড়ক বাজার, খড়মপুর, মোগড়া বাজারে সরেজমিনে গিয়ে এ তথ্য জানা যায়। স্থানীয়রা ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত দুই সপ্তাহের উপর ধরে বাজারে লেবুর সরবরাহ চাহিদার তুলনায় কম। তাই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে লেবুর দাম কমে আসবে।
একাধিক কৃষক জানান, এই এলাকায় সাধারণত পাঁচ জাতের লেবু চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে- কাগজি লেবু, পাতি লেবু, এলাচি লেবু, বাতাবি লেবু ও নতুন জাতের হাইব্রিড সিডলেস লেবু। কাগজি লেবু ছোট আকৃতির হয়, এর চাহিদাও ভালো। এছাড়া অন্যান্য লেবুর চাহিদাও ভালো। লেবু চাষে তুলনামূলক পানি সেচ তেমন একটা লাগে না। সারসহ পরিচর্যা ও শ্রমিক খরচ খুবই কম হওয়ায় দিনদিন বাড়ছে লেবুর চাষ। ভালো দামও পাচ্ছেন কৃষকরা।
কৃষি কর্মকর্তা ও চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ সাইট্রিক অ্যাসিড, অ্যাসকরবিক অ্যাসিড, ভিটামিন ‘সি’। এছাড়া লেবুর পানি দেহে প্রয়োজনীয় এনজাইম তৈরি করে। লেবু উচ্চ রক্তচাপ হ্রাস করে, ওজন কমায়, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, মাথাব্যথা আর ক্লান্তি দূর করে। একইসঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ ঠান্ডা-কাশি প্রতিরোধে সাহায্য করে।
এছাড়া লেবুর খোসায়ও রয়েছে ভিটামিন ‘সি’। লেবুর খোসার ভেতরে আরো রয়েছে ক্যালসিয়াম, ফাইবার, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং বিটা ক্যারোটিন। ১০০ গ্রাম লেবুর খোসায় ১৩৪ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১৬০ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম, ১২৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’ এবং ১০ দশমিক ছয় গ্রাম ফাইবার রয়েছে।
উপজেলার আজমপুর এলাকার লেবু চাষি আতাউর রহমান জানান, সিডলেস ও দেশীয় জাতের লেবু এক বিঘা জমিতে আবাদ করেছেন। প্রায় সারাবছরই তিনি লেবু বিক্রি করেন। বাজারে দাম ভালো থাকায় এখন তিনি দৈনিক চার হাজার টাকার লেবু বিক্রি করতে পারছেন।
তিনি আরো জানান, লেবু বাজারে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে হয় না। বিভিন্ন জায়গার পাইকাররা তার বাগান থেকে লেবু কিনে নিয়ে যান। লেবুর ভালো দাম পাওয়ায় তিনি খুবই খুশি।
কৃষক মো. জামশেদ মিয়া জানান, বাড়িসংলগ্ন পতিত জমিতে সিডলেস ও দেশীয় জাতের লেবু চাষ করেছেন তিনি। একদিন পরপর তিনি দুই হাজার টাকার লেবু বিক্রি করতে পারছেন।
আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে লেবু চাষিদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া লেবু চাষের কলাকৌশল সম্পর্কে চাষিদের হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
Posted ৬:৩৫ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin