মঙ্গলবার ২৮শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট

নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে হবে

জীবাশ্ম জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি ও সংকটের বিরূপ প্রভাব থেকে রক্ষায় নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে মনোযোগ দেয়ার বিকল্প নেই। যদিও সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। বাসাবাড়িতে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারে (সোলার হোম সিস্টেম) বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। দেশের মোট জনসংখ্যার ৮ শতাংশ মানুষ বাসাবাড়িতে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করায় বৈশ্বিক নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে গেস্নাবাল স্ট্যাটাস রিপোর্টে (জিএসআর) বাংলাদেশ মঙ্গোলিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। আর মোট জনসংখ্যার ১১ শতাংশ মানুষ বাসাবাড়িতে সৌরবিদ্যুৎ বা সোলার হোম সিস্টেম ব্যবহার করে নেপাল এ তালিকায় প্রথম। দেশে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপন সহজ করতে ও ব্যবহার বাড়াতে সম্প্রতি বিদ্যুৎ বিভাগ এবং ইন্টারন্যাশনাল সোলার অ্যালায়েন্সের (আইএসএ) মধ্যে একটি সিপিএ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষে যুগ্ম সচিব (নবায়নযোগ্য জ্বালানি) নিরোদ চন্দ্র মন্ডল এবং আইএসএর পক্ষে রমেশ কুমার কুরুপ্পাথ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তিটির মেয়াদ ২০২৬ সাল পর্যন্ত। এ চুক্তির ফলে সৌরশক্তি নির্ভর বিভিন্ন প্রকল্প প্রণয়ন এবং সেগুলোর জন্য বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা সহজ হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এই চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে দু’পক্ষের মধ্যে সমঝোতা আরও দৃঢ় হবে এবং সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে সৌরশক্তির বিস্তারে আমরা উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হবো। সারা বিশ্বে সৌরশক্তির ব্যবহার খুব দ্রুত প্রাধান্য লাভ করছে এবং এর দাম প্রতিনিয়ত কমছে। বাংলাদেশ সৌরপ্রযুক্তি, বিশেষ করে রুফটপ সোলার প্রযুক্তির বিকাশে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে। রেগুলেটরি সহায়তার মাধ্যমে সৌরবিদ্যুতে বিনিয়োগ ত্বরান্বিত করা যেতে পারে। বাসাবাড়িতে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারে শীর্ষ ছয়টি দেশকে তালিকায় আনা হয়েছে। এখানে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। বাংলাদেশে সেচের কাজেও সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে। এর আগে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় দেশের প্রথম বেসরকারি রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল কোরিয়ান ইপিজেডের কারখানা ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে। এটি ছাদে স্থাপিত দেশের সবচেয়ে বড় সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প। আমরা মনে করি আমাদের সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন ও ব্যবহারের দিকে অগ্রসর হতে হবে। কারণ এখানে খরচ কম। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ৪০-এর ওপর অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তেমন সুফল আসেনি। এ পরিস্থিতিতে সরকারি ব্যবস্থাপনায় সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। তবে বাংলাদেশে সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র করার কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো জমির স্বল্পতা। সে কারণে সৌরবিদ্যুতের সঙ্গে কৃষি ও খামার কীভাবে করা যায় তা ভাবা হচ্ছে। এই সীমাবদ্ধতা দূর করতে হবে। বিশেষ করে খারাপ মানের সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার বাংলাদেশে টেকসই নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রসার না হওয়ার পেছনে কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, ২০৪১ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুতের ৪০ শতাংশ আসবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে। এজন্য সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সবাইকে উৎসাহ দিচ্ছে। আশার কথা হচ্ছে, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের চেয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুতে খরচ কম। সুতরাং উচ্চ খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকে অধিক মনোযোগী না হয়ে সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল বসানোর মাধ্যমে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর দিকে আমাদের গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৬:৫৬ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ajkerograbani.com |

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]