শনিবার ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কীটপতঙ্গ খেয়ে জঙ্গলে যেভাবে ৩১ দিন বেঁচে রইলেন যুবক

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বৃহস্পতিবার, ০২ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট

কীটপতঙ্গ খেয়ে জঙ্গলে যেভাবে ৩১ দিন বেঁচে রইলেন যুবক

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ বলিভিয়ার বাসিন্দা ৩০ বছর বয়সী জোনাথন অ্যাকোস্তা শিকার করতে ভালোবাসেন। শিকারের নেশায় ছুটে বেড়ান বনে–জঙ্গলে। শিকারি বন্ধুও জুটিয়েছেন। সেই বন্ধুদের মধ্যে চারজনসহ আমাজনের উত্তর বলিভিয়া অংশে শিকারে বেরিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু জঙ্গলে শিকার করতে করতে হন দলছুট। এরপর এক মাসের বেশি সময় নিখোঁজ ছিলেন।

নিখোঁজের ৩১ দিন পর সম্প্রতি জোনাথনকে উদ্ধার করেছেন তার বন্ধু ও স্থানীয় কিছু মানুষ। দীর্ঘ এই সময় জঙ্গলে কীভাবে ছিলেন, তার বর্ণনা দিয়েছেন তিনি।

জোনাথন বলেন, নিজের জুতায় বৃষ্টির পানি ধরে রেখে সেই পানি পান করেছেন। খেয়েছেন কীটপতঙ্গ। আর জঙ্গলে জন্তু–জানোয়ারের ভয়ে থাকতে হতো তটস্থ।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে জোনাথন বলেন, ‘এটা অবিশ্বাস্য। বিশ্বাস করিনি, মানুষজন আমাকে এত দিন ধরে জঙ্গলে খুঁজবে। আমি কেঁচো খেয়েছি, কীটপতঙ্গ খেয়েছি, বুনো ফল খেয়েছি। বিশ্বাস করবেন না, শুধু বেঁচে থাকার জন্যই এসব করতে হয়েছে। সৃষ্টিকর্তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, কারণ তিনি আমাকে নতুন জীবন দিয়েছেন।’

জোনাথনের পরিবার বলছে, কীভাবে জঙ্গলে বন্ধুদের কাছ থেকে নিখোঁজ হলেন, কীভাবে এত দিন তিনি বেঁচে ছিলেন—এসব বিষয় নিয়ে এখনো কিছু জানতে পারেনি তারা। ধীরে ধীরে জোনাথনকে এসব জিজ্ঞাসা করা হবে। এখনো এসব বিষয়ে কথাই হয়নি। কারণ, ভয়াবহ এই অভিজ্ঞতার পরে তিনি মানসিকভাবে মুষড়ে পড়েছেন।

জঙ্গলে থেকে ৩১ দিনে জোনাথনের ওজন কমেছে ১৭ কেজি। এক পায়ের গোড়ালিতে বড় আঘাত পাওয়ায় ওই পায়ে ভর দিয়ে চলাচল করতে পারছেন না। আর জোনাথনকে খোঁজার জন্য স্থানীয় লোকজন নিয়ে তার বন্ধুরা যে তল্লাশি দলটি গঠন করেছিলেন, তারা যখন জঙ্গলে জোনাথনকে খুঁজে পান, তখন তিনি খুঁড়িয়ে হাঁটছিলেন।

জোনাথনের ভাই হোরাসিও অ্যাকোস্তা বলেন, ‘আমার ভাই আমাদের বলেছে, নিখোঁজ হওয়ার চতুর্থ দিনে যখন তিনি পায়ের গোড়ালিতে আঘাত পান, তখন তার মনে মৃত্যুর ভয় ঢুকে যায়। তার শর্টগানে তখন একটি গুলি ছিল। হাঁটতে পারছিলেন না। তখন তিনি ভাবতে শুরু করেন কেউ হয়তো এখন আর তার খোঁজ করছেন না।’

জোনাথন আরো বলেন, দলছুট হওয়ার পর জঙ্গলে যখন তিনি একা একা ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন, তখন জাগুয়ার ছাড়াও আরো অনেক বন্য প্রাণীর মুখে পড়েছিলেন।

তিনি বলেন, তখন তিনি তার শর্টগানে থাকা শেষ গুলির মাধ্যমে সামনে আসা বন্য প্রাণী ও জন্তু–জানোয়ারকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন।

নিখোঁজ হওয়ার ৩১তম দিনে জঙ্গলের এক জায়গায় বসে ছিলেন জোনাথন। এ সময় তিনি যেখানে বসে ছিলেন, সেখান থেকে ৩০০ মিটার দূরে কিছু মানুষের আওয়াজ শুনতে পান। এরপর তিনি দ্রুত ওই মানুষদের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করেন। খুঁড়িয়ে হাঁটতে হাঁটতে এবং চিৎকার করে সেসব মানুষের কাছাকাছি যান।

হোরাইকো অ্যাকোস্তা জানান, এদিন জঙ্গলে তার ভাইকে খুঁজে পান স্থানীয় চারজন বাসিন্দা।

তিনি বলেন, ‘এক ব্যক্তি দৌড়াতে দৌড়াতে আমাদের কাছে এসে জানান, তারা আমার ভাইকে খুঁজে পেয়েছেন। এটা একটা মিরাকল।’

হোরাইকো জানান, এ ঘটনার পর তার ভাই শিকার করা ছেড়ে দেবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সূত্র: বিবিসি

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৩:১৬ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০২ মার্চ ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(216 বার পঠিত)
(194 বার পঠিত)
advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]