বুধবার ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৩ মাসের শিশুকে ভিক্ষুকের কোলে রেখে গিয়েছিলেন মা, কেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শুক্রবার, ০৩ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট

৩ মাসের শিশুকে ভিক্ষুকের কোলে রেখে গিয়েছিলেন মা, কেন?

লক্ষ্মীপুরে ভিক্ষুকের কোল থেকে উদ্ধার হওয়া শিশুটির পরিচয় মিলেছে। শিশু মাহিন রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের পূর্ব চরসীতা গ্রামের সৌদি প্রবাসী মিরন হোসেনের ছেলে। মিরন-সুরমা দম্পতির সংসারে আরো ৩ মেয়ে রয়েছে। তারা লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাঞ্চানগর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। মানসিক দুশ্চিন্তা থেকে ভুলে বৃদ্ধা ভিক্ষুক সালমা বেগমের কোলে ৩ মাসের শিশু মাহিন হোসেনকে রেখে চলে যান তার মা সুরমা বেগম।

বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে সদর মডেল থানায় এমনটাই জানিয়েছেন শিশুটির মা ৩২ বছর বয়সী সুরমা বেগম। তবে শিশুটিকে এখন তার মায়ের নিকট দেইনি স্থানীয় প্রশাসন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ওসি মোসলেহ উদ্দিন। এর আগে ডেইলি বাংলাদেশে ‘একটু আসি বলে শিশুকে ভিুক্ষুকের কাছে রেখে পালালেন নারী’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করা হয়।

জানা গেছে, শিশুটির বাবা মিরন প্রবাসী। দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে চাকরি করেন। ৪ বছর আগে তিনি দেশে এসে ঋণ নিয়ে বসতঘর নির্মাণ করেন। ৮ মাস আগে আবারো তিনি সৌদি চলে যান। অথচ ঋণের টাকা নিয়মিত দিচ্ছে না। এ নিয়ে প্রায় সময় স্বামীর সঙ্গে ঋণের টাকা পরিশোধ নিয়ে মোবাইলে কথা কাটাকাটি হয় প্রবাসী স্ত্রীর। এতে স্ত্রী সুরমা ঋণের টাকা পরিশোধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন। দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে শিশুটিকে ভিক্ষুকের কাছে রেখে চলে যান তিনি। ভুলে শিশুটিকে নেননি তিনি।

সুরমা বেগম জানান, তার বাবার বাড়ি সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ চরমনসা গ্রামের মিয়ারবেড়ি এলাকায়। বুধবার দুপুর ২টার দিকে বাবার বাড়ি থেকে বাসযোগে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের বাঞ্চানগর এলাকার ভাড়া বাসায় আসছিলেন। বাস থেকে তিনি শিশুটিকে নিয়ে লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কের পৌরসভার মজুপুর এলাকায় আধুনিক হাসপাতালের সামনে নামেন। বাড়ি থেকে ভাড়া বাসায় আসার পথে স্বামী মিরনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় তার। একপর্যায়ে অতিষ্ঠ হয়ে নিজ কোলের শিশু মাহিনকে ওই ভিক্ষুকের কোলে দিয়ে চলে যান। বাসায় যাওয়ার পর সন্ধ্যায় শিশুটির কথা মনে পড়ে তার। পরে ফেসবুকের মাধ্যমে শিশুটির অবস্থান নিশ্চিত হয়ে জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন পরিবারের লোকজন।

এর আগে ভিক্ষুক সালমার কাছ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন মাহমুদের নেতৃত্বে স্থানীয় ১০ ওয়ার্ডের বাসিন্দা বেলালের পরিবারের হেফাজতে রাখা হয়।

রাতেই সদর থানায় উপস্থিত ছিলেন শিশুটির মাসহ তার পরিবার ও জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ, পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির জেলা সভানেত্রী সেলিনা মাহফুজ, সদর মডেল থানার ওসি মোসলেহ উদ্দিন ও জেলা কমিউনিটি পুলিশের সদস্য সচিব জাকির হোসেন ভূঁইয়া আজাদ। জেলা পুলিশ সুপার শিশুটির মা ও দাদা হাফিজ উল্যার সঙ্গে কথা বলেছেন।

পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, শিশুটির মাসহ পরিবারের লোকজন এসেছেন। তবে এখনই আমরা শিশুটিকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করছি না। আমরা আদালতে সোপর্দ করবো। আদালতের মাধ্যমে শিশুটিকে হস্তান্তর করা হবে। শিশুটি স্থানীয় বেলাল হোসেন ও নিশি আক্তার দম্পতির হেফাজতে রয়েছেন।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৪:১১ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৩ মার্চ ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]