
নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ০৪ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট
মেহেদী রাঙা হাতে ক্যানোলা। হাসপাতালের বেডে শুয়ে অঝোরে কাঁদছেন নববধূ সোনিয়া। সড়ক দুর্ঘটনায় ভেঙে গেছে তার হাত-পা। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়েছেন তিনি। শরীরের প্রচণ্ড ব্যথায় কাতরাচ্ছেন তিনি। সে কারণে তাকে ওষুধ দিয়ে বেশির ভাগ সময় ঘুম পাড়িয়ে রাখা হচ্ছে। কিন্তু ঘুম ভাঙলেই যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন আর স্বামীকে দেখতে অস্থির হচ্ছেন। ভিডিও কল করে হলেও তাকে যেন তার স্বামীকে দেখানো হয়, এমন আকুতিও করছেন তিনি। কিন্তু কেবল নতুন বিয়ে, তাই চিকিৎসকের পরামর্শে স্বামী শামীমের মৃত্যুর খবর এখনো জানানো হয়নি তাকে।
গত বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গায় নববধূ সোনিয়াকে নিয়ে মোটরসাইকেলে ঘুরতে বেরিয়ে নিহত হয়েছেন স্বামী শামিম হোসেন। এ সময় আহত হয়েছেন সোনিয়া ও তার ভাবি শেফালী। এর আগে ২৬ ফেব্রুয়ারি তাদের বিয়ে হয়।
এদিকে, হাসপাতালের বেডে সোনিয়ার কান্না দেখে আশপাশের রোগী ও তার স্বজনরা এমনকি চিকিৎসক-নার্সরাও কান্না ধরে রাখতে পারছেন না। এ সময় সোনিয়া বলেছেন, আমি শামীমকে দেখতে চাই, তার সঙ্গে দেখা করতে চাই। ও কোথায়? কেমন আছে আমাকে তোমরা বলো।’ ঘুম ভাঙতেই স্বামী দেখতে অস্থির হয়ে উঠছেন সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সোনিয়া খাতুন। তিনি জানেন না তার স্বামী বেঁচে নেই। তার দাফনও শেষ হয়েছে।
সোনিয়ার খালা পপি খাতুন বলেন, দুর্ঘটনায় সোনিয়ার হাত-পা ভেঙে যাওয়াসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়েছে। প্রচণ্ড ব্যথায় সে কাতরাচ্ছে। সে কারণে তা কে ওষুধ দিয়ে বেশির ভাগ সময় ঘুম পাড়িয়ে রাখা হচ্ছে। কিন্তু ঘুম ভাঙলেই যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে আর স্বামী শামীমকে দেখতে চাচ্ছে। মোবাইলে ভিডিও কল করে হলেও তাকে যেন তার স্বামীকে দেখানো হয়। কেবল নতুন বিয়ে তাই ডাক্তারের পরামর্শে তার স্বামী শামীম মারা গেছে সেটা তাকে এখনো জানানো হয়নি।
সোনিয়ার মামা খায়রুল ইসলাম বলেন, ছোট থেকে সোনিয়াকে মানুষ করছি। মেয়েটাকে কত কষ্ট করে একটা ভালো ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিলাম। আমার মেয়ের কপালে সুখ সইলো না। ভাগনি হাসপাতালে, এদিকে জামাইকে দাফন করে আসলাম। পরিবারের সবাই ভেঙে পড়েছে। তাকে প্রচুর রক্ত দিতে হবে। চিকিৎসা করাতেও অনেক টাকা লাগবে। আমি তো ভ্যানচালক। চিকিৎসকরা রাজশাহী নিতে বলেছিলেন, তাও পারলাম না। আমি কি করবো বুঝতে পারছি না।
সোনিয়ার খালু বিল্লাল হোসেন বলেন, আত্মীয়-স্বজনদের আসতে বলেছি। রক্ত ম্যানেজ হয়ে যাবে। আমার গ্রুপ মিললে আমিও রক্ত দেবো। কিন্তু এত টাকা কীভাবে জোগাড় করবো। আমরা তো আর্থিকভাবে কেউই তেমন সচ্ছল না।
Posted ৭:১৮ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০৪ মার্চ ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin