শুক্রবার ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বল্পোন্নত দেশগুলো তাদের পাওনা চায়: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ০৫ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট

স্বল্পোন্নত দেশগুলো তাদের পাওনা চায়: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলো (এলডিসি) দর কষাকষিতে তাদের পক্ষ রাখবে। তারা দান চায় না, আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রকৃত কাঠামোগত রূপান্তরের জন্য তাদের পাওনা চায়।

রোববার কাতার ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (কিউএনসিসি) স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি ৫: সম্ভাবনা থেকে সমৃদ্ধি) ৫ম জাতিসংঘ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দোহা কর্মসূচি বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য আশ্বাস। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই এলডিসিতে বাস্তব কাঠামোগত রূপান্তরের প্রতিশ্রুতি পুনর্বিবেচনা করতে হবে। স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে এলডিসিতে উত্তরণে তাদের পারফরম্যান্সের জন্য কিছু প্রণোদনা থাকা উচিত। তাদের একটি বর্ধিত সময়ের জন্য স্বল্পোন্নত দেশগুলোর আন্তর্জাতিক সহায়তা ভোগ করা উচিত। তাদের উন্নত বিনিয়োগ এবং উৎপাদনশীল সক্ষমতা কিভাবে তৈরি করা যায় তা জানতে হবে। তাদের জন্য কিছু উদ্ভাবনী ও ক্রান্তিকালীন অর্থায়ন ব্যবস্থা থাকতে পারে।

তিনি আরো বলেন, এলডিসিগুলোর জন্য জলবায়ু অর্থায়নকে নমনীয় এবং অনুমানযোগ্য করা উচিত। এলডিসিগুলোতে প্রযুক্তি হস্তান্তর বাস্তব এবং অর্থপূর্ণ হওয়া দরকার। আমাদের অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার এবং মঙ্গলের জন্য সুরক্ষা প্রয়োজন। আমরা এলডিসিতে ২২৬ মিলিয়ন যুবকদের ব্যর্থ করতে পারি না। করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এলডিসি অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা। আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির ফলে অধিকাংশ স্বল্পোন্নত দেশে মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের গল্পের বেশিরভাগ অংশই আমরা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য আলোচনা করেছিলাম। সহযোগিতার জন্য আমাদের গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরেছি। বেশিরভাগ উন্নত ও উদীয়মান অর্থনীতি থেকে আমরা যে শুল্ক এবং কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার পেয়েছি তা আমাদের বেসরকারি খাতকে দৃঢ় উৎপাদন ভিত্তি তৈরিতে সাহায্য করেছে।

সরকার প্রধান বলেন, ট্রিপস চুক্তির অধীনে প্রদত্ত পেটেন্ট মওকুফ সুবিধা স্থানীয়ভাবে আমাদের ওষুধের চাহিদার ৯৮ শতাংশ পূরণ করার সুযোগ করে দিয়েছে। ডব্লিউটিও চুক্তির অধীনে রেয়াতগুলো আমাদের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি ক্ষুধা ও অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম করেছে। আমরা যে আন্তর্জাতিক প্রযুক্তিগত সহায়তা পেয়েছি- তা আমাদের সুনির্দিষ্ট উন্নয়ন পরিকল্পনা করতে সহায়তা করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র হয়েছিল। ঐ সময় স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) হিসেবে স্বীকৃত বাংলাদেশ যুদ্ধ-বিধ্বস্ত অর্থনীতি পুনর্গঠনের জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছিল। পরের বছর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বাংলাদেশ এলডিসি শর্তপূরণে অব্যহতভাবে চ্যাম্পিয়ন হতে থাকবে। গত পাঁচ দশকে প্রায়ই এলডিসি মুখপাত্র হিসেবে কাজ করতে পেরে বাংলাদেশ গর্বিত। বাংলাদেশের এলডিসিতে উত্তরণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সন্তুষ্ট।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন আন্তর্জাতিক সরবরাহ চেইনে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার। বাংলাদেশ একটি দ্রুত বর্ধনশীল ডিজিটাল অর্থনীতি, যোগাযোগ ও লজিস্টিকসের একটি সম্ভাব্য আঞ্চলিক কেন্দ্র। আমাদের পরবর্তী ভিশন ২০৪১ সালের মধ্যে একটি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলা।

সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন- সম্মেলনের সভাপতি ও কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল সানি। এছাড়া বক্তব্য রাখেন- জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস, ইউএনজিএ সভাপতি সাবা করোসি, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের সভাপতি লাচেজারা স্টোয়েভা, মালাবির প্রেসিডেন্ট ও এলডিসি গ্রুপের চেয়ারপার্সন লাজারাস ম্যাকার্থি চাকাওয়েরা।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৪:২৪ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৫ মার্চ ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]