শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

জনরোষের মুখে নতি স্বীকার করল জর্জিয়ার সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বৃহস্পতিবার, ০৯ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট

জনরোষের মুখে নতি স্বীকার করল জর্জিয়ার সরকার

শুধু ইউক্রেন নয়, সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র জর্জিয়াও এবার সংকটের মুখে। তবে বাইরে থেকে হামলা নয়, বরং সরকারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তকে ঘিরে গণবিক্ষোভ দেশটিতে অস্থিরতার কারণ। ঠিক যেন রাশিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করে জর্জিয়ার সরকার মত প্রকাশের অধিকার খর্ব করার উদ্যোগ নিচ্ছে বলে বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ। তাদের আশঙ্কা ইউরোপীয় মূল্যবোধের দিকে এগোনোর বদলে সরকার স্বৈরাচার ও রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ মেনে নেওয়ার পথে এগোচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে রাশিয়ার হামলার জেরে জর্জিয়ার দুটি অঞ্চল বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এরপর থেকে জর্জিয়ার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মস্কোর বিরুদ্ধে কড়া মনোভাব দেখিয়ে আসছে।

জর্জিয়ার সরকার সংসদে এমন এক আইন পেশ করেছিল, যার আওতায় কোনো সংগঠন বিদেশ থেকে ২০ শতাংশের বেশি অর্থ পেলে সেটিকে ‘বিদেশি এজেন্ট’ হিসেবে সরকারের কাছে নথিভুক্ত করতে হবে। না করলে মোটা অংকের জরিমানা দিতে হবে। এমন উদ্যোগের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিবাদ-বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।

রাজধানী তিবিলিসিতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, জলকামান ও স্টান গ্রেনেড ব্যবহার করে দ্বিতীয় দিনের বিক্ষোভ ভাঙার চেষ্টা করেছে। তবে মঙ্গলবারের মতো বিক্ষোভকারীরা পুলিশের দিকে লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমা বা পাথর ছোড়ে নি। সে দিন ৭৭ জনকে আটক করা হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় হাজার হাজার মানুষ সংসদ ভবনের সামনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউক্রেনের পতাকা হাতে বিক্ষোভ দেখান। তাদের স্লোগান ছিল ‘রাশিয়ার আইন আমরা মানবো না’।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি তার দেশের পতাকা ওড়ানোর জন্য জর্জিয়ার মানুষের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ইউক্রেনের সঙ্গে জর্জিয়াও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হয়ে উঠবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।

এদিকে প্রবল জনরোষের মুখে জর্জিয়ার সরকার বৃহস্পতিবার সকালে বিতর্কিত আইনের খসড়া প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ক্ষমতাসীন ‘জর্জিয়ান ড্রিম’ পার্টির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই আইনের ফলে সমাজে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। সে কারণে এই আইনের খসড়া প্রত্যাহার করা হচ্ছে।

এর আগে ক্ষমতাসীন দল স্বৈরাচারী পদক্ষেপের অভিযোগ অস্বীকার করেছিল। তাদের মতে, ১৯৩০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদিত একটি আইনের আদলে জর্জিয়ার আইনের খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছিল। দলের সভাপতি ইরাকলি কোবাখিডজে বলেছিলেন, দেশ ও দেশের শক্তিশালী অর্থোডক্স গির্জার স্বার্থের বিরুদ্ধে যারা কাজ করছে, তাদের নির্মূল করতে এই আইন সহায়ক হবে। তিনি দেশের ‘ব়্যাডিকাল’ বিরোধী পক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ইন্ধন জোগানোর অভিযোগ করেন। কিন্তু বিরোধীদের ধারণা, এমন আইন কার্যকর হলে জর্জিয়ায় এনজিও ও সংবাদমাধ্যমের একটা অংশ সরকারের রোষের মুখে অসহায় হয়ে পড়বে।

অন্যদিকে জর্জিয়ার প্রেসিডেন্ট সালোমে জুরাবিচভিলিও শুরু থেকে এই আইনের বিরোধিতা করে এসেছেন। তার মতে, ভিন্নমত দমন করতে রাশিয়া ঠিক এমনই আইন কার্যকর করেছে। এমন উদ্যোগ ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের সুযোগের ক্ষতি করবে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্যে বলপ্রয়োগ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। তিনি মনে করিয়ে দেন, তার দেশও রাশিয়ার হামলার শিকার হয়েছে। জুরাবিচভিলি বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া হেরে যাচ্ছে। তবে সে দেশ সহজে জর্জিয়ার ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ছেড়ে দেবে না। বিতর্কিত আইনের খসড়া তার কাছে এলে তিনি ভেটো শক্তি প্রয়োগের অঙ্গীকার করেন।

সূত্র : ডয়চে ভেলে

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১:২৯ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৯ মার্চ ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(205 বার পঠিত)
(191 বার পঠিত)
advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]