বৃহস্পতিবার ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশের পোশাক খাতে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শুক্রবার, ১০ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট

দেশের পোশাক খাতে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার শঙ্কা

বিশ্বখ্যাত নানা ব্র্যান্ডের নকল লোগো লাগিয়ে পণ্য বাজারজাত করা নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে চরম বিপদে পড়তে যাচ্ছে দেশের পোশাকশিল্প। কয়েকটি দেশে বেশকিছু নকল পণ্য জব্দ হয়েছে বলে বাংলাদেশকে অবহিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সভিত্তিক দুটি বায়ার প্রতিষ্ঠান। এতে দেশের পোশাক খাতে দেখা দিচ্ছে অশনিসংকেত।

বিশ্বের নামিদামি সব ব্র্যান্ডের পণ্য উৎপাদন শেষে বিভিন্ন দেশে রফতানি করে বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলো। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সব বায়ারও বাংলাদেশ থেকে বছরে হাজার হাজার কোটি মার্কিন ডলারের পোশাক ক্রয় করেন। এমনকি সদ্যসমাপ্ত কাতার বিশ্বকাপের ফিফার অফিশিয়াল টি-শার্ট তৈরি করে সুনাম অর্জন করেছে বাংলাদেশের একটি পোশাক কারখানা।

তবে সম্প্রতি নানা জটিলতায় হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে দেশের এ তৈরি পোশাক খাত। বিশেষ করে নামি ব্র্যান্ডের নকল পণ্য বাজারজাতের অভিযোগ ওঠেছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। মূলত বিশ্ব বাণিজ্যে সুদৃঢ় অবস্থানের কারণে দেশের তৈরি পোশাক খাতে সৃষ্টি হয়েছে নানা প্রতিপক্ষ। আর এসব প্রতিপক্ষই নানা ত্রুটি তুলে ধরছে বায়ারদের কাছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসানের স্বাক্ষর করা এক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে মেধাস্বত্ব নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড স্টেটস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্পেশাল ৩০১ রিভিউ অন আইপিআর প্রোটেকশন অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

২০২২ সালে মালয়েশিয়া-ফিলিপিন্সসহ কয়েকটি দেশে পরিচালিত অভিযানে ৫০টির বেশি নকল পণ্যের চালান জব্দ করা হয়েছে। জব্দ হওয়া এসব পণ্য বাংলাদেশে উৎপাদিত বলে দাবি করেছে আমেরিকাভিত্তিক বায়ারদের সংগঠন আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন ও ফ্রান্সভিত্তিক সংস্থা ইউনিয়ন ডেস ফেব্রিক্স-ইউনিফ্যাব।

প্রাথমিকভাবে বিজিএমইএ ধারণা করছে, লকডাউনের সময় স্থগিত করা অর্ডার গোপনে বিক্রি করে দিয়েছিল কিছু গার্মেন্ট মালিক। সেগুলোই এখন ধরা পড়ছে বিদেশের বাজারে। এছাড়া ছোট আকারে কিছু প্রতিষ্ঠান নকল লোগো দিয়ে পণ্য উৎপাদন করে দেশের বাজারে ছাড়ছে। আর এতেই শঙ্কার মধ্যে পড়েছে দেশের পোশাকশিল্প।

এ ক্ষেত্রে জটিলতা এড়াতে অননুমোদিত এসব কারখানাকে দ্রুত নজরদারিতে আনার দাবি ব্যবসায়ী নেতাদের। কারণ, কাউন্টারফিট পণ্য উৎপাদনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে শুল্কহার বাড়ানোর পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে পারে বাংলাদেশ।

বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব বলেন, এটি দেশের জন্য বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনতে পারে। এ জন্য নকল পণ্য রোধে এখনই সতর্ক হতে হবে।

এদিকে নকল এসব পণ্য কীভাবে বাংলাদেশ থেকে বাইরে গেল, তার অনুসন্ধান শুরু করেছে বিজিএমইএ। এছাড়া আস্থার সংকট এড়াতে নকল লোগো এবং পণ্য প্রস্তুতকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিজিএমইএ।

বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, কোনো অবস্থায়ই এসব নকল ব্র্যান্ড কাম্য নয়। এ বিষয়ে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

আর বিজিএমইএর সহ-সভাপতি রকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, এরই মধ্যে এ বিষয়ে সরকার ও বিভিন্ন অ্যাম্বাসিকে জানানো হয়েছে। কারণ, এ ধরনের নকল পণ্য রফতানি রোধে সরকারকেই আসল পদক্ষেপ নিতে হবে।

বাংলাদেশ বছরে প্রায় ৪৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য বিদেশে রফতানি করছে। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ আমেরিকার বাজারে এবং ৩৫ শতাংশ ইউরোপের দেশগুলোতে রফতানি হয়।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৮:৪৭ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১০ মার্চ ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]