শনিবার ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আকুস চুক্তি: পারমাণবিক সাবমেরিন প্রকল্পে ৩ দেশ একমত

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট

আকুস চুক্তি: পারমাণবিক সাবমেরিন প্রকল্পে ৩ দেশ একমত

পারমাণবিক শক্তি চালিত পরবর্তী প্রজন্মের সাবমেরিনের একটি বহর তৈরির যে পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য আর অস্ট্রেলিয়া তার বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়েছে। ‘আকুস এগ্রিমেন্ট’ নামের ওই চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম দেশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়া তিনটি পারমাণবিক সাবমেরিন পাবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে।

সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাবমেরিনের নতুন একটি বহন তৈরিতে কাজ করবে এই তিনটি দেশ। এই প্রযুক্তির মধ্যে থাকবে যুক্তরাজ্যের রোলস রয়েসের বানানো পারমাণবিক রিয়্যাক্টরও। তিন দেশের এই সমঝোতার প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের প্রভাব মোকাবেলা করা।

সোমবার ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়েগোতে ওই চুক্তির বিস্তারিত প্রকাশ করেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার নেতারা। সেখানে বক্তব্য দেয়ার সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এসব সাবমেরিনে পারমাণবিক অস্ত্র থাকবে না। সেই সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া পরমাণু অস্ত্র মুক্ত থাকার যে অঙ্গীকার করেছে, সেটারও কোন বিচ্যুতি ঘটবে না।

সোমবার ঘোষণা করা ওই চুক্তি অনুযায়ী, রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান নৌবাহিনীর সদস্যরা এ বছর থেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের নৌঘাটিগুলোয় সাবমেরিনের বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করবে।

যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য ২০২৭ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়ার পার্থে ছোট একটি সাবমেরিন ঘাঁটি তৈরি করবে। ২০৩০ সাল নাগাদ ভার্জিনিয়া ক্লাস তিনটি আমেরিকান সাবমেরিন কিনবে অস্ট্রেলিয়া। তাদের জন্য আরো দুটি সাবমেরিন কেনার সুযোগ খোলা থাকবে। এরপর থেকে যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনীর জন্য পুরোপুরি নতুন ধরনের পারমাণবিক শক্তি চালিত সাবমেরিন তৈরি করা হবে, যার নাম হবে এসএসএন আকুস।

যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রেলিয়ায় এই আক্রমণকারী সাবমেরিনগুলো তৈরি করা হবে যুক্তরাজ্যের নকশায়। তবে এগুলো তৈরিতে তিন দেশ থেকেই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার যে সাবমেরিন বহর রয়েছে, তার তুলনায় নতুন সাবমেরিনগুলো দ্রুত এবং অনেক দূর পথ চলাচল করতে পারবে। এসব সাবমেরিনে ভূমি এবং সাগরে আঘাত হানতে সক্ষম ক্রুজ মিসাইল থাকবে।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, তিন দেশই চায় ওই এলাকা চলাচলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। সোমবারের ওই ঘোষণা অনুযায়ী, ডুবোজাহাজ তৈরির সক্ষমতা বৃদ্ধির পেছনে আগামী কয়েক বছর ধরে চারশো ষাট কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষ করে ভার্জিনিয়া ক্লাস সাবমেরিন উন্নতিতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হবে।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানেজ বলেছেন, ডুবোজাহাজ তৈরির এই প্রকল্পের মাধ্যমে হাজার হাজার নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি হবে।

তিনি আরো বলেছেন, এই চুক্তির মাধ্যমে গত ৬৫ বছরের মধ্যে প্রথমবার আর ইতিহাসে দ্বিতীয় বারের মতো যুক্তরাষ্ট্র তাদের পারমাণবিক প্রযুক্তি অন্য কোন দেশের সঙ্গে বিনিময় করছে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, যখন আঠারো মাস আগে এই চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়, তখন থেকে সারা বিশ্বে অস্থিরতা বেড়েই চলেছে। তিনি বলেন,‘ইউক্রেনে অবৈধভাবে আগ্রাসন চালিয়েছে রাশিয়া, চীনের গোঁড়ামি, ইরান ও উত্তর কোরিয়ার অস্থিতিশীল আচরণ – এসব বিশৃঙ্খলা ও বিভাজন সারা বিশ্বের জন্যই হুমকি।’

সুনাক আরো বলেন, ‘আগামী দুই বছর প্রতিরক্ষা খাতে আরো প্রায় ৫৬ বিলিয়ন ডলার ব্যয় বাড়াবে যুক্তরাজ্য।’ তবে এই চুক্তির বিরোধিতা করে আসছে চীন। গত সপ্তাহে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেছেন, এই চুক্তির ফলে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বাড়বে এবং এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হবে।

ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরে পশ্চিমা দেশগুলো সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে কিনা, এমন উদ্বেগের জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেছেন, সেখানে ন্যাটোর মতো কোন জোট তৈরির ইচ্ছা নেই যুক্তরাষ্ট্রের।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১০:১৯ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(216 বার পঠিত)
(194 বার পঠিত)
advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]