
নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট
বসন্তের এই নতুন রূপে কলেজের প্রাঙ্গণে প্রকৃতি রূপ বদলাতে শুরু করেছে। কোথাও গাছের পাতা ঝরে গেছে, কোথাও ঝরছে, আবার কোথাও কোথাও নতুন পাতারা এসেছে। সব মিলিয়ে নতুন রূপে নিজেকে তৈরি করছে ক্যাম্পাসের বৃক্ষরা।
বসন্তের তিতুমীর। ছবি: ডেইলি বাংলাদেশ
বসন্তকালের ক্যাম্পাস প্রতিটি শিক্ষার্থীদের রোমাঞ্চিত করে। শুকনো পাতার মর্মর শব্দ যেমন শরীরে শিহরণ জাগায়, তেমনি নতুন পাতা গজানোর, নতুন কিছু সৃষ্টির দৃশ্য চোখে পড়লে চোখ জুড়িয়ে যায়।
প্রকৃতি যেমন একপাশে হারানোর বেদনাবিধুর স্বাদ পায়, তেমনি দুই হাত ভরে নতুন সৃষ্টির জয়গান গায়। সৃষ্টির এই দোলাচলে যেন জীবনের দুইটি ভিন্ন রূপ আমরা দেখতে পাই। বর্তমানে ক্যাম্পাসের চিত্র ঠিক এমনই। প্রকৃতি যেন জীবনকে জীবনের শিক্ষা দিয়ে যায়।
ভিন্নভাবে সেজেছে রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজ।
সরেজমিনে দেখা যায়, ক্যাম্পাসে গাছের রূপ যেমন বদলাতে শুরু করেছে তেমনি নিয়ম করে ফুটছে নতুন নতুন ফুল। সন্ধ্যামালতী, জবা, রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া, বাগানবিলাসসহ হরেক রকমের ফুল ফোটা শুরু করেছে। নতুন ফুলের এই সুবাসে ক্যাম্পাস সুবাসিত হয়ে উঠেছে।
আবার শুকনা পাতার মর্মর শব্দে ক্যাম্পাস যেন মুখর হয়ে উঠেছে। যেখানে পা পড়ে সেখানেই পাতার মর্মর শব্দ। এ যেন পাতার রাজ্য। ক্যাম্পাসের সব পাতা যেন ঝরে পড়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। তবে সব পাতা ঝরে পড়লেও, শূন্য স্থানে পূরণে নতুন নতুন পাতা গজাচ্ছে। নতুন পাতার নতুনত্বে ক্যাম্পাসে এক ভিন্নতা দেখা দিয়েছে। এ যেন শূন্যের মধ্যে সবুজ। সবুজের সবুজায়নে ক্যাম্পাস হয়ে উঠেছে চির সবুজ।
সবুজের সবুজায়নে ক্যাম্পাস হয়ে উঠেছে চির সবুজ।
কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী উমর শরীফ ফাহিম বলেন, কলেজে প্রবেশ করলেই মনে হয় চারিদিকে সবুজের চাদর দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। আছে নানান ধরনের ফুলের গাছ। শীতকালে যখন কলেজে যেতাম মনে হতো তীব্র শীতে মানুষ যেমন গুটিসুটি মেরে বসে থাকত, ফুলের গাছগুলোও তেমন করে আছে। তার মধ্যে কোনো রঙ নেই, বৈচিত্র্য নেই, চাকচিক্য নেই। কিন্তু বসন্ত আসার পর ফুলের গাছগুলো আবারো তার আপন মহিমায় ফিরে এসেছে। তার সব সৌন্দর্য উজাড় করে দিয়েছে বৈচিত্র্যময় ও নানা রঙের ফুলের মাধ্যমে। সেখানে ভোমর ও মৌমাছিও যথারীতি মধু সংগ্রহ করতে আসে। প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এই দৃশ্য খুবই তৃপ্তিদায়ক ও চিত্তাকর্ষক।
প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এই দৃশ্য তৃপ্তিদায়ক। ছবি: ডেইলি বাংলাদেশ
কলেজের চতুর্থ বর্ষের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী সামিয়া রহমান বলেন, শেখ রাসেল পুষ্প কাননের পাশেই বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ ফুলগুলোর দিকে নজর পড়তেই চোখ জুড়িয়ে যাওয়ার উপক্রম। ফুলগুলোর বয়স বেশি নয়। কিন্তু এগুলো আমাদেরকে যে গভীর শিক্ষা দিয়ে যায়, তা আমরা একটু চিন্তা করলেই হৃদয়াঙ্গম করতে পারি। আর তা হলো নবজাগরণ, নবউত্থানের শিক্ষা। কিছুকাল আগেও এদের অস্তিত্ব ছিল না। সাধারণ দৃষ্টিতে দেখলে মনে হতো যেন এখানে কোনোকালে কোনো সুগন্ধি ফুলের অস্তিত্বই ছিল না বা আদৌ ফুল ফুটবে বলে মনে হয় না। অথচ বাস্তবতা এখন আমাদের চোখের সামনে। তদ্রূপ আমাদের জীবনের দিকে তাকালেও অনেকসময় মনে হতে পারে আদৌ এই অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব না, অথচ একসময় আমাদের জীবনও বসন্তের ফুলের মতো জেগে উঠবে শুকনা পাতার বাধা অতিক্রম করে।
Posted ৬:২১ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin