
নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ১৭ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট
শীতের রুক্ষতাকে দূরে ঠেলে প্রকৃতিতে আসে ঋতুরাজ বসন্ত। ষড়ঋতুর বাংলাদেশে অনেকটা বেখেয়ালেই কেটে যায় কিছু ঋতু। কিন্তু বসন্তের আগমনে প্রকৃতিতে যেন চলে এক নীরব বিপ্লব। শাঁখে শাঁখে নান্দনিক রঙের পলাশ ফুল জানান দেয় ধরাধামে এসেছে বাসন্তী হাওয়া। ফলে ক্যালেন্ডারের পাতায় না দেখা হলেও প্রকৃতির ক্যালেন্ডারেই যেন বসন্তকে খুঁজে পাই আমরা।
ঠিক তেমনি প্রকৃতির ‘বাসন্তী ক্যালেন্ডার’ হিসেবে ঋতুরাজ বস্তন্তের উপস্থিতি জানান দিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) পলাশ গাছগুলো। বসন্তের শুরু থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন চত্বরগুলো রাঙিয়ে তুলছে মাঝারি আকারের পর্ণমোচী বৃক্ষগুলো। বিভিন্ন চত্বরে বেড়ে ওঠা পলাশ গাছগুলো যেন নিজের সব রং উজাড় করে দিয়ে সুফিয়া কামালের ভাষায় বলছে, ‘হে কবি! নীরব কেন-ফাল্গুন যে এসেছে ধরায়, বসন্তে বরিয়া তুমি লবে না কি তব বন্দনায়?’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশের পর সামনে এগুতেই প্রশাসন ভবনের সম্মুখে চত্বর রাঙিয়ে রেখেছে দুটি পলাশ গাছ। প্রবেশের পরে যেন শিক্ষার্থীদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানায় পলাশের মাধুর্য। এছাড়া ডায়না চত্বর, মীর মশারফ হোসেন একাডেমিক ভবন চত্বর ও রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের এলাকাসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন চত্বর এখন পলাশের দখলে।
একগুচ্ছ পলাশ ফুল দেখে মনে হবে- দুদিকে পাখির ডানার মতো দুই পাপড়ি প্রসারিত করে একদল পলাশ ফুল যেন ঠোট দিয়ে ডাল আঁকড়ে ধরে আছে। ফুলের নান্দনিক সৌন্দর্য শিক্ষার্থীদের আন্দোলিত করছে অহর্নিশ। শুধু পলাশ নয় বসন্তকালের অন্যান্য ফুলগুলোর সরব উপস্থিতিতে বর্ণিল সাজে সেজেছে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন চত্বর।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সুকান্ত দাস সুপ্রিয় বলেন, ‘বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঋতুচক্র না থাকলেও ঋতুরাজ বসন্তের আগমনী আমরা বুঝতে পারি কোকিলের ডাক এবং শিমুল, পলাশের সৌন্দর্যে। ইবি ক্যাম্পাস এমনিতেই সবুজের লীলাভূমি। সেই সৌন্দর্য বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে শত শত প্রস্ফুটিত পলাশ। নিজের অপার সৌন্দর্য দিয়ে পলাশ গাছগুলো যেন নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের অভিবাদন জানাচ্ছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী রাফি বলেন, ঋতুর পালা বদলে প্রকৃতির পরিবর্তন হয় আমাদের এই বিদ্যাপীঠে। ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বাড়ে বহুগুণ। শীতের শীতলতা কেটে প্রকৃতিতে মিলে শান্তির ছোঁয়া। পাতা ঝরা গাছে গজাতে শুরু করে সবুজ পাতা। বিষণ্ণ ক্যাম্পাস পরিণত হয় সবুজের রাজ্যে। যা প্রকৃতিকে করে তুলে অপরূপ। চির সবুজের ক্যাম্পাস আরো অপরূপ হয় গাছে গাছে গজানো লাল পলাশ ফুলের রূপে। এই পলাশ ফুলের রূপ যেন আমাকে মনে করিয়ে দেয় প্রকৃতিতে ঋতুরাজ বসন্তের আধিপত্যের কথা।
Posted ৬:২৪ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৭ মার্চ ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin