শুক্রবার ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রমজানে জুমাবারের গুরুত্ব ও ফজিলত

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট

রমজানে জুমাবারের গুরুত্ব ও ফজিলত

রহমত, মাগফেরাত এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাস রমজান। যার প্রথমে রহমত, মাঝে মাগফেরাত এবং শেষে রয়েছে জাহান্নাম হতে মুক্তি। মহিমান্বিত এ রমজান মাসের সব আমল বহুগুণে বর্ধিত হয়। প্রতি ওয়াক্তের নামাজসহ তারাবি, তাহাজ্জুদ, সুন্নাত ও নফল নামাজ সবকিছুই আলাদা গুরুত্বসহকারে আদায় করা হয়।

মহিমান্বিত রমজান শুরু হয়ে গেছে। আর এ রমজান মাসের জুমাবার বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর জন্য আরো বেশি গুরুত্ব ও ফজিলতপূর্ণ একটি দিন।

ইসলামের দৃষ্টিতে জুমার দিন বরকতময় ও তাৎপর্যপূর্ণ। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা এ দিনকে অন্যান্য দিনের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। পবিত্র রমজানের জুমার দিন হওয়ায় এর ফজিলত ও গুরুত্ব আরো অনেকগুণ বেশি। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে জুমার দিনের বহু ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা এই দিনের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন- يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِيَ لِلصَّلَاةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَىٰ ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ

অর্থ: ‘মুমিনগণ, জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ।’ (সূরা: আল জুমুআ, আয়াত: ৯)

রমজানে ইবাদত সম্পর্কে হজরত আবু হুরাইরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, প্রত্যেক আদম সন্তান ভালো কাজের প্রতিদান দশ থেকে সাতশ’ গুণ বেশি পাবে। রোজা আল্লাহর জন্য। আল্লাহ নিজেই এর প্রতিদান দেবেন। (মুসলিম: ২৭০৭)

হজরত মুহাম্মদ (সা) এক হাদিসে বলেছেন, মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস নম্বর ১০৯৮)

এছাড়া নবী (সা.) অন্য এক হাদিসে এরশাদ করেছেন, যে দিনগুলোতে সূর্য উদিত হয়, ওই দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। ওই দিন হযরত আদমকে (আ.) সৃষ্টি করা হয়েছে। ওই দিন তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং ওই দিনই তাকে জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়। আর ওই দিনই কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে। (মুসলিম শরিফ, হাদিস নম্বর ৮৫৪)

জুমার দিনকে আল্লাহ তাআলা সীমাহীন বরকত দ্বারা সমৃদ্ধ করেছেন। এটি সপ্তাহের সেরা দিন। নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, সর্বাপেক্ষা উত্তম ও বরকতময় দিন হচ্ছে জুমার দিন। এই পবিত্র দিনে হজরত আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছিল এবং এদিনে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়। (মুসলিম শরিফ)

তিনি আরো বলেছেন, মহান আল্লাহর কাছে জুমার দিনটি ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিনের মতো শ্রেষ্ঠ দিন। এ দিনটি আল্লাহর কাছে অতি মর্যাদাসম্পন্ন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস নম্বর ১০৮৪)

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘পাঁচ বেলা সালাত আদায়, এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমা, এক রমজান থেকে পরবর্তী রমজানের মধ্যবর্তী সময়ে হয়ে যাওয়া সব (সগিরা) গুনাহের কাফফারা স্বরূপ, এই শর্তে যে, বান্দা কবিরা গুনাহ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখবে।’ (মুসলিম; ২৩৩)।

জুমার এইসব ফজিলত চিরন্তন। রমজান মাসে এই ফজিলত আরো বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। তাই পবিত্র রমজান মাসের এই প্রথম জুমাকে আমরা আমাদের ইবাদাতের উপলক্ষ্য বানিয়ে নিতে পারি। আমলের একটি মাইলফলক বানাতে পারি। আজকে যে দোয়া কবুলের মুহূর্ত আছে সেটাকে কাজে লাগাতে আছরের পরের পুরো সময় আমরা ইবাদতে মশগুল থাকতে পারি।

আল্লাহ তাআলা আমাদের আজকের এই বরকতময় দিনকে কাজে লাগানোর তাওফিক দান করুন। আমিন।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৪:১৬ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]