নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট
পরিবারের মতে বিয়ে হয়েছে। তবে সাজা হয়নি বউ। মেহেদীতে রাঙা হয়নি হাত। পরা হয়নি বেনারসি শাড়ি। তবে কথা ছিল প্রবাস থেকে বাড়িতে এসে আমাকে বেনারসিতে বউ সাজিয়ে নিয়ে যাবে। কিন্তু আমার পোড়া কপালে সেই সুখ আর সইলো না, আমার আর বেনারসি পরা হলো না। এভাবেই আহাজারি করছিলেন ওমরাহ শেষে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সাগর জোমাদ্দারের স্ত্রী শান্তা আক্তার।
সৌদিতে ওমরাহ শেষে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন বরগুনার বেতাগীর সাগর জোমাদ্দার ও তার দুলাভাই মোজাম্মেল হোসাইন। একই পরিবারের দুজন সদস্যকে হারিয়ে পাগলপ্রায় বাবা-মা। দিশেহারা স্বজনরা।
নিহত সাগরের স্ত্রী শান্তা কাঁপা কাঁপা গলায় বলেন, সাত বছর প্রেমের সম্পর্কের পর পরিবারের অমতে ভালোবাসার টানে বিয়ে করেন সাগর ও শান্তা। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই জীবিকার তাগিদে প্রবাসে পাড়ি দেন স্বামী সাগর। স্ত্রী শান্তা সাগরের বোনের বাড়িতেই থাকতেন। কথা ছিল প্রবাস থেকে ফিরে বেনারসি পরিয়ে বউয়ের সাজে সাগরের বাড়িতে নিয়ে যাবে। তবে সেই সুখ দেখার আগেই প্রবাস জীবনের বছর না ঘুরতেই স্বামীর অকালমৃত্যু সংবাদ পাই। মনে হয় যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল।
জানা যায়, ওমরাহ শেষে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই বাংলাদেশি একই পরিবারের সদস্য। সম্পর্কে শ্যালক দুলাভাই। ২৩ বছর আগে প্রবাসে পাড়ি জমান নিহত মোজাম্মেল হোসাইন। পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে এক বছর পূর্বে নিজ কর্মস্থলেই নিয়ে যান শ্যালক সাগর জোমাদ্দারকে। ওমরাহ হজের উদ্দেশ্যে সৌদির আলগাছিমের উনাইযা নামক স্থান থেকে তারা গত বৃহস্পতিবার মক্কায় রওনা হন।
ওমরাহ শেষ করে কর্মস্থলে ফেরার পথে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আল আরিয়ান নামক স্থানে পাথরের পাহাড়ের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তারা। বাংলাদেশি সময় শনিবার রাত ৮টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। সঙ্গে থাকা আহত এক সফরসঙ্গী নিহত সাগর জোমাদ্দারের পরিবারের কাছে বিষয়টি জানালে তারা নিশ্চিত হন।
এদিকে, মরদেহ দেশে ফিরে পেতে সৌদি দূতাবাসের সহযোগিতা চাইছেন নিহত সাগর ও মোজাম্মেল হোসাইনের স্বজনরা।
Posted ৫:২৮ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin