শুক্রবার ৯ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

গাছে গাছে দুলছে সজনে

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট

গাছে গাছে দুলছে সজনে

এ বছর গ্রামের গাছে গাছে ভরে গেছে সজনে। থোকায় থোকায় ঝুলছে সজনে ডাটা। বাড়ির পাশে পতিত জমিতে, রাস্তার পাশে, আনচে-কানাচে যত্নে-অযত্নে বেড়ে ওঠা প্রতিটি সজনে গাছের শাখা-প্রশাখা ন্যুয়ে পড়ছে ডাটার ভারে। বলছিলাম, যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ-নেংগুড়াহাট এলাকার গ্রাম অঞ্চলের কথা।

এ অঞ্চলে সজনে ডাটা নেংগুড়াহাট এখনও বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু না হলেও বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা সজিনা গাছগুলির প্রতি যত্নশীল হয়েছেন গাছ মালিকরা। কেননা প্রথম ডাটার পূর্ণতার আগে বাজারে ওঠে, তখন এর দাম হয় ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। তবে ডাটা যখন পরিপূর্ণ রূপ নিয়ে বাজারে আসে, তখন দাম কিছুটা কমে। এখন বাজারে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এবার প্রাকৃতিক ঝড়-ঝাপটা না হওয়ায় প্রতিটি গাছে ফলন ভালো হয়েছে। সজনে উৎপাদনে চাষিদের কোনো খরচ হয় না। ফলে গাছ থেকে যতটুকু সজনে ডাটা উৎপাদন হয় তার সবটুকুই চাষিদের লাভ।

তবে এ অঞ্চলের কত জমিতে সজনের গাছ আছে তার সঠিক হিসেব নেই কৃষি বিভাগে। কৃষি কর্মকর্তাদের ধারণা, প্রায় বাড়ির জমিতে সজনে গাছ আছে। গড়ে প্রতিটি গাছে ২০ কেজি করে সজনে ফলন পাওয়া গেছে।

মণিরামপুর উপজেলা আটঘরা গ্রামের সজনে কৃষক ছবেদ আলী মহলদার বলেন, বাণিজ্যিকভাবে মাঠে কোনো জমিতে সজনে চাষ করি না। নিজ বাড়ির চারপাশে ১০টি সজনে গাছ লাগিয়েছি। এই গাছগুলি লাগাতে কোনো খরচ হয়নি। প্রতি মৌসুমে ৬-৭ হাজার টাকার ডাটা বিক্রি করি। এবার গাছে যে পরিমাণ ডাটা ধরেছে তাতে ১০ হাজার টাকার ডাটা বিক্রি করতে পারবো।

একই গ্রামের আব্দুল মাবুদ জানান, এখন সজনে গাছে থোকায় থোকায় ডাটা ধরেছে। কোনো কোনো গাছে পাতা না থাকলেও গাছ ডাটায় পরিপূর্ণ। তিনি মূলত নিজের পরিবারের চাহিদা পূরণেই বাড়ির পাশে কয়েকটি গাছ লাগিয়েছেন। তবে গাছগুলোতে যে পরিমাণ ডাটা পাওয়া যায় তা পরিবারের চাহিদা পূরণ করে বিক্রিও করেন তিনি।

মণিরামপুর উপজেলা চালুয়াহাটি ইউনিয়নের কৃষি উপ-সহকারী মারুফুল হক ও হাবিবুর রহমান বলেন, এই বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বিগত কয়েক বছরের মধ্যে সজনের সর্বোচ্চ ফলন হয়েছে। প্রতি বাড়িতে কমবেশি সজনে গাছ আছে। সজনে পুষ্টিকর সবজি হিসাবে ব্যাপক চাহিদা থাকায় কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের পরিকল্পিতভাবে সজনে ক্ষেত গড়ে তোলার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

তারা আরো বলেন, দেশে সজনে সচারাচর দু’ধরনের হয়ে থাকে। মৌসুমি এবং বারোমাসী। আগে সজনে আবাদ কম হলেও এখন তা বাড়ছে। কেননা বারোমাসীতে উৎপাদন বেশি হয়। সাধারণত অন্যান্য ফসলাদির মত সজনে গাছের জন্য কোনো চাষাবাদ কিংবা রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয় না। মূলত গ্রামাঞ্চলের লোকেরা নিজ বাড়ির পাশে বা অনুপযোগী ক্ষেতের আইল, অথবা রাস্তার দু’পাশে সজনে গাছের ডাল লাগিয়ে থাকেন।

কৃষি উপ-সহকারী মারুফুল হক বলেন, এই সজনে গাছ এক থেকে দু’বছরের মধ্যে ফুল ফল দেয়। এখন সজনে ডাটার গুণাগুণ সমন্ধে মানুষ জেনে গেছে। ফলে ডাটা খাওয়ার প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। তাই কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের সজনে চাষে উদ্বুদ্ধ করা হবে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৬:৩২ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]