নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট
সংকটের কারণে একই বাজারে তিন রেটে ডলার বিক্রি হচ্ছে। এতে ব্যাংকভেদে এলসি (ঋণপত্র) খুলতে অতিরিক্ত অর্থ দিয়েও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
খাদ্যপণ্যের পাশাপাশি উৎপাদনমুখী শিল্পের কাঁচামাল আমদানি নির্ভর হলে সবচেয়ে বেশি যোগান থাকতে হয় বৈদেশিক মুদ্রার। যার সংকট এখনো দেশের ব্যাংকিং খাতে। এমন অবস্থায় আমদানি পরিস্থিতি ঠিক রাখতে এরইমধ্যে রিজার্ভ থেকে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার বাজারে বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এদিকে চাহিদার তুলনায় ডলারের পরিমাণ কম থাকায় দেশের বাজারে বর্তমানে স্বীকৃত তিনটি রেটে ডলার বেচাকেনা হচ্ছে। রেমিট্যান্স সংগ্রহে প্রতি ডলারে ১০৭ টাকা দেয়া হচ্ছে, আমদানির জন্য এলসি খুলতে ১০৭ টাকা থেকে ১০৮ টাকা আর রফতানি নগদায়নে দেয়া হচ্ছে ডলারপ্রতি ১০১ টাকা।
এতে বাড়তি অর্থ দিয়েও ব্যাংকগুলোতে এলসি জটিলতার অভিযোগ করছেন ব্যবসায়ীরা। এমন অভিযোগ তুলেই বিএইচএল গ্রুপের পরিচালক সিফাত আরমান বলেন, ‘নতুন এলসি খোলার সময়ে আমাদের বিসি (বিল সেলিং রেট) রেটের তুলনায় আরও ৪ টাকা বেশিতে করতে হচ্ছে। ফলে আমাদের আমদানি নির্ভর ম্যানুফ্যাকচার ইউনিটগুলো প্রভাবিত হচ্ছে। কারণ এলসি সময়মতো খোলা যাচ্ছে না।’
একই বাজারে ডলারের তিন রেট অর্থনীতি বা ব্যবসা; কোনোটির জন্যই ভালো নয় বলছেন অর্থনতিবিদরা। তারা মনে করেন, আমদানি-রফতানির পাশাপাশি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য ডলারের এক রেট থাকা প্রয়োজন।
তাই দ্রুত ডলারের এক রেট করার পরামর্শ দিয়ে অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির বলেন, ‘চলতি হিসাবে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে কারণ আমাদের আমদানিকারকরা বেশি দামে ডলার কিনছেন, আর সেই আমদানি করা কাঁচামাল প্রক্রিয়াজাত করে যখন রফতানি করছেন, তখন সেটি ভিন্ন আরেকটি রেটে হচ্ছে। কাজেই এতে বড় রকমের একটি অসুবিধা তৈরি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি বেশি সময় ধরে রাখা ঠিক হবে না। সুতরাং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এক রেট করা হবে, সেটি অর্থনীতির জন্য ভালো, ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য ভালো এবং আমদানি-রফতানির জন্য ভালো।’
এদিকে স্বল্প সময়ের মধ্যেই এটি বাস্তবায়ন হবে জানিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ডলার এক রেটে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘যখন ডলার রেট দুই শতাংশ ব্যান্ড রেটের মধ্যে থাকে, তখন আমরা সেটিকে সিঙ্গেল রেট বলি। আর আমরা ধীরে ধীরে সে দিকেই অগ্রসর হচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশকে অর্থ ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে জুনের মধ্যে লেনদেনে ডলারের মূল্য এক রেটে নিয়ে আসার শর্ত রয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ)।
Posted ৬:৪৬ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin