শনিবার ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোজার কোনো ক্ষতি হয় না যেসব কাজে

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট

রোজার কোনো ক্ষতি হয় না যেসব কাজে

প্রত্যেক সাবালক ও সুস্থ মুসলিম নর-নারীর ওপর রমজানের রোজা রাখা ফরজ। ইরশাদ হয়েছে- يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ

অর্থ: ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পার।’ (সূরা: বাকারা, আয়াত: ১৮৩)

পরবর্তী আয়াতে ইরশাদ হয়েছে- أَيَّامًا مَّعْدُودَاتٍ ۚ فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ ۚ وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ ۖ فَمَن تَطَوَّعَ خَيْرًا فَهُوَ خَيْرٌ لَّهُ ۚ وَأَن تَصُومُوا خَيْرٌ لَّكُمْ ۖ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ

অর্থ: ‘গণনার কয়েকটি দিনের জন্য অতঃপর তোমাদের মধ্যে যে, অসুখ থাকবে অথবা সফরে থাকবে, তার পক্ষে অন্য সময়ে সে রোজা পূরণ করে নিতে হবে। আর এটি যাদের জন্য অত্যন্ত কষ্ট দায়ক হয়, তারা এর পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাদ্যদান করবে। যে ব্যক্তি খুশীর সাথে সৎকর্ম করে, তা তার জন্য কল্যাণ কর হয়। আর যদি রোজা রাখ, তবে তোমাদের জন্যে বিশেষ কল্যাণকর, যদি তোমরা তা বুঝতে পার।’ সূরা: বাকারা, আয়াত: ১৮৪)

রোজা রাখার পর অনেকেই বিভিন্ন বিষয়ে সন্দেহে থাকেন; নিশ্চিতভাবে না জানার কারণে অনেক বৈধ কাজ থেকেও বিরত রাখেন নিজেকে। আর তাই জেনে নিন রোজা অবস্থায় যেসব কাজ করলেও রোজার কোনো ক্ষতি হয় না-

> ভুলে খানাপিনা বা স্ত্রীসম্ভোগ করলে রোজা ভাঙে না। অনিচ্ছাবশত গলার মধ্যে ধোঁয়া, ধুলাবালি, মশা, মাছি চলে গেলে রোজার কোনো ক্ষতি হয় না।

> তেল, সুরমা, শিঙা লাগালে হলকে তার স্বাদ পেলে রোজার ক্ষতি হয় না। স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভাঙে না। যেকোনো সময় মেসওয়াক করলে রোজা ভাঙে না। সেটি কাঁচা হোক কিংবা শুষ্ক।

> কাঠি দিয়ে কান খোঁচানোর ফলে কোনো ময়লা বের হলে তারপর ময়লাযুক্ত কাঠি বারবার কানে প্রবেশ করালে রোজা ভঙ্গ হয় না। চানা বুটের চেয়ে ছোট বস্তু দাঁতের ফাঁকে আটকে গেলে এবং তা গলার ভেতর চলে গেলে কিংবা খেয়ে ফেললে রোজা ভাঙে না।

> দাঁত থেকে অল্প রক্ত বের হয়ে যদি গলার ভেতর চলে যায়, তাহলে রোজা ভাঙবে না। যদি রক্তের চেয়ে থুতুর পরিমাণ বেশি হয়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে।

> শরীর, মাথা, দাড়ি, গোঁফে তেল লাগালে রোজা ভাঙে না। ফুল বা মৃগনাভির ঘ্রাণ নিলে রোজা ভাঙে না। ইচ্ছাকৃতভাবে নাকের শ্লেষ্মা মুখের ভেতর নিয়ে নিলে রোজা ভাঙে না। মুখের থুতু গিলে ফেললে রোজা ভাঙে না।

> তিল পরিমাণ কোনো জিনিস বাইরে থেকে মুখে নিয়ে অস্তিত্বহীন করে দেওয়া ও গলায় তার কোনো স্বাদ অনুভব না হলে রোজা ভাঙে না। কপালের ঘাম কিংবা চোখের দু-এক ফোঁটা অশ্রু কণ্ঠনালিতে পৌঁছে গেলে রোজা ভাঙে না।

> রোজা অবস্থায় সাধারণ ইনজেকশন বা টিকা লাগানো বৈধ। তবে এমন ইনজেকশন বা টিকা লাগানো মাকরুহ, যেগুলো দ্বারা রোজার কষ্ট বা দুর্বলতা দূরীভূত হয়। সাপ, বিচ্ছু ইত্যাদি দংশন করলে রোজা ভাঙে না। ইনজেকশনের মাধ্যমে রক্ত বের করলে রোজা নষ্ট হবে না।

> স্বপ্নে কিংবা সহবাসে যদি গোসল ফরজ হয়ে থাকে এবং সুবেহ সাদিকের আগে গোসল না করে রোজার নিয়ত করে, তাহলে তার রোজার মধ্যে অসুবিধা হবে না।

> হোমিওপ্যাথিক ওষুধের ঘ্রাণ নেয়া মাকরুহ নয়। রোজা অবস্থায় পাইপ দ্বারা মুখে হাওয়া নিলে রোজা মাকরুহ হয় না। রোজা অবস্থায় নাকের মধ্যে ওষুধ ব্যবহার করার দ্বারা ব্রেনে না পৌঁছলে রোজা মাকরুহ হয় না। শরীরে কোনো ক্ষতস্থান থেকে পুঁজ বা রক্ত প্রবাহিত হলে বা রক্ত বের করলে রোজা নষ্ট হয় না।

> ডাক্তার যদি চিকিৎসার শুকনো কোনো যন্ত্র পেটে প্রবেশ করায়, অতঃপর তা বের করে ফেলে, তাহলে রোজা নষ্ট হবে না। পানিতে ডুব দেওয়ার পর কানের ভেতর পানি চলে গেলে অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে পানি দিলে রোজা মাকরুহ হয় না।

> জৈবিক উত্তেজনার কারণে শুধু দৃষ্টিপাতের কারণে যদি বীর্যপাত হয়, তাহলে রোজা নষ্ট হবে না।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৭:৪০ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]