
নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট
ভারতের সাধারণ নির্বাচনের প্রচারে ২০১৯ সালে কর্ণাটক রাজ্যের কোলার জেলায় এক জনসভায় ‘মোদি’ পদবি নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এই মন্তব্যের পর তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়। ওই মামলায় রাহুলকে দুই বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে এবং হারাতে হয়েছে লোকসভার সদস্য পদ। এবার কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারণা সেই কোলার থেকেই শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন রাহুল গান্ধী।
তিনি আগামী ৫ এপ্রিল সেখানে জনসভা করবেন বলে গতকাল বুধবার জানিয়েছেন।
রাহুলের এই ঘোষণা আসার আগে কর্ণাটক নির্বাচনের দিনক্ষণ জানায় নির্বাচন কমিশন, যেখানে ক্ষমতাসীন বিজেপি টানা দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার আশা করছে। ভোট গ্রহণ হবে আগামী ১০ মে। রাহুল গান্ধীর সংসদ সদস্য পদ খারিজ হতেই কেরালার ওয়েনাদ কেন্দ্রের আসন শূন্য ঘোষণা করা হয়।
এই আসনের উপনির্বাচন নিয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার বলেন, ওয়েনাদে উপনির্বাচনের দিন ঘোষণায় তাড়াহুড়ো করা হবে না। উচ্চ আদালতে আবেদন করতে রাহুলের হাতে ৩০ দিন সময় রয়েছে। সেই সময়সীমার আগে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম। সংসদ সদস্য পদ খারিজের পর রাহুল গান্ধীর ওপর অবিচারের অভিযোগকে আরও তীব্র করতে লোকসভা স্পিকার ওম বিড়লার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার কথা ভাবছে কংগ্রেস। গত মঙ্গলবার কংগ্রেসের সংসদ সদস্য মনীশ তিওয়ারি এই পদক্ষেপের প্রস্তাব করেছিলেন। তিনি একটি খসড়াও হস্তান্তর করেছেন। আগামী সোমবার এই প্রস্তাব আনা হতে পারে। তবে কংগ্রেস নেতারা বলছেন, প্রস্তাব পাস হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিছু বিরোধী দলের নেতা ইতোমধ্যে এ ধরনের পদক্ষেপে অনিচ্ছার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাই কংগ্রেস নেতৃত্ব বিরোধী শিবিরে বিভাজনের ইঙ্গিত দিতে পারে– এমন কিছু চায় না।
এদিকে লাক্ষাদ্বীপের জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) মো. মোহম্মদ ফয়জল লোকসভার সদস্য পদ ফিরে পেয়েছেন। গত ১৩ জানুয়ারি তাঁর পদ খারিজ করা হয়েছিল। তবে উচ্চ আদলতে তিনি পদ ফিরে পান। কিন্তু সংসদে বারবার আবেদন করেও সদস্যপদ ফেরত না পেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। এর পর গতকাল সুপ্রিম কোর্টে ফয়জলের আবেদনের ওপর শুনানি শুরুর কিছু আগে তাঁর সদস্যপদ ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায় লোকসভার সচিবালয়।
২০০৯ সালে সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি এম সঈদের এক আত্মীয়কে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ফয়জলের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে মামলা হয়। গত ১১ জানুয়ারি তিনিসহ অন্য আসামিদের ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। এর দুই দিন পর ফয়জলের লোকসভার সদস্যপদ খারিজ করা হয়। রাহুলের সংসদ সদস্যপদ খারিজ করার প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিরোধীরাও। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ কুমার বলেছেন, ‘আমি কখনোই আদালতের রায় নিয়ে মন্তব্য করিনি, করবও না। আমি শুধু চাইতে পারি, তদন্ত যেন ঠিকমতো হয়।’ এদিকে গতকাল এক সমাবেশে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘রাহুলকে যদি একটি সম্প্রদায় সম্পর্কে মন্তব্যের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা যেতে পারে, তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটূক্তি করে নারীদের অনুভূতিতে আঘাত করার জন্য মোদির বিরুদ্ধে কেন একই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না? রাহুল গান্ধীর কথাকে আমি সমর্থন করি না।’ এদিকে রাহুলকে দিল্লির সরকারি বাংলো ছাড়ার নোটিশ দেওয়ার প্রতিবাদে নতুন কর্মসূচি নিয়েছেন কংগ্রেস কর্মীরা। নিজেদের বাড়িতে ‘মেরা ঘর রাহুল গান্ধী কা ঘর’ অর্থাৎ, ‘আমার বাড়ি রাহুল গান্ধীর বাড়ি’ পোস্টার লাগিয়ে রাহুলকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন দলটির নেতাকর্মীরা। খবর এনডিটিভির।
Posted ৮:৩১ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin