বৃহস্পতিবার ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জামাতে ফজরের নামাজ আদায়ের গুরুত্ব ও ফজিলত

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   সোমবার, ০৮ মে ২০২৩ | প্রিন্ট

জামাতে ফজরের নামাজ আদায়ের গুরুত্ব ও ফজিলত

ইসলাম ধর্মে ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নামাজ। প্রতিদিন ফজর, জোহর, আসর, মাগরিব ও এশা; এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক ও বুদ্ধি-জ্ঞান সম্পন্ন, নারী পুরুষ নির্বিশেষে, প্রতিটি মুসলিমের জন্য ফরজ বা অবশ্যকরণীয় একটি ধর্মীয় কাজ।

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে বিশ্ব নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বার বার নামাজের তাগিদ পেয়েছেন।

পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের মধ্যে ফজরের নামাজ আদায়ে বহু সওয়াব ও পুরস্কারের কথা হাদিসে উল্লেখ হয়েছে। নিম্নে ফজরের নামাজ পড়ার সওয়াব পুরস্কারগুলোর কথা আলোচনা করা হলো-

আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নিরাপত্তা

প্রিয়নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করল সে মহান আল্লাহর রক্ষণাবেক্ষণের অন্তর্ভুক্ত হলো.. ‘। (মুসলিম, হাদিস: ১৩৭৯)

সবকিছুর চেয়ে উত্তম

আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘ফজরের দুই রাকাত নামাজ দুনিয়া ও দুনিয়ার সবকিছুর চেয়ে উত্তম’। (মুসলিম, হাদিস: ১৫৭৩)

উত্তম দিনযাপন

ফজর নামাজ আদায়ের জাগতিক বহু উপকার রয়েছে। রাসূল (সা.) এক হাদিসে বলেন, ‘তোমাদের কেউ ঘুমিয়ে পড়লে, শয়তান তার ঘাড়ের পেছনে তিনটি গিঁট দেয়। প্রতি গিঁটে সে এই কথা বলে, তোমার সামনে দীর্ঘ রাত অপেক্ষা করছে; অতএব তুমি শুয়ে থাকো। অতঃপর সে যদি জাগ্রত হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে একটি গিঁট খুলে যায়। ওজু করলে আরেকটি গিঁট খুলে যায়। অতঃপর নামাজ আদায় করলে আরেকটি গিঁট খুলে যায়। তখন তার সকাল হয় উত্ফুল্ল চিত্তে ও প্রফুল্ল মনে। না হয়, সে সকালে কলুষ কালিমা ও আলস্য নিয়ে ওঠে’। (বুখারি, হাদিস: ১১৪২)

অর্ধরাত ইবাদতের সওয়াব

মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে এশার নামাজ আদায় করল, সে যেন অর্ধেক রাত পর্যন্ত (নফল) নামাজ আদায় করল। আর যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করল, সে যেন সারা রাত জেগে নামাজ আদায় করল’। (মুসলিম, হাদিস: ১৩৭৭)

মুনাফিকির তালিকা থেকে বাদ

মহানবী (সা.) বলেন, ‘মুনাফিকদের জন্য ফজর ও এশার নামাজের চেয়ে অধিক ভারী কোনো নামাজ নেই। এ দুই নামাজের ফজিলত যদি তারা জানত, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও মসজিদে উপস্থিত হতো’। (বুখারি, হাদিস: ৬৫৭)

জাহান্নাম থেকে মুক্তি

রাসূল (সা.) হাদিসে বলেন, ‘এমন কোনো ব্যক্তি জাহান্নামে যাবে না, যে সূর্যোদয়ের ও সূর্যাস্তের আগের নামাজ আদায় করে’। অর্থাৎ ফজর ও আসরের নামাজ। (মুসলিম, হাদিস: ১৩২২)

পূর্ণ নুরের সুসংবাদ

আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল (সা.) বলেন, রাতের অন্ধকারে মসজিদগুলোতে যাতায়াতকারীদের কেয়ামতের দিনের পরিপূর্ণ নুরের সুসংবাদ দাও’। (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৭৮১)

ফেরেশতাদের সাক্ষাৎ

এক হাদিসে রাসূল (সা.) বলেন, ‘ফেরেশতারা পালাবদল করে করে তোমাদের মাঝে আসেন; একদল দিনে আসে, আরেক দল আসে রাতে। আসর ও ফজরের নামাজে উভয় দল একত্রিত হন। অতঃপর তোমাদের মাঝে রাত যাপনকারী দলটি আসমানে চলে যান। তখন আল্লাহ তাআলা তাদের জিজ্ঞেস করেন, আমার বান্দাদের কোন অবস্থায় রেখে এলে? অথচ তিনি তাদের ব্যাপারে সর্বাধিক অবগত। জবাবে তারা বলেন, আমরা তাদের নামাজে রেখে এসেছি। আর আমরা যখন তাদের কাছে গিয়েছিলাম, তখনো তারা নামাজরত ছিলেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৫৫)

আল্লাহর সাক্ষাৎ

জারির বিন আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, ‘একবার আমরা নবী করিম (সা.)-এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। তিনি রাতে (পূর্ণিমার) চাঁদের দিকে তাকিয়ে বলেন, ওই চাঁদকে তোমরা যেমন দেখছ, ঠিক তেমনি অচিরেই তোমাদের প্রতিপালককে তোমরা দেখতে পাবে। তাকে দেখতে তোমরা কোনো ভিড়ের সম্মুখীন হবে না। কাজেই সূর্যোদয়ের আগের ও সূর্যাস্তের আগের নামাজ আদায় করতে পারলে- তোমরা তা-ই করবে’। (সূরা: কাহফ, আয়াত: ৩৯)

আল্লাহ তাআলা আমাদের ফজরের নামাজসহ প্রতি ওয়াক্তের নামাজের প্রতি যত্নবান হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৬:২৯ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৮ মে ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(141 বার পঠিত)
advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]