বুধবার ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একদিনে চাকরি হারালেন ৩৬ হাজার স্কুল শিক্ষক

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শুক্রবার, ১২ মে ২০২৩ | প্রিন্ট

একদিনে চাকরি হারালেন ৩৬ হাজার স্কুল শিক্ষক

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে একদিনে চাকরি হারিয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩৬ হাজার শিক্ষক। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির এক মামলায় শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের আদেশে তাঁরা চাকরি হারিয়েছেন।

এর আগে, ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৩৬ হাজার অপ্রশিক্ষিত শিক্ষকের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১৬ সালে। নয় বছর আগের সেই টেটের পরীক্ষা এবং নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছিল বলে আদালতে মামলা করেন বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারিসহ চাকরি বঞ্চিত প্রার্থীরা।

চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ ছিল, ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার গাইডলাইনে বলা হয়েছিল, প্রশিক্ষিতরা (বিএড, ডিএলএড পাশ) অগ্রাধিকার পাবেন। সেই হিসেবে ৪২ হাজার ৫০০ জন নিয়োগ পান। কিন্তু দেখা যায়, বহু প্রশিক্ষিত প্রার্থী চাকরি পাননি। মাত্র ৬ হাজার ৫০০ জন প্রশিক্ষিত এবং ৩৬ হাজার জন অপ্রশিক্ষিত চাকরি পান। অভিযোগ ওঠে, অর্থের বিনিময়ে চাকরি দেন ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাবশালী মন্ত্রী , শিক্ষা দপ্তরের আমলা এবং প্রভাবশালী তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা।

অভিযোগের আঙুল ওঠে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্যসহ একাধিক সরকার ঘনিষ্ঠের বিরুদ্ধে। হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই মামলার তদন্ত শুরু। এখনও পর্যন্ত এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন প্রায় ১১ জন। উদ্ধার হয়েছে কোটি কোটি টাকা। সেই মামলায় আজ আদালত অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া ৩৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করেছেন।

আদালত এ দিন রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে ৩৬ হাজার শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীরা যাতে সমস্যায় না পড়ে তার জন্য চাকরি হারানো ৩৬ হাজার শিক্ষক আগামী চার মাস স্কুলে যেতে পারবেন, পড়াতেও পারবেন। কিন্তু মাইনে পাবেন পার্শ্বশিক্ষকদের পে স্কেলে। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও এই ৩৬ হাজার শিক্ষক অংশ নিতে পারবেন না। কারণ নিয়োগের মৌলিক মানদণ্ডই তাঁরা মানেননি। ফলে তাঁদের চাকরি হারাতে হবে।

এদিন নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার ক্ষেত্রে যদি সরকারের অর্থ সংকট থাকে, তাহলে প্রয়োজনীয় অর্থ প্রয়োজনে মূল অভিযুক্ত মানিক ভট্টাচার্যের থেকে আদায় করার কথাও বলেছেন বিচারপতি।

শুক্রবার হাইকোর্টের এমন রায় গোটা বাংলা জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। একসঙ্গে ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের ভবিষ্যৎ নিয়ে রাতারাতি তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।

তবে সূত্রের খবর, কলকাতা হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে চলেছে রাজ্য সরকার। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বর্তমান সভাপতি শুক্রবার হাইকোর্টের এমন রায়ের পর সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, চাকরি হারানোদের দায় অস্বীকার করতে পারে না প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। আগামী দিনে প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান পর্ষদ সভাপতি।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৩:০০ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১২ মে ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(217 বার পঠিত)
(194 বার পঠিত)
advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]