নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ১৬ মে ২০২৩ | প্রিন্ট
কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংস্বপূর্ণতা অর্জন করার পরও প্রতিবছর ৮০০ কোটি টাকার খাদ্যপণ্য আমদানি করতে হয়। এজন্য খাদ্য আমদানি ব্যয় কমাতে আগামী বাজেটে আমদানি প্রতিস্থাপন শিল্পায়নে (আইএসআই) জোর দিতে হবে।
সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক হোটেল সোনারগাঁওয়ে আরটিভির ‘বাজেটে প্রত্যাশা, ২০২৩-২৪’ অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বিদেশ থেকে আমদানির জন্য এখনো পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আমাদের ব্যয় করতে হচ্ছে। আমদানি ব্যয় কমাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের কৃষির ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। এর ফলে ধানের উৎপাদন বেড়েছে। বিজ্ঞানীরা ধানের অনেক জাত উদ্ভাবন করেছেন, যেগুলো আবাদ করে আমরা উৎপাদন বাড়িয়েছি। প্রতি বছর ২৪-২৫ লাখ নতুন মুখ সংযোজন হচ্ছে, তাদের সবাইকেই তো খাবার দিতে হয়। পৃথিবীর বহু দেশে ২৫ লাখ মানুষ নেই। অথচ আমাদের প্রতি বছর ২৫ লাখ জনসংখ্যা বাড়ছে। অন্যদিকে জমিও বাড়ছে না, নতুন নতুন শিল্পকারখানা ও বাড়িঘর তৈরি হওয়ায় জমি কমে যাচ্ছে। এর প্রেক্ষিতে আমরা দানাজাতীয় খাদ্য ভুট্টা এবং ধানের উৎপাদন বাড়িয়েছি। তবে বাংলাদেশের আবহাওয়ায় গমের উৎপাদন বাড়ানোর সম্ভাবনা খুব কম। কিন্তু এর প্রয়োজন অনেক বেশি ৫০ থেকে ৬০ লাখ টন। এটি আমাদের আমদানি করতেই হবে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে দুধ উৎপাদনের যে প্রযুক্তি আমরা ব্যবহার করি, অর্থাৎ গাভির যেই জাত, ২০ থেকে ৩০ লিটার পর্যন্ত একটা গরু দুধ দেয়। আগে যা ছিল ২ থেকে ৩ লিটার। যেই দেশে এতো পরিমাণ দুধ উৎপাদন হয়, সেখানে বিদেশ থেকে কেন গুঁড়া দুধ আমদানি করতে হবে? এ বিষয়ে আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার। দুধ দিয়ে বাংলাদেশকে ভাসিয়ে দেওয়া যায়। তিন বছরের কর্মসূচি নিই, বাংলাদেশে এক ছটাক দুধ বিদেশ থেকে আনতে হবে না। এছাড়া আমরা একটি পরিকল্পনা নিয়েছি যে, আমাদের ভোজ্যতেল আমদানির যেই খরচ দুই থেকে আড়াই বিলিয়ন ডলার, সেটি তিন বছরের মধ্যে আমরা অর্ধেকে নিয়ে আসব। এরইমধ্যে এক বছর অতিবাহিত হয়েছে এবং এইসময়ে আমরা আমাদের লক্ষ্যে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছি।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আজকে আমাদের সবাইকে মিলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আমরা কেন এতোকিছু বাইরে থেকে আমদানি করব। প্লাস্টিকের যন্ত্রণায় ঢাকার শহরে চলা যায় না। এই প্লাস্টিকের ফোল্ডার কেন চীন থেকে আমদানি করতে হবে? পেন্সিল-আলপিন চীন থেকে আসে। এগুলো কেন আমাদের বাইরে থেকে আনতে হবে? আমরা কেন তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে পারি না? আমরা কেন এগুলো উৎপাদন করি না। আমাদের আমদানি প্রতিস্থাপন শিল্পায়ন (আইএসআই) এ জোর দিতে হবে। আগামী ৫ বছরের মধ্যে আইএসআইয়ের অর্জন আমরা করব।
অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন- পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া, এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ড. মো. মাসুদুর রহমান, সিপিডির ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুল আলম, বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান, বিটিএমএ’র সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ব্যারিস্টার সামির সাত্তার, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মো. হাতেম, এমসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি কামরান টি রহমান, বাংলাদেশ-ভারত বিজনেস কাউন্সিলের সভাপতি মানতাসা আহমেদ, বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ।
Posted ৪:০৮ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৬ মে ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin