নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ১৮ মে ২০২৩ | প্রিন্ট
পাঁচ প্রজাতির উপকারী পোকার দ্রুত উৎপাদন ও বংশবিস্তার প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের গবেষক ও কীটতত্ত্ববিদরা। ক্ষেতে এসব উপকারী পোকা ফসলের ক্ষতিকর পোকা দমনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এতে একদিকে কৃষকের খরচ কমবে, বাড়বে ফসলের পুষ্টিগুণও।
বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রাকৃতিকভাবে উপকারী পোকার মাধ্যমে শত্রু পোকা দমন সম্ভব হলেও জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে উপকারী পোকাগুলো বিপন্নের পথে। ফসলে ক্ষতিকর পোকার আক্রমণে কাঙ্ক্ষিত ফলন না পাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়ছেন কৃষকরা। এই ক্ষতি থেকে বাঁচতে অনেকটা বাধ্য হয়েই ফসলে কীটনাশক ব্যবহার করেন তারা। শাকসবজি, ফল থেকে সেই কীটনাশক প্রবেশ করে মানবদেহে। তবে সম্প্রতি পাঁচ প্রজাতির উপকারী পোকার দ্রুত উৎপাদন ও বংশবিস্তার প্রক্রিয়া উদ্ভাবনে এ ক্ষতি অনেকটাই লাঘব হবে বলে জানান তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের গবেষকরা যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে উপকারী পোকার উৎপাদন বাড়ানোর কাজ শুরু করেন। চলতি বছরের এপ্রিলে পাঁচ প্রজাতির উপকারী পোকার বংশবিস্তার সফল হয়েছে। মাঠে একবার এই পোকা ছেড়ে দিলে তারা নিজেরাই বংশবিস্তার করতে থাকবে। একপর্যায়ে ক্ষেতের সব ক্ষতিকর পোকা দূর হবে। ফলে ফসলের ক্ষতি অনেকাংশে হ্রাস পাবে বলে আশা গবেষক দলের।
এ বিষয়ে প্রকল্পের খুলনা অঞ্চলের পরিচালক ও কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. শিমুল দাস জানান, এ পর্যন্ত পাঁচ প্রজাতির পোকার সফল বংশবিস্তার ঘটানো সম্ভব হয়েছে। এগুলো হলো: হ্যাব্রোব্রেকন হেবিটর, ট্রাইকোগ্রামা, জাপোনিকাম, ট্রাইকোগ্রামা প্রিটিসাম, ট্রাইকোগ্রামমা ইভানসেন্স ও ট্রাইকোগ্রামমা চিলোনিস। এর মধ্যে ট্রাইকোগ্রামা ফসলের ক্ষতিকারক সব ধরনের পোকার ডিম নষ্ট এবং হেব্রোব্রাকোন পোকার লার্ভা নষ্ট করে প্রাকৃতিকভাবে এর বংশবিস্তার দমন করবে।
তিনি বলেন, প্রকৃতি থেকে কিছু উপকারী পোকা এনে গবেষণাগারে এগুলোর দ্রুত বংশবৃদ্ধির প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করা হয়েছে। গবেষণাগারে উৎপাদন করা পোকা বিনা মূল্যে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। একই সঙ্গে পোকা উৎপাদন প্রক্রিয়া কৃষকদের শিখিয়ে দেয়া হবে, এতে কৃষকরা নিজেই ঘরে বসে এসব পোকা উৎপাদন করতে পারবেন।
খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শষ্য) মো. মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, উপকারী পোকাগুলো পরিবেশবান্ধব। এদের মাধ্যমে ফসল বা প্রকৃতির কোনো ক্ষতি হবে না। এতে কীটনাশকের ব্যবহার শূন্যে নামিয়ে আনা সম্ভব।
Posted ৯:০৩ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৮ মে ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin